ভূমিকম্প: দেশের ৭টি বিদ্যুৎ কেন্দ্র বন্ধ
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ২১ নভেম্বর ২০২৫, ০৩:০২ PM
শক্তিশালী ভূমিকম্পে দেশের বড় ও ছোট—মোট সাতটি বিদ্যুৎকেন্দ্র এবং একটি গ্রিড সাবস্টেশন ট্রিপ করে বন্ধ হয়ে গেছে। বিদ্যুতের চাহিদা কম থাকায় জাতীয় গ্রিডে বড় ধরনের কোনো প্রভাব না পড়লেও পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে সময় লাগবে বলে বিপিডিবি ও পিজিসিবির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
বিপিডিবির তথ্য অনুযায়ী, ভূমিকম্পের পর বেলা ১১টা ৫০ মিনিট পর্যন্ত সাতটি বিদ্যুৎ কেন্দ্র এবং একটি গ্রিড সাবস্টেশন বন্ধ হয়ে যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে। অন্যান্য কেন্দ্র ও গ্রিডের পরিস্থিতি যাচাই করা হচ্ছে বলে সংস্থাটির দু’জন কর্মকর্তা জানিয়েছেন।
বিপিডিবির পাঠানো বিস্তারিত তথ্যে বলা হয়েছে, ভূমিকম্পের কারণে সামিটের বিবিয়ানা ৩৪১ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ হয়ে গেছে। বিপিডিবির বিবিয়ানা-৩ (৪০০ মেগাওয়াট) কেন্দ্র, আশুগঞ্জের ২২৫ মেগাওয়াট, ৫৫ মেগাওয়াট ও ৫০ মেগাওয়াট ক্ষমতার তিনটি ইউনিট বন্ধ রয়েছে। চট্টগ্রামে এসএস পাওয়ারের ৬০০ ইউনিটের একটি কেন্দ্র এবং সিরাজগঞ্জ ২২৫ মেগাওয়াট কেন্দ্রের ৭৫ মেগাওয়াটের একটি ইউনিটও বন্ধ হয়ে গেছে। এছাড়া ঘোড়াশাল গ্রিড সাবস্টেশনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ২৩০ কেভি, ১৩২ কেভি ও ৩৩ কেভির লাইন বন্ধ হয়ে গেছে।
আরও পড়ুন: ভূমিকম্পে পুরান ঢাকায় বিল্ডিংয়ের রেলিং ভেঙে মেডিকেল শিক্ষার্থীসহ নিহত ৩
সংস্থাটির সূত্র জানায়, বেলা ১১টা ৫০ মিনিট পর্যন্ত একাধিক কেন্দ্র বন্ধ হয়েছে এবং আরও কেন্দ্র বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এসব কেন্দ্র পুনরায় চালু করতে সময় লাগবে। তবে বিদ্যুতের চাহিদা কম থাকায় লোডশেডিংয়ের সম্ভাবনা নেই বলেই মনে করা হচ্ছে।
এর আগে আজ শুক্রবার সকালে তীব্র ভূমিকম্প অনুভূত হওয়ার পর দেশের বিভিন্ন স্থানে বিদ্যুৎ উৎপাদন ও বিতরণে বিঘ্ন ঘটে বলে বিপিডিবি জানিয়েছে। সংস্থাটির পরিচালক (জনসংযোগ) শামীম হাসান বলেন, শক্তিশালী ভূমিকম্পজনিত কারণে দেশের বিভিন্ন বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র ও সরবরাহ ব্যবস্থায় সাময়িক বিঘ্ন সৃষ্টি হয়েছে। উৎপাদন ও সরবরাহ স্বাভাবিক করতে প্রয়োজনীয় কাজ চলছে।
আইএসপিআর থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে জানানো হয়, শুক্রবার (২১ নভেম্বর) সকাল ১০টা ৩৮ মিনিট ২৬ সেকেন্ডে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় রিখটার স্কেলে ৫ দশমিক ৭ মাত্রার ভূমিকম্প অনুভূত হয়। বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্যমতে, ভূমিকম্পটির উৎপত্তিস্থল নরসিংদীর মাধবদী; যা ঢাকার আগারগাঁও সিসমিক সেন্টার থেকে ১৩ কিলোমিটার পূর্বে। এর স্থানাঙ্ক ছিল 23.77°N এবং 90.51°E।
গোপালগঞ্জ, নড়াইল, নারায়ণগঞ্জ, রংপুর, সাতক্ষীরা, নরসিংদী, যশোর, জামালপুর, দিনাজপুর, ঝালকাঠি, কুমিল্লা, রাজশাহী, কুড়িগ্রাম, বাগেরহাট, মাদারীপুর, শেরপুর, সিলেট, ফেনী ও খুলনাসহ বিভিন্ন জেলা থেকেও ভূমিকম্প অনুভূত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
পার্শ্ববর্তী ভারতের পশ্চিমবঙ্গেও ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। এনডিটিভির প্রতিবেদন অনুযায়ী, কলকাতা মহানগরী ও আশপাশের এলাকায় কম্পন অনুভূত হয়। ফ্যান ও দেয়ালে ঝোলানো জিনিসপত্র দুলতে দেখা গেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বহু বাসিন্দা ভূমিকম্পের মুহূর্তের ভিডিও ও ছবি শেয়ার করেছেন, যেখানে মানুষকে বাড়ি ও অফিস থেকে দ্রুত বেরিয়ে আসতে দেখা যায়।