এবার বাকৃবিতে শিক্ষার্থীদের ওপর বহিরাগতদের হামলা
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ৩১ আগস্ট ২০২৫, ০৮:১৫ PM , আপডেট: ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৩:০১ PM
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের পর এবার বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর সদরের এসপি ও ডিসির উপস্থিতিতে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে হামলা করেছে বহিরাগতরা। এ ঘটনায় সাংবাদিকসহ ১০ জন আহত হয়েছেন।
আজ রবিবার (৩১ আগস্ট) রাত পৌনে ৮টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন মিলনায়তনের সামনে এই ঘটনা ঘটে। এ সময় বেশ কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়।
জানা গেছে, কম্বাইন্ড ডিগ্রির দাবিতে পশুপালন ও ভেটেরিনারি অনুষদের শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করছিলেন। আন্দোলন চলাকালে রাত ৭টা ৪০ মিনিটের দিকে লাঠিসোটা ও দেশীয় অস্ত্র হাতে বহিরাগত দুর্বৃত্তরা নিরস্ত্র শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায়। হামলাকারীরা মিলনায়তনের তালা খুলে ভেতরে আটকা শিক্ষকদের বের করে আনে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সন্ধ্যা থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ের শেষ মোড় এলাকায় ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের অবস্থান দেখা যায়। পরে তারাই শিক্ষার্থীদের ওপর এ হামলা চালায় বলে অভিযোগ তাদের।
নাম প্রকাশের অনিচ্ছুক শিক্ষার্থী বলেন, ‘যৌক্তিক দাবি চাওয়ায় আমাদের ওপর যেভাবে প্রশাসন বহিরাগতদের লেলিয়ে দিল, তার তীব্র প্রতিবাদ জানাই। এই ফ্যাসিস্ট প্রশাসন আমাদের ওপর হামলা করেছে আওয়ামী লীগের মতই, তাদের মতামত আমাদের ওপর জোর করেই চাপায় দিয়েছে।’
বিশ্ববিদ্যালয়টির এক শিক্ষার্থী বলেন, “শিক্ষার্থীদের ন্যায্য দাবির আন্দোলন দমাতে আজ সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও কিছু শিক্ষকের প্রত্যক্ষ ইন্ধনে বহিরাগতদের ক্যাম্পাসে আনা হয়। তারা সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায় এবং নারী শিক্ষার্থীরাও এ হামলার শিকার হন। এসময় কয়েকজন শিক্ষকও সরাসরি শিক্ষার্থীদের ওপর হামলায় অংশ নেন।”
আরেক শিক্ষার্থী বলেন, “হঠাৎ দেখি ভিসি বাসভবনের দিক থেকে অনেক লোক আসছে এবং অডিটোরিয়ামের ডান পাশ থেকে চিৎকার শুরু হয়। পরে বহিরাগতরা আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর আক্রমণ করে এবং মারধর চালায়। আশ্রয়ের জন্য আমরা লাইব্রেরিতে অবস্থান নেই। কিন্তু ওই সময় যারা আক্রমণ করছিল তারা সবাই ছাত্রদলকর্মী ও টোকাই ছিল। তারা লাইব্রেরিতে ভাঙচুরও চালায়।”
উল্লেখ্য, আজ রবিবার কম্বাইন্ড ডিগ্রি বাস্তবায়নে আয়োজিত একাডেমিক কাউন্সিলের সিদ্ধান্ত ফলপ্রসূ না হওয়ায় সভায় উপস্থিত উপাচার্যসহ সব শিক্ষককে অবরুদ্ধ করে তালা ঝুলিয়ে দেয় বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) পশুপালন ও ভেটেরিনারি অনুষদের শিক্ষার্থীরা। এ ঘটনায় ২২৭ জন শিক্ষক অবরুদ্ধ করে রাখা হয়।
এর আগে বেলা ১১টায় কম্বাইন্ড ডিগ্রি ইস্যু সমাধানে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন মিলনায়তনে একাডেমিক কাউন্সিলের জরুরি সভা শুরু হয়।
এদিন সকাল ৯টা থেকে দুই অনুষদের শিক্ষার্থীরা শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন মিলনায়তনের আশপাশে জড়ো হতে থাকেন। শিক্ষার্থীদের একটাই দাবি ছিল—‘এক পেশায় এক ডিগ্রি, কম্বাইন্ড ডিগ্রি’। দুপুর দেড়টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কাউন্সিলের সিদ্ধান্ত আশানুরূপ না হওয়ায় বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা মিলনায়তনে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব শিক্ষককে একত্রে অবরুদ্ধ করে তালা লাগিয়ে দেন।