কম বাড়িভাড়া নিয়েছে শেকৃবি, অনিয়মে সরকারের ক্ষতি ২০ কোটি

শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়
শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়  © ফাইল ছবি

নির্দিষ্ট হারে বাড়িভাড়া নির্ধারিত রয়েছে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারীদের জন্য। তবে শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শেকৃবি) নির্ধারিত হারের চেয়ে কম বাড়িভাড়া নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। এতে সরকারের অন্তত ১৫ কোটি ৫১ লাখ টাকা ক্ষতি হয়েছে। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়টির আগের দুই অর্থবছরে ১১ ক্ষেত্রে অনিয়ম পেয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। এতে সরকারের ক্ষতি হওয়া ২০ কোটি ৪৯ লাখ টাকা সুবিধাভোগীদের কাছ থেকে ফেরত নেওয়ার সুপারিশ করেছে কমিশন।

এসব অভিযোগের বিষয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. শহীদুর রশীদ ভূঁইয়া গণমাধ্যমকে বলেছেন, ‘বিভিন্ন দায়িত্ব পালনের জন্য ইউজিসির নির্ধারিত ভাতা খুবই কম। ফলে দায়িত্বপ্রাপ্তদের সিন্ডিকেট অনুমোদিত হারে ভাতা দেওয়া হয়। অতিরিক্ত ভাতা সংযোজন করা হয়নি। ১০ বছর ধরে যে নিয়মে বাড়িভাড়া কাটা হয়েছে, এখনো তাই হচ্ছে। একইভাবে পরিচালিত হয় অন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোও।’

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, অনুমোদন ছাড়াই ১৩৫ জন দৈনিকভিত্তিক কর্মচারী নিয়োগ করেছে বিশ্ববিদ্যালয়টি। এতে সরকারের ২ কোটি ৮৩ লাখ ৪০ হাজার টাকা ক্ষতি হয়েছে। জনবল নিয়োগ বাবদ ৩৪ লাখ ৪১ হাজার টাকাও রাজস্ব খাতে আয় হিসেবে দেখানো হয়নি। এ ছাড়া ২০১৯-২০ অর্থবছরে পরীক্ষা পারিতোষিক খাতে ৯৭ লাখ টাকা অতিরিক্ত ব্যয় করেছে কর্তৃপক্ষ। ১০ শতাংশ হারে আয়করও কাটা হয়নি। এতে ক্ষতি অন্তত ৩০ লাখ ৭০ হাজার টাকা।

বিশ্ববিদ্যালয়টির উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষ মূল বেতনের ২০ শতাংশ এবং ডিন, বিভাগীয় চেয়ারম্যান, প্রাধ্যক্ষ, প্রক্টর ও কর্মকর্তারা অননুমোদিত হারে মাসিক ভাতা নিচ্ছেন। এতে অন্দদ ৫০ লাখ টাকা ক্ষতি হয়েছে। এ ধরনের ভাতা দেওয়া সুযোগ না থাকায় তা আদায় করার সুপারিশ করেছে ইউজিসি। গবেষণার জন্য শিক্ষার্থীদেরও অর্থ বরাদ্দ দিতে সুপারিশ করা হয়।

আরো পড়ুন: ৬০০ টাকার ফি বেড়ে ৯০০, মন্তব্য করতে নারাজ উপাচার্য

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মো. শহীদুর রশীদ ভূঁইয়া গণমাধ্যমকে বলেন, ‘দায়িত্ব গ্রহণের পর আমি কাউকে নিয়োগ দিইনি। গবেষণার জন্য স্নাতকোত্তর পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের কিছু অর্থ দেওয়া হয়।’ এ সময় ইউজিসি পর্যবেক্ষণ না করে ঢালাওভাবে এসব বিষয় তুলে এনেছে বলে দাবি করেন তিনি।

এ বিষয়ে ইউজিসির সদস্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আলমগীর বলেন, ‘ঢালাওভাবে নয়, প্রয়োজনীয় তথ্য বিশ্লেষণ করে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ইউজিসি। অনিয়মের বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে জানানো হয়েছে। মন্ত্রণালয় বিষয়টি দেখবে।’

ইউজিসির চেয়ারম্যান (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. দিল আফরোজা বেগম বলেন, ‘নিয়ম অনুযায়ী কেউ অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করলে তাঁর দেড় হাজার টাকা পাওয়ার কথা। আমি নিজেও পাচ্ছি। আবাসন বাবদ বেতনের সাড়ে সাত শতাংশ কাটার কথা। নিয়মবহির্ভূত কোনো কিছু না হলে প্রতিবেদন দেওয়ার কথা নয় ইউজিসির।’


সর্বশেষ সংবাদ