হাইকোর্টের নির্দেশ

সিলেটসহ দেশের ১৭টি পাথর কোয়ারি ইকো-ট্যুরিজমে রূপান্তরের মহাপরিকল্পনা 

সাদা পাথর
সাদা পাথর  © টিডিসি ফটো

সিলেটের সাতটিসহ দেশের ১৭টি পাথর কোয়ারিকে পরিবেশবান্ধব ও টেকসই ইকো-ট্যুরিজমে রূপান্তরের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে এসব অঞ্চলে ধ্বংসাত্মক পাথর উত্তোলন বন্ধে অবিলম্বে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

রোববার (২৪ আগস্ট) বিচারপতি কাজী জিনাত হক ও বিচারপতি আইনুন নাহার সিদ্দীকার সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) দায়েরকৃত জনস্বার্থ মামলার প্রাথমিক শুনানি শেষে এ আদেশ দেন।

আদালত এক আদেশে সিলেট জেলার জাফলং, শাহ আরেফিন টিলা, ভোলাগঞ্জ, উৎমাছড়া, শ্রীপুর, বিছনাকান্দি ও লোভাছড়া এবং বান্দরবান জেলার ১০টি ঝিরি-ছড়ার পাথর কোয়ারি থেকে ধ্বংসাত্মক, অবৈধ ও জনস্বার্থবিরোধীভাবে পাথর উত্তোলন কার্যক্রম বন্ধে রুল জারি করেছেন।

একইসঙ্গে এসব কোয়ারিকে পরিবেশগতভাবে সংকটাপন্ন এলাকা ঘোষণা, টেকসই ইকো-ট্যুরিজম হিসেবে গড়ে তোলা এবং অবৈধভাবে পাথর উত্তোলনের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ ও ক্ষতিপূরণ আদায়ের বিষয়েও কারণ দর্শাতে বলা হয়েছে।

আদালত খনিজ সম্পদ উন্নয়ন ব্যুরোর মহাপরিচালক, সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার ও সিলেট ও বান্দরবনের জেলা প্রশাসকদের আগামী তিন মাসের মধ্যে মহাপরিকল্পনা ও কর্মপরিকল্পনা তৈরি করে আদালতে দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন।

আরও পড়ুন: শোকজ নয়, ফজলুকে বহিষ্কার করে গ্রেপ্তারের দাবি

এছাড়া ২০২৪ সালের আগস্ট থেকে ২০২৫ সালের আগস্ট পর্যন্ত সিলেট অঞ্চলের কোথায় কোথায় পাথর উত্তোলন হয়েছে, তার পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন এবং দায়ীদের তালিকাও আদালতে জমা দিতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসককে সরাসরি আদালতে হাজির হয়ে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে।

উল্লেখ্য, ২০১৩ সালে সরকার দেশের ৫১টি এলাকাকে পাথরসমৃদ্ধ অঞ্চল হিসেবে ঘোষণা করে। এরপর ২০২০ সালে পাথর উত্তোলন বন্ধের সিদ্ধান্ত হলেও ২০২৫ সালে সেই সিদ্ধান্ত বাতিল হয়, যার ফলে সিলেট ও বান্দরবানের বিভিন্ন কোয়ারিতে ব্যাপকভাবে পাথর উত্তোলন শুরু হয়। জনস্বার্থে এ অবস্থার বিরুদ্ধে মামলা করে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা)।

মামলায় বেলার পক্ষে আইনজীবী হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অ্যাডভোকেট মিনহাজুল হক চৌধুরী ও অ্যাডভোকেট এস. হাসানুল বান্না। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মুহা. এরশাদুল বারী খন্দকার।

হাইকোর্টের এই নির্দেশনার ফলে পাথর উত্তোলন নির্ভর এলাকায় পরিবেশ রক্ষা এবং টেকসই পর্যটনের নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।


সর্বশেষ সংবাদ