ভূমিকম্প নিয়ে চমকপ্রদ ১০ তথ্য

ভূমিকম্প নিয়ে প্রকৃতিতে নানা ধরনের চমকপ্রদ ঘটনা ঘটে
ভূমিকম্প নিয়ে প্রকৃতিতে নানা ধরনের চমকপ্রদ ঘটনা ঘটে  © টিডিসি সম্পাদিত

ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় শক্তিশালী ভূমিকম্প হয়েছে পর পর দুইদিন। এ পর্যন্ত নরসিংদী, ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জে ১০ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। আহত হয়েছেন কয়েক শত মানুষ। শুক্রবার (২১ নভেম্বর) সকাল ১০টা ৩৮ মিনিটে অনুভূত হওয়া এ ভূমিকম্পকে কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহন বলা হচ্ছে। 

নরসিংদীর মাধবদীতে এ ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল রিখটার স্কেলে ৫.৭। ২৪ ঘণ্টা পার না হতেই একই এলাকায় ফের ৩ দশমিক ৩ মাত্রা ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। শনিবার (২২ নভেম্বর) সকাল ১০ টা ৩৬ মিনিটে এ কম্পন রেকর্ড করা হয়। ভূমিকম্প একটি প্রাকৃতিক ঘটনা হলেও এর বেশকিছু চমকপ্রদ দিক রয়েছে। আসুন জেনে নিই তেমন ১০ তথ্য।-

১. পৃথিবীতে মুহূর্তের ব্যবধানে একাধিক ভূমিকম্প হয়। এ তালিকা মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থার (ইউএসজিস) ওয়েবসাইটে গেলে দেখা যাবে। সে হিসেবে বছরে লাখ লাখ ভূমিকম্প হয়। যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা জিওলজিক্যাল সার্ভে বলছে, বছরে গড়ে রিখটার স্কেলে ৭ মাত্রার ভূমিকম্প হয় ১৭টি। আর ৮ মাত্রার হয় একবার।

২. গবেষকরা বলছেন, ভূমিকম্পের আগে শুধু ব্যাঙ নয়, পশুপাখিরাও টের পায়। তারা মাটির ছোট ছোট তরঙ্গ মানুষের তুলনায় বেশি অনুভব করতে পারে।

৩. ভূমিকম্প নিয়ে আরেকটি বিস্ময়কর তথ্য হলো, বেশি মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্পে পর্বতের উচ্চতা কমে যায়। ২০১৫ সালের ২৫ এপ্রিল নেপালে ৭.৮ মাত্রার ভূমিকম্পে মাউন্ট এভারেস্টের উচ্চতা প্রায় এক ইঞ্চি কমে গিয়েছিল।

৪. পৃথিবীর ভূখণ্ড সাতটি বড় প্লেট এবং অসংখ্য ছোট ছোট সাব-প্লেট দিয়ে তৈরি। সে গুলো ভূঅভ্যন্তরের নরম পদার্থের ওপর ভাসছে।

৫. ভূঅভ্যন্তরের প্লেটের নড়াচড়ার কারণে যুক্তরাষ্ট্রের সান ফ্রান্সিসকো শহর বছরে গড়ে দুই ইঞ্চি করে লস অ্যাঞ্জেলসের দিকে সরছে। এই গতিতে আমাদের আঙ্গুলের নখ বাড়ে?

৬. ২০১০ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি ৮.৮ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হেনেছিল চিলির কনসেপসিওন শহরে। ফলে পৃথিবীর শক্ত উপরিভাগে ফাটল ধরে শহরটি ১০ ফুট পশ্চিমে সরে যায়।

৭. গবেষকরা বলছেন,  ভূমিকম্পের কারণে দিনের দৈর্ঘ্যও কম বা বেশি হতে পারে। কারণ বেশি মাত্রায় পৃথিবীর ভরের পরিবর্তন হয়। এ ফলে পৃথিবীর ঘূর্ণন গতি সামান্য বাড়ে। এতে কমে দিনের দৈর্ঘ্য। ২০০৯ সালের ১১ মার্চ জাপানের উত্তর-পূর্বে ৮.৯ মাত্রার ভূমিকম্পের ফলে সেদিনের দৈর্ঘ্য ১.৮ মাইক্রো সেকেন্ড কমে যায় বলে দাবি গবেষকদের।

আরও পড়ুন: ভূমিকম্পের নেপথ্যে ৩ প্লেট ও ৬ ফল্ট, ঝুঁকিতে ঢাকাসহ যে ২৪ জেলা

৮. ওপেন ইউনিভার্সিটির প্রাণিবিজ্ঞান বিভাগ বলছে, ২০০৯ সালে ইতালিতে ভূমিকম্পের সময় এক প্রজাতির ব্যাঙ উধাও হয়ে গিয়েছিল। তারা ফিরে এসেছিল ভূমিকম্পের পরে। বলা হয়, ব্যাঙগুলো সেখানকার পানির রাসায়নিক পরিবর্তন দ্রুত শনাক্ত করে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, প্লেট সরে যাওয়ার কারণে মাটির নিচ থেকে যে গ্যাস নির্গত হয়, সেগুলোর কারণে ভূমিকম্পের আগে পুকুর, খাল-বিল, হ্রদ, জলাশয়ের স্থির পানি থেকে দুর্গন্ধ ছড়ায়। এতে পানি উষ্ণও হয়।

৯. ভূমিকম্পের কয়েক ঘণ্টা পরও ঢেউ থাকে পানিতে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, ভূকম্পনের পর পানির তরঙ্গ দীর্ঘসময় থাকতে পারে। এটিতে  শ্যাস বলা হয়। এ কারণে ভূমিকম্পের সময় পানিতে, বিশেষে করে পুকুর, সমুদ্র, সুইমিং পুলের সামনে থাকা অনিরাপদ।

১০. পৃথিবীতে যত ভূমিকম্প হয়, তার ৯০ শতাংশই হয় প্রশান্ত মহাসাগরের রিং অফ ফায়ার এলাকায়।


সর্বশেষ সংবাদ