হেরে গেলেন মা মাহরীন, জিতে গেলেন শিক্ষিকা মাহরীন ম্যাডাম: আসিফ
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ২৩ জুলাই ২০২৫, ০৬:৪৬ PM , আপডেট: ১৬ আগস্ট ২০২৫, ১২:৫৯ PM
সোমবার, দুপুর ১টা ১৮ মিনিট। ঢাকার উত্তরার দিয়াবাড়ির মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে হঠাৎই আকাশ থেকে এসে পড়ল বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর একটি যুদ্ধবিমান। সঙ্গে সঙ্গে দাউ দাউ করে জ্বলে ওঠে আগুনের লেলিহান শিখা। বিস্ফোরণে আতঙ্কে ছোটাছুটি শুরু করে শিক্ষার্থীরা। হাহাকার, আর্তচিৎকারে কেঁপে ওঠে চারপাশ। এ আতঙ্কের মুহূর্তে একা দাঁড়িয়ে যান একজন– তিনি শিক্ষক মাহরীন চৌধুরী।
মায়ের মতো বুকে শিক্ষার্থীদের আগলে রাখলেন। অথচ চাইলেই তিনি সরে যেতে পারতেন, বাঁচাতে পারতেন নিজের জীবন। কিন্তু তা তিনি করলেন না। নিজের জীবনকে আগুনের মুখে ঠেলে দিয়ে বারবার ফিরে গেলেন সেই শ্রেণিকক্ষে, যেখানে আটকে পড়েছিল তার ‘বাচ্চারা’। একে একে টেনে বের করে আনেন কমপক্ষে ২০ শিক্ষার্থীকে। শরীরটাতে যখন আগুন লেগে যায়, তখন স্বামী মনছুর হেলাল ফোন দিলেন। তিনি বারবার তাদের দুই সন্তানের কথা ভেবে নিরাপদে সরে যেতে বলছিলেন। কিন্তু মাহরীন চৌধুরী স্বামীকে বলেছিলেন, ‘এরাও আমার বাচ্চা। তারা পুড়ে মারা যাচ্ছে, আমি কীভাবে সহ্য করি?’ এরপর বার্ন ইনস্টিটিউটে গিয়ে মেহেরীনের দগ্ধ শরীর পেলেন স্বামী। তার শরীরের শতভাগই আগুনে পুড়ে গিয়েছিল। সোমবার রাতেই লাইফ সাপোর্টে থাকা অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।
মাহরীন চৌধুরীর মৃত্যু নিয়ে আজ বুধবার (২৩ জুলাই) ফেসবুকে আবেগময় একটি পোস্ট দিয়েছেন সংগীতশিল্পী আসিফ আকবর।
পোস্টে আসিফ লেখেন, ‘দৌড়াও, ভয় পেওনা, আমি আছি...। প্রয়াত শিক্ষিকা মাহরীন চৌধুরী। নিজের দুই সন্তানের মায়া, নিজের ছাত্র ছাত্রীদের জন্যও অমোঘ মায়া ! হেরে গেলেন মা মাহরীন, জিতে গেলেন শিক্ষিকা মাহরীন ম্যাডাম। জিতিয়ে গেলেন শিক্ষকতার মত মহান পেশাকে। অনিয়মের দেশে মাইলস্টোন ট্র্যাজেডীর চেয়ে আরো ভয়াবহ অনেক কিছুই চলে আসবে সামনে, আমাদের নিয়তি এমনই। ভবিষ্যতের আলো বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টায় নিজেই পরপারে চলে গেলেন ম্যাডাম মাহরীন চৌধুরী।
আরও পড়ুন: ৬ষ্ঠ গণবিজ্ঞপ্তির সুপারিশ নিয়ে যা জানালেন এনটিআরসিএ চেয়ারম্যান
তিনি আরও লেখেন, ‘নিয়তির নিষ্ঠুরতাকে ব্যতিক্রম প্রমান করে মা,বাবা,শিক্ষক- এই তিন এ কোন পার্থক্য রাখতে দেননি দ্য সিক্রেট সুপারস্টার ম্যাম মাহরীন। বিনম্র শ্রদ্ধা। শোক পরিণত হউক শক্তিতে। আকষ্মিক ঝড়ে ঝরে যাওয়া সব ফুলগুলো প্রস্ফুটিত হউক জান্নাতের বাগানে। আমিন...।’
আসিফের পোস্টে সুমাইয়া আকন্দ নামের একজন মন্তব্য করেন, ‘আল্লাহ জান্নাতুল ফেরদাউস নসীব করুন উনাকে।’
ইব্রাহিম খলিল নামের একজন লেখেন, ‘উনার দাফন রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় সম্পন্ন করা উচিৎ ছিল। অকৃতজ্ঞ রাষ্ট্র, অকৃতজ্ঞ রাষ্ট্রের নাগরিক আমরা ও অকৃতজ্ঞ।
ইশরাত জাহান তিশা নামের একজন মন্তব্য করেন, ‘উনি শহীদ জিয়ার আদর্শের সৈনিক।স্যালুট মা জননী আপনাকে।’
মো. নাসিরুদ্দিন ফকির লিটন নামে একজনর লেখেন, ‘মা শব্দটি দিয়ে পৃথিবী আল্লাহ মমতাময়ী মায়ের জান্নাত দান করেন। (আমিন)’