কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতে ভাঙন, উপড়ে পড়েছে কয়েক হাজার ঝাউগাছ

সৈকতে উপড়ে পড়া ঝাউগাছ বন বিভাগের পক্ষ থেকে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে
সৈকতে উপড়ে পড়া ঝাউগাছ বন বিভাগের পক্ষ থেকে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে  © সংগৃহীত

সাগরের প্রবল ঢেউয়ের কারণে কক্সবাজার সৈকতের বিভিন্ন এলাকার বালিয়াড়ি ধসে পড়েছে, উপড়ে গেছে কয়েক হাজার ঝাউগাছ। সমুদ্রসৈকতে থাকা পুলিশ বক্স, অস্থায়ী দোকান, ওয়াচ টাওয়ারও ভাঙনের শিকার হয়েছে। গত দুই দিনে অমাবস্যা ও নিম্নচাপের প্রভাবে অস্বাভাবিক জোয়ারে এসব ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এর বাইরে সৈকতের পাশের একাধিক রেস্তোরাঁ ও ভবনে ভাঙনের ঝুঁকি দেখা দিয়েছে।

গতকাল শনিবার বিকেলে সরেজমিন সমুদ্রসৈকতের শৈবাল, লাবণী, সুগন্ধা, কলাতলীসহ কয়েকটি পয়েন্টে গিয়ে দেখা যায়, ঢেউয়ের আঘাতে সৈকতের বিভিন্ন জায়গায় বিশাল গর্ত তৈরি হয়েছে। বৈদ্যুতিক খুঁটির ওপর ঝাউগাছ পড়ে থাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে কিছু এলাকায়। স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, ভাঙনের এই ধারা অব্যাহত থাকলে সৈকতের কাছেই বানানো আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়াম, পর্যটন পুলিশের কার্যালয়, জেলা প্রশাসনের তথ্য, অভিযোগ কেন্দ্রসহ সরকারি বিভিন্ন স্থাপনাও ভাঙনের কবলে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।

কক্সবাজার দক্ষিণ বন বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ১৯৬১ থেকে ১৯৬২ সালে কক্সবাজার সদরের নাজিরারটেক থেকে হিমছড়ি পর্যন্ত ১২ হেক্টর বালিয়াড়িতে প্রথম ঝাউগাছ রোপণ শুরু হয়। পরে ১৯৭৪ সালে এই বাগানের প্রসার ঘটে। পরে ধাপে ধাপে মোট ৩০০ হেক্টর এলাকায় প্রায় সাড়ে সাত লাখ ঝাউগাছ রোপণ করা হয়। এসব গাছ উপকূলীয় সৌন্দর্য ও দুর্যোগ প্রতিরোধে ভূমিকা রেখে আসছে। কিন্তু গত কয়েক দশকে ঘূর্ণিঝড়, সাগরের পানির উচ্চতা বৃদ্ধি ও ঢেউয়ের কারণে বালিয়াড়ি ভেঙে অনেক ঝাউগাছ উপড়ে পড়েছে।

জানতে চাইলে কক্সবাজার দক্ষিণ বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. নূরুল ইসলাম বলেন, ঢেউয়ের ধাক্কায় ঝাউগাছের গোড়া থেকে মাটি সরে যাচ্ছে, ফলে গাছ পড়ে যাচ্ছে। উপকূল রক্ষায় আধুনিক বাঁধ নির্মাণ জরুরি।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের কক্সবাজার কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী নুরুল ইসলাম বলেন, প্রতিবছরই জিও ব্যাগ বসিয়ে ভাঙন ঠেকানোর চেষ্টা করা হয়। তবে তাতে স্থায়ী সমাধান হয় না। দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা ও উপযুক্ত বাঁধ ছাড়া কক্সবাজার সৈকত রক্ষা করা সম্ভব নয়।


সর্বশেষ সংবাদ