বঙ্গোপসাগরে অবৈধ ট্রলিং বোটের দৌরাত্ম্য বন্ধের দাবি
- কলাপাড়া প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ২৭ জুলাই ২০২৫, ০১:১৯ PM , আপডেট: ২৮ জুলাই ২০২৫, ০২:০৮ PM
বঙ্গোপসাগরে অনুমোদনহীন ট্রলিং বোটের দৌরাত্ম্য বন্ধ, উপকূলীয় জেলেদের জীবিকা রক্ষা এবং সামুদ্রিক জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের দাবিতে কুয়াকাটায় বিক্ষোভ ও মানববন্ধন কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়েছে। রোববার (২৭ জুলাই) বেলা ১১টায় কুয়াকাটা চৌরাস্তায় শতাধিক জেলে, মৎস্য ব্যবসায়ী ও ট্রলার মালিক ব্যানার ও প্ল্যাকার্ড হাতে এ কর্মসূচিতে অংশ নেন। কর্মসূচিতে বক্তারা সমুদ্রের পরিবেশ ধ্বংসকারী অবৈধ ট্রলিং বোটের বিরুদ্ধে দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানান।
মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারীরা অভিযোগ করেন, অনুমোদনহীন ট্রলিং বোটগুলো গভীর সমুদ্রের নির্ধারিত সীমা না মেনে উপকূলবর্তী অঞ্চলে নিষিদ্ধ জাল ব্যবহার করে নির্বিচারে মাছ ধরছে। এর ফলে মাছের পোনা ধ্বংস হচ্ছে, প্রজননব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে এবং সামগ্রিক মাছ উৎপাদন ব্যাপকভাবে কমে গেছে।
জেলেরা জানান, হাজার হাজার বৈধ ট্রলার নিয়ম মেনে মাছ ধরলেও কিছুসংখ্যক অবৈধ ট্রলিং বোট নিয়ম লঙ্ঘন করে নির্বিচারে মাছ শিকার করছে। বিশেষ করে মৎস্য প্রজনন মৌসুমে নিষেধাজ্ঞাকালীন সময়েও তারা অবাধে সমুদ্রে প্রবেশ করে, যা ক্ষুদ্র জেলেদের জীবিকার জন্য মারাত্মক হুমকি হয়ে উঠেছে। তারা সরকারের কাছে উপকূলের লাখো মানুষের জীবিকা রক্ষা এবং সামুদ্রিক পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রাখতে অবৈধ ট্রলিং বোট বন্ধে জরুরি ভিত্তিতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানান।
আশার আলো মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি’র সভাপতি নিজাম শেখ বলেন, ‘নিষিদ্ধ ট্রলিং বোটের চিকন ফাঁসের জালে সব ধরনের ছোট মাছ আটকে যায়। ফলে সাগরে মাছের ঘাটতি দেখা দিয়েছে। এই মৌসুমে আমাদের জালে তেমন মাছ পড়ছে না, আমরা সবাই ক্ষতির মুখে পড়েছি।’
মৎস্য অধিদপ্তরের নীতিমালা অনুযায়ী, ৪০ মিটার গভীরতার নিচে ট্রলিং বোট দিয়ে মাছ ধরার অনুমতি নেই। কিন্তু বাস্তবে এসব বোট নিয়ম ভেঙে উপকূলবর্তী এলাকায় জাল ফেলছে, যার ফলে ক্ষতির মুখে পড়েছেন সাধারণ জেলেরা।
এ বিষয়ে পটুয়াখালী জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. কামরুল ইসলাম বলেন, ‘কিছু নিষিদ্ধ ট্রলিং বোটের মালিক উচ্চ আদালতে রিট করেছেন, ফলে আইনি জটিলতায় সরাসরি ব্যবস্থা নিতে কিছুটা সমস্যা হচ্ছে। তবে যারা রিট করেননি, তাদের বিরুদ্ধে নিয়মিত অভিযান পরিচালিত হচ্ছে। অবৈধ জাল ও মাছের বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান অব্যাহত আছে।’