লোডশেডিংয়ে ব্যাহত হচ্ছে এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের প্রস্তুতি

এইচএসসি পরীক্ষার্থী
এইচএসসি পরীক্ষার্থী  © সংগৃহীত

গত কয়েক দিন ধরে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় লোডশেডিংয়ের তীব্রতা বেড়েছে। দিনে তিন থেকে চারবার লোডশেডিং হচ্ছে। লাগাতার লোডশেডিংয়ে দেশের অনেক এলাকায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জীবনযাত্রা। প্রচণ্ড গরমে বিদ্যুৎ না থাকায় সবচেয়ে বিপাকে পড়েছেন এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার্থীরা। সময়-অসময়ে বিদ্যুৎ চলে যাওয়ায় তাদের শেষ সময়ের প্রস্তুতি দারুণভাবে ব্যাহত হচ্ছে।

শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের বড় মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে লোডশেডিং। বারে বারে লোডশেডিংয়ের প্রভাবে তাদের পড়াশোনায় ধারাবাহিকতা থাকছে না। বিশেষ করে গ্রামীণ অঞ্চলগুলো কিছুক্ষণ পর পর বিদ্যুৎ চলে যাওয়ায় তারা পড়াশোনায় মনোযোগ দিতে পারছেন না। একদিকে তীব্র গরম অন্যদিকে অনিয়ন্ত্রিত লোডশেডিংয়ে তারা ভোগান্তিতে রয়েছেন। ফলে পরীক্ষায় আশানুরূপ ফলাফল পাওয়ার আশঙ্কা তৈরী হচ্ছে এসব পরীক্ষার্থী-অভিভাবকরদন মাঝে।

রাজধানীর কামরাঙ্গীরচরের নয়াগাঁও বাদশামিয়া হাইস্কুলের শিক্ষার্থী আশিকুর রহমান বলেন, পড়ার টেবিলে বসার পর যদি লোডশেডিং হয় তাহলে পড়ায় মন বসানো যায় না। এমনিতেই আবহাওয়ার কারণে প্রচণ্ড গরম,  তারমধ্যে যোগ হয়েছে অতিমাত্রায় লোডশেডিং। এ অনিয়ন্ত্রিত লোডশেডিংয়ের কারণে পরীক্ষায় শেষ সময়ের প্রস্তুতি ভালো হচ্ছে না। পরীক্ষায় ভালো ফলাফল নিয়ে আমার আশঙ্কা হচ্ছে।

ঢাকায় নির্দিষ্ট সময়ের বাইরেও কোনো কোনো এলাকায় একাধিকবার লোডশেডিং দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। ঢাকার বাইরের বিভিন্ন বিভাগ ও জেলা শহরগুলোর পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ। এলাকাভেদে ১ ঘণ্টা থেকে সর্বোচ্চ ১০ ঘণ্টা পর্যন্ত লোডশেডিং হচ্ছে।

আরও পড়ুন: নভেম্বরের আগে লোডশেডিং কমছে না

লক্ষ্মীপুর আলিয়া মাদ্রাসার শিক্ষার্থী আসিফুর রহমান। তিনি কালিরচর নামে একটি প্রত্যান্ত অঞ্চলে বাস করেন। তিনি বলেন, এখানে রাতে দিনে সমান তালে লোডশেডিং হচ্ছে। দিনের তুলনায় রাতের সময়টা প্রস্তুতির জন্য ভালো। দিনের সময়টা মোটামুটি চললেও রাতে বিদ্যুৎ ছাড়া কোনোভাবেই যাচ্ছে না। এ পরিস্থিতিতে এখানে থেকে প্রস্তুতি নেয়া সম্ভব নয়। আমি পরীক্ষার শেষ কয়েকদিন শহরে গিয়ে থাকার পরিকল্পনা করেছি।

কুষ্টিয়ার বারখাদা উচ্চ বিদ্যালয়ের শামিম আহসান এক এইচএসসি পরীক্ষার্থী বলেন, লোডশেডিংয়ের কারণে পরীক্ষার সর্বশেষ প্রস্তুতিতে বাধা হচ্ছে। যখনই পড়তে বসি; তখনই বিদ্যুৎ চলে যায়। বিদ্যুৎ চলে গেলে বাবা-মা হাতপাখায় বাতাস করেন আর আমি মোববাতির আলো জ্বেলে পড়ি। বিদ্যুৎ চলে গেলে মোববাতির আলোতে আসলে বেশিক্ষণ পড়া যায় না, একটা সময় বিরক্ত চলে আসে। আসলে এভাবে হয় না।

এ পরিস্থিতির কারণ হিসেবে বিদ্যুৎ বিভাগ ও পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশের (পিজিসিবি) কর্মকর্তারা বলছেন, গ্রিড বিপর্যয়ের পর বিদ্যুতের চাহিদার পুরোটা এখনও সরবরাহ করা যায়নি। তাই লোডশেডিং বেড়েছে। তবে শিগগিরই পরিস্থিতির উন্নতি হবে।

আরও পড়ুন: কলা খেয়ে গিনেস বুকে নাম লেখালেন দশম শ্রেণির ছাত্র

ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের (ডিপিডিসি) ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিকাশ দেওয়ান গণমাধ্যমকে বলেন, দিনে ও রাতে ৪০০ মেগাওয়াটের বেশি ঘাটতি হচ্ছে। যে কারণে কিছু এলাকায় লোডশেডিং বেশি হচ্ছে। লোডশেডিংয়ের শিডিউল মানা যাচ্ছে না।

এদিকে, নভেম্বরের আগে লোডশেডিং পরিস্থিতির উন্নতির আশা নেই বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু। গতকাল সোমবার (৯ অক্টোবর) সচিবালয়ে সাংবাদিকদের বলেছেন, লোডের কারণে আমরা দিনের বেলা কিছু পাওয়ার প্ল্যান্ট বন্ধ রাখছি। আবার দিনে যেগুলো চালাচ্ছি সেগুলো রাতে বন্ধ রাখছি। এজন্য লোডশেডিংয়ের জায়গাটা একটু বড় হয়ে গেছে।

চলতি বছরের উচ্চমাধ্যমিক সার্টিফিকেট (এইচএসসি) পরীক্ষা আগামী ৬ নভেম্বর শুরু হবে। পরীক্ষার সময়সূচি অনুযায়ী, ৬ নভেম্বর শুরু হয়ে তত্ত্বীয় পরীক্ষা শেষ হবে আগামী ১৩ ডিসেম্বর। এরপর হবে ব্যবহারিক পরীক্ষা। সময়সূচিতে ১১ দফা বিশেষ নির্দেশনা দিয়েছে শিক্ষা বোর্ডগুলো। এসবের মধ্যে রয়েছে এসএসসির মতো এইচএসসি পরীক্ষাও শুরু হবে বেলা ১১টায়।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence