প্রতিবন্ধীকে মারধর করল ডিসি অফিসের স্টাফ, আটকে রাখেন শিক্ষার্থীদের

যশোর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়
যশোর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়  © সংগৃহীত

যশোর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে আজ বুধবার দুপুরে একটি অপ্রীতিকর ঘটনার জন্ম নেয়। প্রতিবন্ধী কার্ডের জন্য আবেদন করতে আসা মনিরুল (৪৫) নামের এক প্রতিবন্ধী ব্যক্তির সঙ্গে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের দুই কর্মচারীর কথাকাটাকাটি হয়, যা পরে মারধরে রূপ নেয়। ঘটনাস্থলে থাকা কিছু শিক্ষার্থী মনিরুলের পক্ষে প্রতিবাদ করলে, সংশ্লিষ্ট কর্মচারীরা তাদের মধ্য থেকে পাঁচজনকে আটকে রাখেন। 

আজ বুধবার (২১ মে) দুপুরে যশোর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি শান্ত করে এবং আটক শিক্ষার্থীদের মুক্ত করে।

আটক হওয়া পাঁচজন শিক্ষার্থী যশোর শহরের মুসলিম একাডেমি, জিলা স্কুল ও যশোর সরকারি কলেজে পড়াশোনা করে। পরে মুচলেকা নিয়ে তাদের পরিবারের জিম্মায় ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

পুলিশ ও জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সূত্র জানায়, আজ দুপুরে যশোর সদর উপজেলার চাঁচড়া ইউনিয়ন থেকে ক্রাচে ভর দিয়ে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকের (সার্বিক) কক্ষের সামনে আসেন প্রতিবন্ধী মনিরুল। তিনি অফিস সহকারীদের কাছে প্রতিবন্ধী কার্ড দেওয়ার অনুরোধ করেন। উত্তরে অফিস সহকারীরা জানান, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে এই কার্ড দেওয়া হয় না; এর জন্য তাকে ইউনিয়ন পরিষদে যোগাযোগ করতে হবে। এ সময় মনিরুল সিঁড়ি দিয়ে নামার পথে ক্ষোভ প্রকাশ করে গালমন্দ করতে থাকলে, অফিস সহকারীরা তাকে বাধা দেন। একপর্যায়ে কথাকাটাকাটি থেকে পরিস্থিতি হাতাহাতিতে গড়ায়।

আরও পড়ুন: শিক্ষার্থীদের হাতে নিম্নমানের পাঠ্যবই, জড়িত মুদ্রণ প্রতিষ্ঠানকে কালো তালিকাভূক্ত করবে এনসিটিবি

অফিস সহকারী বাবুল আক্তার দাবি করেছেন, প্রতিবন্ধী মনিরুল তাকে ক্রাচ দিয়ে আঘাত করেন। পরিস্থিতি সামাল দিতে এগিয়ে এলে আরেক অফিস সহকারী আবু হাসানের হাতে কামড়ে দেন মনিরুল। এরপর আরও কয়েকজন কর্মচারী এগিয়ে এসে মনিরুলকে মারধর করেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ঘটনার একপর্যায়ে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় চত্বরে অবস্থান করা ১০-১৫ জন শিক্ষার্থী প্রতিবন্ধী মনিরুলের পক্ষে কথা বলে বিষয়টি মীমাংসার চেষ্টা করেন। এতে কার্যালয়ের কর্মচারীদের সঙ্গে তাদের বাকবিতণ্ডা শুরু হয়। অভিযোগ রয়েছে, তখন কয়েকজন শিক্ষার্থী বাঁশ হাতে জেলা প্রশাসকের নেজারত শাখায় ঢোকার চেষ্টা করেন। এর পরপরই কর্মচারীরা পাঁচজন শিক্ষার্থীকে ধরে নেজারত শাখার একটি কক্ষে আটকে রাখেন। পরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মী ও পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি শান্ত করেন।

এদিকে, পরিস্থিতি উত্তপ্ত হওয়ার একপর্যায়ে যশোর কোতোয়ালি মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক বাবুল হোসেনের নেতৃত্বে একটি পুলিশ দল জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে উপস্থিত হয়। পরে আটক পাঁচজন শিক্ষার্থীকে জেলা প্রশাসক আজহারুল ইসলামের কক্ষে নিয়ে যাওয়া হয়। পুলিশ পরিদর্শক বাবুল হোসেন জানিয়েছেন, বিকেল ৪টার দিকে শিক্ষার্থীদের মুচলেকা নিয়ে তাদের পরিবারের জিম্মায় হস্তান্তর করা হয়।


সর্বশেষ সংবাদ