চবির ডাইনিংয়ের পানি স্বাস্থ্যঝুঁকি মুক্ত: গবেষণা

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়  © ফাইল ছবি

ভৌত ও রাসায়নিক প্যারামিটারে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) ডাইনিংয়ে পরিবেশিত পানি স্বাস্থ্যঝুঁকিমুক্ত বলে উঠে এসেছে একটি গবেষণায়। তবে পানির গুণাগুণ সঠিক রাখতে নিয়মিত মনিটরিং নিশ্চিত করার কথা বলছেন গবেষক। ভৌত ও রাসায়নিক প্যারামিটার, জিওকেমিক্যাল, ট্রেস মেটালের উপস্থিতি এবং স্বাস্থ্যঝুঁকি পরীক্ষা করা হয়েছে গবেষণায়। এতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্ধারিত সীমানার সামান্য কমবেশি রয়েছে। তবে এটি মারাত্মক কোনো ঝুঁকির কারণ নয়। 

চবি গবেষণা পরিচালনা ও প্রকাশনার দপ্তরের অর্থায়নে পরিচালিত গবেষণাটি ২০২১ সালে মালয়েশিয়া জার্নাল অব কেমিস্ট্রিতে প্রকাশিত হয়েছে।

এই গবেষণা প্রকল্পের প্রধান ছিলেন চবি ফলিত রসায়ন ও কেমিকৌশল বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. সুমন গাঙ্গুলী। সহযোগী গবেষক হিসেবে ছিলেন একই বিভাগের গবেষক মো. আক্তার হোসেন রিফাত, সাব্বির হাওলাদার, মো. আরিফুল ইসলাম,  সহযোগী অধ্যাপক মো. নজরুল ইসলাম এবং ড. আয়েশা আফরিন, মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের শিক্ষক ড. ফেরদৌস আলী, ভূগোল ও পরিবেশবিদ্যা বিভাগের শিক্ষক ড. শহিদুল ইসলাম।

এতে ক্যাম্পাসের ১২টি স্টেশন থেকে পানির নমুনা সংগ্রহ করা হয়। যা বিভিন্ন হলের ডাইনিং, কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং শিক্ষকদের আবাসিক এলাকার ট্যাব থেকে নেওয়া। তন্মধ্যে গ্রীষ্মকালে দু’টি স্টেশনে কলিফর্ম ব্যাকটেরিয়া পাওয়া গেছে। যদিও এই পানি প্রায় ৫০০ মিটার গভীর নলকূপ থেকে উঠানো হয়।

আরও পড়ুন: ঢাবির পরিবহন সেবায় সন্তুষ্ট অর্ধেক শিক্ষার্থী: গবেষণা

ভৌত ও রাসায়নিক প্যারামিটারের মধ্যে ‘পিএইচ’ মান ৬ দশমিক ৭ পাওয়া গেছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্ধারিত মান অনুযায়ী আয়রনের উপস্থিতি কিছুটা বেশি পাওয়া গেছে। প্রতি লিটারে সর্বোচ্চ ১ মিলিগ্রাম আয়রন থাকলে তা ত্রুটিমুক্ত। সংগৃহীত এ পানিতে গড়ে ১.১৪ মিলিগ্রাম আয়রন রয়েছে। তবে অন্যান্য সব প্যারামিটার এর মান সঠিক মাত্রায় রয়েছে বলে গবেষণাপত্রে উঠে এসেছে।

গবেষক ড. সুমন গাঙ্গুলী'র মতে, আয়রনের এই অধিক উপস্থিতিতে পানির স্বাদ মেটালিক এবং স্কিনে সামান্য সমস্যা দেখা যেতেও পারে। তবে স্বাস্থ্যঝুঁকি বিশ্লষণে বলা যায় এই পানি ৭০ বছর ধরে পান করলেও প্রাপ্তবয়স্ক কিংবা শিশুদের ক্যান্সার বা ননক্যান্সার ডিজিস হওয়ার সম্ভাবনা নেই। তাই আমরা বলতে পারি এই পানি স্বাস্থ্যঝুঁকিমুক্ত।

ওয়াটার কোয়ালিটি ইনডেক্স অনুযায়ী পানির কোয়ালিটি পাঁচ ক্যাটাগরিতে বিভক্ত। তা হচ্ছে এক্সিলেন্ট, গুড, পুওর, ভেরি পুওর এবং আনসুইটেবল। গবেষণায় ১২টি স্টেশন থেকে সংগৃহীত পানির ৯২ শতাংশ এক্সিলেন্ট থেকে গুড ক্যাটাগরিতে পাওয়া গেছে। বাকি ৮ শতাংশ পুওর ক্যাটাগরিতে দেখা গিয়েছে। 

‘পিএইচ’ মান সামান্য কম এবং আয়রনের মাত্রা বেশি থাকায় ৮ শতাংশ পানি পুওর ক্যাটাগরিতে প্রতীয়মান হয়।  তবে এটি মারাত্মক কোনো সমস্যা নয় বলছেন ড. সুমন গাঙ্গুলী।

শীতকাল এবং গ্রীষ্মকালে আয়রনের মাত্রার তারতম্য এই গবেষণার লক্ষণীয় বিষয়। গ্রীষ্মকালে প্রতি লিটারে শূন্য দশমিক ৯৭ থেকে ১ দশমিক ৮৭ মিলিগ্রাম এবং শীতকালে দশমিক ৭১ থেকে ১ দশমিক ৬৫ মিলিগ্রাম আয়রন পাওয়া গেছে। এছাড়াও শুধুমাত্র গরমকালে দু'টি স্টেশনে কলিফর্ম ব্যাকটেরিয়া পাওয়া গেছে। এই ব্যাকটেরিয়া পেটের প্রদাহের জন্য দায়ী।

এবিষয়ে ড. গাঙ্গুলী দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, কলিফর্ম ব্যাকটেরিয়া সাধারণত মলে থাকে। এর উপস্থিতি শূন্যে থাকতে হবে। গরমকালে অতিরিক্ত তাপমাত্রায় ব্যাকটেরিয়া জন্ম হওয়ায় অথবা পাইপলাইনের কোনো ছিদ্র থাকায় এই ব্যাকটেরিয়া এসে থাকতে পারে। তাই নিয়মিত পাইপলাইন মনিটরিং করার জন্য আমরা কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করছি যাতে পানির বিশুদ্ধতা রক্ষা করা যায়।  

তিনি আরও বলেন, পানির ট্যাঙ্কে ময়লা থাকলেও ব্যাকটেরিয়া জন্ম নিতে পারে। তখন পানি স্বাস্ব্যঝুঁকিমুক্ত থাকবে না। তাই সংরক্ষণের ব্যবস্থাগুলো নিয়মিত পরিষ্কার রাখতে হবে৷ এজন্য প্রশাসনে সংশ্লিষ্টদের প্রতি নিয়মিত মনিটরিং করার সুপারিশ এবং অনুরোধ থাকবে। এতে করে পানির মান ঠিক থাকতে পারে।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence