পদ্মফুলে সেজেছে বলাকইড় বিল, সৌন্দর্য দেখতে পর্যটকের ভিড়

বলাকইড় বিলের পদ্মফুল দেখতে এসেছেন পর্যটকরা
বলাকইড় বিলের পদ্মফুল দেখতে এসেছেন পর্যটকরা  © টিডিসি

জলজ ফুলের রানি-খ্যাত পদ্মফুল এবার সৌন্দর্য বাড়িয়েছে গোপালগঞ্জের সদর উপজেলার বলাকইড় বিলের। বর্ষা মৌসুম এলেই গোলাপি ও সাদা পদ্মে রঙিন হয়ে ওঠে বিলটি, যা দূর থেকে দেখলে মনে হয় যেন কেউ ফুলের বিছানা পেতে রেখেছে। এই অপূর্ব প্রাকৃতিক দৃশ্য দেখতে প্রতিদিনই ভিড় করছেন শত শত পর্যটক।

গোপালগঞ্জ সদর থেকে মাত্র ১২ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত বলাকইড় বিলটি এখন স্থানীয়দের কাছে ‘পদ্মবিল’ নামেই পরিচিত। ১৯৮৮ সালের পর থেকে বর্ষাকালে এ বিলে প্রাকৃতিকভাবে পদ্ম ফুল জন্মাতে শুরু করে। প্রতিবছর বর্ষায় এই বিলে জন্ম নেয় হাজারো গোলাপি ও সাদা পদ্ম, যা মনোমুগ্ধকর এক পরিবেশ সৃষ্টি করে।

পদ্মবিল ঘুরতে আসা ঢাকার প্রাইম ইউনিভার্সিটির ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক জাহিদুল আজাদ জানান, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি প্রোগ্রামে অংশ নিতে এসে পদ্মবিলের কথা শুনে তিনি তার শিক্ষার্থীদের নিয়ে এখানে ঘুরতে আসেন। বিলের সৌন্দর্যে তিনি ও তার শিক্ষার্থীরা অভিভূত ও আনন্দিত।

একই অভিজ্ঞতা জানান টিপু হাওলাদার নামের আরেক দর্শনার্থী। তবে তিনি কিছু নেতিবাচক দিকের কথাও তুলে ধরেন। যেমন অনেক দর্শনার্থী পদ্মফুল ছিঁড়ে নিয়ে যান এবং বিলে খাবারের উচ্ছিষ্ট ফেলায় পরিবেশ দূষিত হচ্ছে। তিনি এ বিষয়ে স্থানীয় প্রশাসনের নজর দেওয়ার আহ্বান জানান।

স্থানীয়দের জীবিকায়ও ইতিবাচক প্রভাব ফেলছে এই বিল। বর্ষাকালে কৃষিকাজ কম থাকায় অনেকেই নৌকা চালিয়ে পর্যটকদের ঘুরিয়ে আয় করছেন। এতে যেমন আয় হচ্ছে, তেমনি পর্যটকদের জন্য ঘোরার সুবিধাও তৈরি হচ্ছে।

এ বিষয়ে গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসক মুহম্মদ কামরুজ্জামান বলেন, বর্ষা মৌসুমে প্রাকৃতিকভাবে জন্ম নেয়া পদ্ম ফুল এই বিলে সৌন্দর্য এনে দিয়েছে। পর্যটকদের সুবিধার্থে পদ্মবিল এলাকায় আরও সুযোগ-সুবিধা বাড়ানোর পরিকল্পনা রয়েছে। বিলের মাঝখানে একটি ওয়াচ টাওয়ার নির্মাণের কথাও ভাবা হচ্ছে। একই সঙ্গে তিনি দর্শনার্থীদের প্রতি পদ্মবিলের পরিবেশ রক্ষা করার আহ্বান জানান।

প্রাকৃতিকভাবে সৃষ্ট এই পদ্মবিল শুধু একটি নয়নাভিরাম পর্যটন কেন্দ্র নয়, বরং স্থানীয় মানুষের জীবিকায় সহায়ক ভূমিকা রাখছে এবং গোপালগঞ্জ জেলার পরিচিতিকে আরও প্রসারিত করছে।


সর্বশেষ সংবাদ