৯ লাখ ফলোয়ারের পেজটিতে বছরে মাত্র একটি পোস্ট হয় 

ঢাবির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজ
ঢাবির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজ  © টিডিসি ফটো

আধুনিক তথ্য ও প্রযুক্তি ব্যবস্থার সঙ্গে যুগের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে ‘University of Dhaka’ নামে ফেসবুকে একটি পেজ ওপেন করা হয়। পেজটিতে বর্তমানে প্রায় ৯ লাখের মতো ফলোয়ার ও চার লাখের মতো লাইক রয়েছে। তবে পেজটি এখন অনেকটাই নিষ্ক্রিয়। কেউ না চালানোয় পেজটি থেকে কোনও আপডেট তথ্য পাওয়া যায় না।

জানা যায়, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের প্রসারের ফলস্বরূপ ২০১৪ সালের শুরুর দিকে ‘University of Dhaka’ নামে ৪৮ টার বেশী ফেসবুক পেজ এবং একটি ভুয়া ভেরিফাইড পেজ ছিল। যেখানে ফলোয়ার ছিল প্রায় চার লাখ। এসব পেজ থেকে বিভিন্ন সময় বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়ানো হতো।

এ অবস্থায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অনলাইন পত্রিকা ডিইউটাইমজের একটি টিম ওই পেজগুলোর বিভিন্ন পোস্টের স্ক্রিনশটসহ তৎকালীন উপাচার্যের কাছে তুলে ধরেন। উপাচার্য ডিইউটাইমজের মডারেটরকে সঙ্গে নিয়ে জরুরি এক বৈঠকে ওই পেজগুলো বন্ধের সিদ্ধান্ত নেন।বিটিআরসির সহযোগিতায় ভুয়া ভেরিফাইড পেজটা বন্ধের ব্যবস্থাও গ্রহণ করে।

ওই সময় শিক্ষার্থীরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম তথা ফেসবুকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজেদের তথ্য প্রকাশের সুযোগ থাকা দরকার উল্লেখ করে পোস্ট করতে থাকেন। সে সময় উপাচার্য ডিইউটাইমজের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট শিক্ষার্থীদের দায়িত্ব দিয়েছিলেন ফেসবুক পেজ খোলার জন্য। 

ফলাফলস্বরূপ, ২০১৪ সালের নভেম্বর মাসে ‘University of Dhaka’ নামের পেজটির যাত্রা শুরু হয়। তবে দীর্ঘদিন ধরে সেটি নিষ্ক্রিয়। সর্বশেষ পোস্ট ছিল শতবর্ষ নিয়ে। যা ২০২১ সালে অক্টোবর মাসে দেওয়া হয়েছিল। এরপর আর কোনো আপডেট পোস্ট পাওয়া যায়নি। এর আগের পোস্টটি করা হয় ২০১৯ সালের আগস্ট মাসে। এরও আগের পোস্টটি ছিল ২০১৮ সালের অক্টোবর মাসে। অর্থাৎ চার বছরে মাত্র তিনটি পোস্ট দেওয়া হয়েছে।

অথচ পেজটি যাত্রার শুরুর দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নানান তথ্যের আপডেট দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু এর কোনোটিই দেখা যায়নি। পেজটি অ্যাকটিভ না থাকায় শিক্ষার্থীরা ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে।

শাহরিয়ার নামে এক শিক্ষার্থী বলেন, তথ্যপ্রযুক্তির যুগে সবাই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম তথা ফেসবুকে কানেক্টেড আছে। সেক্ষেত্রে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের যে অফিশিয়াল ফেসবুক পেজটা আছে, সেটা সফলভাবে পরিচালিত করতে পারলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা নানান প্রাতিষ্ঠানিক আপডেট পেয়ে উপকৃত হতে পারতো।

আরেক শিক্ষার্থী জসিম উদ্দিন বলেন, সবাই যেহেতু অনলাইন নির্ভর, সেহেতু ঢাবির ফেসবুক পেজ আপডেট রাখা উচিত। বর্তমানে তাদের কর্মকাণ্ড নিয়ে সমালোচনা শুরু হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো প্রতিষ্ঠানের কাছে কেউ আশা করে না। যেখানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় নিয়মিত তথ্যের আপডেট দেবে, সেই জায়গাটা আমরা পাই না। সেক্ষেত্রে বলব, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যেন আমাদের সঠিক সেবাটা দেয়।

আরো পড়ুন: ঢাবি-রাবি কখনই ‘প্রাচ্যের অক্সফোর্ড’ ‘প্রাচ্যের কেমব্রিজ’ ছিল না

এদিকে পেজটি চালানোর কোনও সুনির্দিষ্ট কর্তৃপক্ষও পাওয়া যায়নি। বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তরের পরিচালক মাহমুদ হাসান দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, পেজটি জনসংযোগ বিভাগ থেকে চালানো হয় না। এটি আইসিটি সেল দেখভাল করে। তারাই এ বিষেয়ে ভালো বলতে পারবে।

জানতে চাইলে আইসিটি সেলের পরিচালক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আসিফ হোসেন খান দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, পেজটি এখন চালানো হয় না। আইসিটি সেলের একটি পেজ থেকে পোস্ট করা হয়। এ ছাড়া ওয়েবসাইটে সব তথ্য আপডেট করা হয়। পেজটি চালানোর ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের শীর্ষ পর্যায় থেকে সিদ্ধান্ত নিতে পারে।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মোহাম্মদ আখতারুজ্জামান দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, এখন আমাদের কোনও ফেসবুক পেজ নেই। কেউ কোনও বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়ালে আইসিটি সেল ধরে ফেলবে।


সর্বশেষ সংবাদ