ইন্ডিগো এয়ারলাইন্সের শত শত ফ্লাইট বাতিল, ভোগান্তিতে লাখো যাত্রী
- টিডিসি ডেস্ক
- প্রকাশ: ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৮:৪০ AM
টানা তিন দিন ধরে বাতিলের ঢেউয়ে বিপর্যস্ত ভারতের ইন্ডিগো এয়ারলাইন্স। একের পর এক ফ্লাইট বাতিল হওয়ায় ভোগান্তিতে পড়েছেন লাখো যাত্রী। শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) একদিনেই সংস্থাটি ৬০০-র বেশি ফ্লাইট বাতিল করেছে। আগের দিন বৃহস্পতিবার বাতিল হয়েছিল ৫৫০টি। পূর্বঘোষণা ছাড়াই হঠাৎ ফ্লাইট বাতিল হওয়ায় যাত্রীরা অনিশ্চয়তা ও বিপাকে পড়েছেন।
গত কয়েক দিন ধরে ভারতের বিভিন্ন বিমানবন্দরে চরম বিশৃঙ্খলা দেখা যাচ্ছে। যাত্রীদের অভিযোগ— খাবার ও আশ্রয়ের ব্যবস্থা না রেখেই তাদের ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করানো হচ্ছে। কোন ফ্লাইট কখন ছাড়বে সে বিষয়ে সংস্থার পক্ষ থেকে স্পষ্ট কোনো তথ্য দেওয়া হচ্ছে না। অন্যদিকে, পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে অন্যান্য এয়ারলাইন্স টিকিটের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে বলে অভিযোগ যাত্রীদের।
ইন্ডিগোর এই গুরুতর পরিষেবা বিঘ্নের নেপথ্যে রয়েছে ভারতের বেসামরিক উড্ডয়ন নিয়ন্ত্রক সংস্থা ডিজিসিএ-র একটি নিয়ম। পাইলট ও বিমানকর্মীদের জন্য নিরাপত্তামূলক ‘ফ্লাইট ডিউটি টাইম লিমিটেশনস’ নামে নতুন বিধি ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে জারি করা হয়। এতে প্রতি সপ্তাহে পাইলট ও ক্রুদের ৪৮ ঘণ্টা বিশ্রাম নিশ্চিত করা, একজন পাইলটকে সপ্তাহে মাত্র দুটি নাইট ল্যান্ডিং করানোর সীমা, এবং পরপর দুই দিন নাইট ডিউটি দেওয়ার সীমাবদ্ধতা আরোপ করা হয়। জুনে বিধিটি কার্যকর হওয়ার কথা থাকলেও বিমানসংস্থাগুলোর অনুরোধে তা পিছিয়ে যায়। তবে দিল্লি হাই কোর্ট নির্দেশ দেওয়ার পর ডিজিসিএ ধাপে ধাপে নিয়মটি চালু করতে শুরু করে।
নতুন নিয়মের ধাক্কা সবচেয়ে বেশি লেগেছে ইন্ডিগোতে। কারণ সংস্থাটির বিপুলসংখ্যক বিমান রাতে অবতরণ করে, আর বিধি মেনে সেই অপারেশন চালাতে প্রয়োজনীয় সংখ্যক পাইলট ও ক্রু তাদের নেই। কর্মীসংকটের কথা স্বীকার করেই ইন্ডিগো ইতিমধ্যে যাত্রীদের কাছে একাধিকবার ক্ষমা চেয়েছে। অথচ পাইলট সংগঠনগুলোর অভিযোগ— নিয়ম জারির পর দুই বছর সময় থাকা সত্ত্বেও ইন্ডিগো নতুন কর্মী নিয়োগ করেনি এবং দীর্ঘমেয়াদী প্রস্তুতি নেয়নি। তাদের দাবি, বিধি শিথিল করাতে চাপ দেওয়ার কৌশল হিসেবেই ইন্ডিগো নিয়োগ দীর্ঘদিন বন্ধ রেখেছিল।
ইন্ডিগো অবশ্য সামাজিকমাধ্যমে জানিয়েছে, প্রযুক্তিগত ত্রুটি, শীতকালীন সময়সূচির পরিবর্তন, প্রতিকূল আবহাওয়া, বাড়তি আকাশযান চাপ এবং কাজের সংশোধিত সময়সূচি— এসব কারণে পরিষেবা ব্যাহত হচ্ছে। তবে প্রকৃত কারণ জানতে শুক্রবার ইন্ডিগোর ওপর উচ্চ পর্যায়ের তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে ভারতের কেন্দ্রীয় বেসামরিক বিমান পরিবহন মন্ত্রণালয়। [সূত্র: পিটিআই]