ইঞ্জিনিয়ার থেকে কৃষিতে সফল উদ্যোক্তা, ভার্মি কম্পোস্টে বদলে গেল জীবনের গল্প
- ভোলা প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ১৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০:২৩ PM
ভোলা সদর উপজেলার ধনিয়া ইউনিয়নের ছোট আলগি গ্রামের বাসিন্দা ওসমান গনী একসময় একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে ভালো বেতনের চাকরি করতেন। বিএসসি পাস করা এই তরুণ ইঞ্জিনিয়ার আধুনিক চাকরিজীবন ছেড়ে মাটির টানে ফিরে আসেন গ্রামে। চার বছর আগে চাকরি ছেড়ে শুরু করেন কৃষিভিত্তিক এক ভিন্নধর্মী উদ্যোগ, যা আজ তাকে করেছে স্বাবলম্বী সফল উদ্যোক্তা।
শুরুটা ছিল মাত্র দুটি গরু নিয়ে। ধীরে ধীরে খামারের পরিসর বাড়িয়ে বর্তমানে তার খামারে রয়েছে ১২টি গরু। দুধ, মাংস ও ঘি উৎপাদনের পাশাপাশি খামারের গবাদিপশুর গোবর কাজে লাগিয়ে তিনি শুরু করেন পরিবেশবান্ধব কেঁচো সার বা ভার্মি কম্পোস্ট উৎপাদন।
প্রথমে ২০টি রিং দিয়ে ভার্মি কম্পোস্ট উৎপাদন শুরু করলেও বর্তমানে সেটি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬০টিতে। এখন প্রতি মাসে তার খামারে উৎপাদিত হচ্ছে প্রায় ১০ থেকে ১২ টন ভার্মি কম্পোস্ট। ব্যাপক চাহিদার কারণে খুচরা বাজারে প্রতি কেজি সার ২০ টাকা এবং পাইকারিতে ১৫ টাকা দরে বিক্রি করছেন তিনি। এতে মাসিক আয় হচ্ছে আনুমানিক ১ থেকে দেড় লাখ টাকা।
চাহিদা আরও বাড়ায় উৎপাদন বৃদ্ধি করতে নতুন করে রিং সংযোজনের পরিকল্পনা করছেন ওসমান গনী। শুধু নিজের স্বাবলম্বিতাই নয়, তার খামারে কর্মসংস্থান হয়েছে বেশ কয়েকজন স্থানীয় যুবকের। পাশাপাশি তিনি বেকার তরুণদের এই খাতে যুক্ত হওয়ার জন্য নিয়মিত উৎসাহ দিচ্ছেন। তার খামার দেখতে প্রতিদিনই ভিড় করছেন আশপাশের এলাকার আগ্রহী মানুষজন।
চাকরির নিশ্চয়তা ছেড়ে কৃষিকে বেছে নেওয়া ইঞ্জিনিয়ার ওসমান গনীর এই সাহসী পথচলা আজ অনুপ্রেরণা হয়ে উঠেছে অসংখ্য বেকার তরুণের জন্য। তার সাফল্য প্রমাণ করে—সঠিক পরিকল্পনা ও দৃঢ় ইচ্ছাশক্তি থাকলে কৃষিও হতে পারে সমৃদ্ধির নির্ভরযোগ্য পথ।
ওসমান গনীর এই উদ্যোগকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছে প্রাণিসম্পদ বিভাগও। জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম খান বলেন, এ ধরনের উদ্যোগ গ্রামীণ অর্থনীতিকে শক্তিশালী করার পাশাপাশি জাতীয় অর্থনীতিতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।