নথি জালিয়াতিতে ফাঁসছেন নর্থ সাউথের ট্রাস্টি সদস্য ও ছাত্রলীগ নেতাসহ ৮
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ২৫ এপ্রিল ২০২২, ০৯:০৯ PM , আপডেট: ২৫ এপ্রিল ২০২২, ০৯:০৯ PM
নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির ট্রেজারার পদে নিয়োগে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নথি জালিয়াতি করার অভিযোগে ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য মো. শাহজাহান ও ছাত্রলীগ নেতাসহ আটজনের বিরুদ্ধে মামলার চার্জশিট অনুমোদন দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
আজ সোমবার (২৫ এপ্রিল) দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে চার্জশিটটি অনুমোদন দেওয়া হয়। শিগগিরই সংস্থাটির উপ-পরিচালক মো. ফরিদ আহমেদ পাটোয়ারী আদালতে চার্জশিট দাখিল করবেন বলে জানা গেছে। দুদকের ঊর্ধ্বতন একটি সূত্র ঢাকা পোস্টকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
অভিযুক্তরা হলেন, নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি মো. শাহজাহান, ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত সহ-সভাপতি তরিকুল ইসলাম মুমিন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় সাবেক ব্যক্তিগত কর্মকর্তা মো. নাজিম উদ্দিন, ডেসপাচ রাইডার মো. রুবেল, এয়ার কমোডর (অবসরপ্রাপ্ত) এম আব্দুস সামাদ আজাদ, ছাত্রলীগ নেতা মো. ফরহাদ হোসেন ওরফে মোরশেদ আলম ওরফে মিকি এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে সাবেক অফিস সহায়ক ফাতেমা খাতুন ও তার ছেলে রবিউল আওয়াল।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, ২০২০ সালে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে কোষাধ্যক্ষ পদে নিয়োগের জন্য ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এম এনামুল হক, বুয়েটের প্রকৌশল বিভাগের অধ্যাপক মো. আব্দুর রউফ এবং বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালসের সাবেক কোষাধ্যক্ষ অবসরপ্রাপ্ত এয়ার কমোডর এম আবদুস সালাম আজাদের নাম প্রস্তাব করে শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে একটি সার সংক্ষেপ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠানো হয়।
সেই সংক্ষেপের নথি প্রধানমন্ত্রীর সামনে উপস্থাপন করার পর তিনি অধ্যাপক ড. এম এনামুল হকের নামের পাশে টিক চিহ্ন দেন। পরে চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য নথিটি রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠানোর প্রস্তুতির আগে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অফিস সহায়ক ফাতেমা খাতুনের কাছে যায়। সে সময় এম আবদুস সালাম আজাদ অনুমোদন পাননি বলে ছাত্রলীগ নেতা তরিকুলকে জানান ফাতেমা।
২০২০ সালের ১ মার্চ নথিটি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে কৌশলে বের করে আসামিরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার (ড. এমদাদুল হকের নামের পাশে) ‘টিক চিহ্ন’ কলম দিয়ে টেম্পারিং করে সেখানে ক্রস চিহ্ন দেন। আর প্রফেসর মো. আবদুর রউফের নামের পাশে ক্রস চিহ্ন এবং এয়ার কমোডর (অব.) এম আবদুস সামাদ আজাদের নামের পাশে ‘টিক চিহ্ন’ দেওয়া হয়।
অতি গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্রীয় নথি জালিয়াতি করার অপরাধে আসামিদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৪২০/ ৪৬৭/ ৪৬৮/ ৪৭১/ ১০৯/ ১১৪/ ১৬১/ ১৬৫ ক ধারা এবং ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫ (২) ধারায় চার্জশিট দাখিলের জন্য অনুমোদন দেওয়া হয়।
২০২০ সালের ৫ মে প্রধানমন্ত্রীর প্রদত্ত ‘টিক চিহ্ন’ জাল বা টেম্পারিং করা এবং তা সঠিক বলে ব্যবহার করার অভিযোগে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পরিচালক মোহাম্মদ রফিকুল আলম বাদী হয়ে রাজধানীর তেজগাঁও থানায় মামলাটি দায়ের করেন। এ মামলায় প্রথমে ছয়জনকে আসামি করা হয়।
মামলার তদন্ত শেষে ২০২০ সারের ১১ জুলাই আদালতে এ মামলার চার্জশিট দেয় পুলিশ। পরে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট এ চার্জশিট গ্রহণ করে পলাতক আবদুস সামাদ আজাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। এরপর ৪ অক্টোবর তদন্ত কর্মকর্তা তেজগাঁও থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোহাম্মদ কামাল উদ্দিন মামলাটি অধিকতর তদন্তের আবেদন করেন। পরবর্তী আদেশে তা দুদকের কাছে হস্তান্তর করা হয়।