চুনারুঘাটের সাতছড়ি বনে কোটি টাকার সেগুনগাছ পাচারের অভিযোগ
- হবিগঞ্জ প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ২০ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৫:০২ PM
হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলার সাতছড়ি সংরক্ষিত বন থেকে কোটি টাকা মূল্যের সেগুনগাছ কেটে পাচারের অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় সূত্র ও সরেজমিনে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, বন বিভাগের একাংশ ও সহ-ব্যবস্থাপনা কমিটির সংশ্লিষ্টতার অভিযোগও সামনে এসেছে।
সাতছড়ি বনের বিভিন্ন অংশ ঘুরে দেখা গেছে, বহু পুরোনো ও বড় আকারের সেগুনগাছ কেটে নেওয়া হয়েছে। যেসব স্থানে গাছ কাটা হয়েছে, সেখানে পড়ে আছে ডালপালা ও বড় বড় গাছের মোথা। প্রতিটি গাছের মোথা আকারে এত বড় যে দূর থেকে দেখলে বটগাছের মতো মনে হয়। অভিযোগ রয়েছে, বন থেকে অন্তত ২৯টি বড় সেগুন গাছ কেটে নেওয়া হয়েছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, গাছ কাটার পর শ্রমিক দিয়ে গাছের মোথা ধ্বংস করা হয় এবং পরে মাটি ও বালু দিয়ে ঢেকে রাখা হয়, যাতে প্রমাণ নষ্ট করা যায়। সাতছড়ি বনের ডুমুরতলা এলাকায় গিয়ে এখনো কাটা গাছের মোথা ও ডালপালা পড়ে থাকতে দেখা গেছে।
সাতছড়ি বনের এমন দুরবস্থার জন্য কারা দায়ী—এ নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভ ও প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে মৌলভীবাজার বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) আবুল কালাম বলেন, ‘এই বিষয়টি আমি এইমাত্র আপনাদের কাছ থেকেই শুনলাম। আমাদের সহকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) নতুন যোগদান করেছেন। তাঁকে পাঠিয়ে বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
চুনারুঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জিয়াউর রহমান বলেন, ‘আমি বর্তমানে একটি মিটিংয়ে আছি। সাতছড়ি বনের ম্যানেজারের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
এ বিষয়ে পরিবেশকর্মী তোফাজ্জল সোহেল বলেন, ‘মানুষের বেঁচে থাকার জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অক্সিজেন আসে বন থেকে। এভাবে যদি কোটি টাকার গাছ কেটে পাচার করা হয়, তাহলে জীববৈচিত্র্যের ওপর মারাত্মক প্রভাব পড়বে এবং পরিবেশ ধ্বংসের দিকে যাবে। বনকর্মী ও সহব্যবস্থাপনা কমিটির কিছু সদস্যের সংশ্লিষ্টতার তথ্য আমরা পেয়েছি। সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে দায়ীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা জরুরি।’