১৪শ’ আসনের বিপরীতে ভর্তি পরীক্ষায় বসলো ৭১৮ ভর্তিচ্ছু

রাবি অধিভুক্ত ১৩টি কলেজ-ইনস্টিটিউট

রাবি ক্যাম্পাস
রাবি ক্যাম্পাস  © ফাইল ফটো

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) অধিভুক্ত ১৩টি প্রকৌশল, কৃষি কলেজ ও ইনস্টিটিউটে ২০২৩-২০২৪ সেশনের ১ম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। পরীক্ষায় মোট আসন সংখ্যার থেকে আবেদন সংখ্যা ও অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীর সংখ্যা অনেক কম। শুরু থেকেই এমন তিক্ত অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হয়ে আসছেন বিশ্ববিদ্যালয়টি। 

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) অধিভুক্ত ১৩টি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, কৃষি কলেজ ও ইনস্টিটিউটসমূহকে একত্রে ভর্তি পরীক্ষা চালু করেন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। ভর্তির আবেদন গত ১৭ এপ্রিল থেকে শুরু হয়। এসব কলেজ ও ইনস্টিটিউটসমূহে মোট আসন সংখ্যা ছিল এক হাজার চারশ। যেখানে ভর্তি পরীক্ষায় প্রাথমিকভাবে আবেদন করেছিল এক হাজার ১৭৩ জন শিক্ষার্থী। সব থেকে আশ্চর্যের বিষয়, আজ শনিবার (৮ জুন) ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন মাত্র ৭১৮ জন ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী। যা মোট আসনের অর্ধেক। 

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. সুলতান-উল-ইসলাম দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, আমাদের প্রধান কাজ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়কে সুষ্ঠুভাবে চালিয়ে নেওয়া। এই সকল কাজগুলো ব্যতিরেকে কিছু কলেজ ও ইনস্টিটিউটকে অধিভুক্ত করে তাদের দেখভাল করার দায়িত্ব আমাদের উপর দেওয়া হয়েছে এবং তাদের সার্টিফিকেট দেওয়ার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তাই এসব কলেজ ও ইনস্টিটিউটসমূহে কাজ সঠিকভাবে হচ্ছে কিনা তা দেখভাল করা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। 

তিনি আরো বলেন, যে সাবজেক্ট রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় নিজে খুলতে পারার মতো যোগ্যতা অর্জন করতে পারেনি, তখনকার প্রশাসন সেই সব সাবজেক্ট এই সকল কলেজ-ইনস্টিটিউটে চালু করেছে। এটা একটা অব্যবস্থাপনা। কিন্তু তারা প্রচার করে বেড়িয়েছে যে তারা শিক্ষা সম্প্রসারণ ঘটাচ্ছে। অথচ এসব প্রতিষ্ঠানসমূহ নিজেরাই অস্তিত্ব সংকটে আছে আবার কোনোটি সবেমাত্র চালু হয়েছে। ফলে সেখানে লেখাপড়া হচ্ছিল না। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়বদ্ধতার জায়গা থেকে এখন ভর্তি পরীক্ষা আমরা রাবি ক্যাম্পাসেই নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। নইলে এসব শিক্ষার্থীরাও নানা সমস্যায় ভুগবে ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়কে অপাত্রে সার্টিফিকেট দান করতে হবে। ফলে ভালো ভালো শিক্ষার্থীরা সেখানে ভর্তি হতে পারবে।

অধিভুক্ত এসব প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীরা কেন ভর্তি হতে চাচ্ছেন না? এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, কোন কোন প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীরা পড়বে তার নিশ্চয়তা দান করতে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে। যদি যোগ্য শিক্ষক না থাকে, ল্যাব না থাকে তাহলে একজন শিক্ষার্থী কেন ভর্তি হবে? শিক্ষার্থীরা কেন ভর্তি হচ্ছে না তা নানাবিধ কারণ থাকতে পারে। প্রথমত, ওই সকল প্রতিষ্ঠানের উপর শিক্ষার্থীদের আস্থার অভাব এবং শিক্ষাদান ও ল্যাব ফ্যাসিলিটিজ সঠিকভাবে ডেভেলপ হয়নি। একজন শিক্ষার্থী তো একটি ভালো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হতে চাইবে। আরেকটা বিষয় হলো গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষার আওতায় যে সকল বিশ্ববিদ্যালয় আছে সেখানে অনার্সের নতুন নতুন কোর্স চালু করা হয়েছে, সেখানেও শিক্ষার্থীরা যাচ্ছে। এগুলো হলো প্রধান কারণ। আর বাকিগুলো সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের ও শিক্ষার্থীদের নিজস্ব ব্যাপার। 

যেহেতু আসন সংখ্যার কম শিক্ষার্থী ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছে তাহলে কি সবাই ভর্তির অনুমতি পাবে? এই প্রশ্নোত্তরে অধ্যাপক সুলতান-উল-ইসলাম বলেন, তেমনটা হওয়ার প্রশ্নই আসে না। পরীক্ষা তো অভিনয় করার জন্য নেওয়া হয়নি। কোনো শিক্ষার্থী পাশ নম্বর না পেয়েও ভর্তি হতে পারবে না। পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে যোগ্যদের বাছাই করার জন্য। তাই পাশ নম্বর পেলেই কেবল ভর্তির অনুমতি দেওয়া হবে।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজগুলো হলো রংপুর ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, রংপুর; টিএমএসএস ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, বগুড়া; পাবনা ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, পাবনা; ইমপেরিয়াল কলেজ অব ইঞ্জিনিয়ারিং, খুলনা এবং আশ্রয় ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, রাজশাহী, কেএসএফএল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, দিনাজপুর। এখানে মোট আসন সংখ্যা রয়েছে ৫৬০টি। 

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত কৃষি কলেজ ও ইনস্টিটিউটসমূহ হলো- ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব এপ্লাইড সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি (আইআইএএসটি), রংপুর; হেনরী ইনস্টিটিউট অব বায়োসায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি, সিরাজগঞ্জ; বরেন্দ্র ইনস্টিটিউট অব বায়োসায়েন্সেস, নাটোর; উদয়ন কলেজ অব বায়োসায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি, রাজশাহী; গ্রাজুয়েট ইনস্টিটিউট অব এগ্রিকালচার অ্যান্ড টেকনোলজি, কুষ্টিয়া; শহীদ শামসুজ্জোহা ইনস্টিটিউট অব বায়োসায়েন্স, কাটাখালী, রাজশাহী। আসন সংখ্যা রয়েছে ৮৪০টা।


সর্বশেষ সংবাদ