ঢাবি ছাত্রকে মারধর, টাকা দিয়ে আপস করলো নগর পরিবহন

নগর পরবিহন ও ঢাবি লোগো
নগর পরবিহন ও ঢাবি লোগো  © সংগৃহীত

টিকিট কাটা নিয়ে তর্কের জেরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) এক ছাত্রকে মারধর করার পর শাহবাগ মোড়ে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর সহপাঠীরা ওই পরিবহন কোম্পানির কয়েকটি বাস ভাঙচুর করে আটকে রাখে। এরপর বাস কোম্পানিটি টাকা দিয়ে ওই শিক্ষার্থীর সঙ্গে আপস করে।

আজ সোমবার (৭ মার্চ) ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীকে কিছু টাকা ক্ষতিপূরণ হিসেবে দিয়ে তার সঙ্গে আপস করেছে ঢাকা নগর পরিবহন নামক বাস কোম্পানিটি।

গতকাল রবিবার (৬ মার্চ) বিকেলে রাজধানীর শনির আখড়া থেকে নগর পরিবহনের একটি বাসে করে আসার সময় তাড়াহুড়ায় টিকিট কাটতে ভুলে গিয়েছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র আজমান সামীর। এ নিয়ে তর্কের জেরে বাসটির চালক তাকে গালাগাল করেন। পরে চালকের পক্ষে অজ্ঞাত এক ব্যক্তি সামীরকে গালাগাল ও মারধর করেন, এমনকি হত্যার হুমকিও দেন। তবে কৌশলে ওই বাসটি পালিয়ে যায়।

এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ আজমান সামীরের বঙ্গবন্ধু হলের সহপাঠীসহ শিক্ষার্থীদের একটি অংশ গতকাল সন্ধ্যার দিকে শাহবাগ এলাকায় নগর পরিবহনের তিনটি বাস ভাঙচুর করেন। একপর্যায়ে বাসগুলো আটক করে শাহবাগের জাতীয় গণগ্রন্থাগারের সামনে নিয়ে রাখেন তারা। আজমান তখন মামলা করার কথা বললেও পরে আর মামলা করেননি। ঘটনার মীমাংসা করতে গতকাল রাতে শাহবাগে যান নগর পরিবহন কর্তৃপক্ষের কয়েকজন ব্যক্তি। সেখানে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার শর্তে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বিষয়টির মীমাংসা করেন তারা।

আরও পড়ুন: ৭ মার্চের ভাষণেই নিরস্ত্র বাঙালি স্বাধীনতার স্বপ্ন বুনেছিল: অধ্যক্ষ সেলিম

আজমান সামীর জানান, নগর পরিবহন কর্তৃপক্ষ তাকে কিছু টাকা ক্ষতিপূরণ হিসেবে দিয়েছে। ঘটনাটির সমাধান হয়েছে। তাই তিনি আর মামলা করেননি। তবে ক্ষতিপূরণের অঙ্কটি তিনি বলতে চাননি।

ক্ষতিপূরণের মাধ্যমে দুই পক্ষের সমঝোতায় আসার বিষয়টি শুনেছেন বলে জানিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ কে এম গোলাম রব্বানী।

তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, আমাদের শিক্ষার্থীকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছনার অভিযোগ এসেছিল। আমরা আইনগত পদক্ষেপের কথা বলেছিলাম। বিনা অপরাধে আঘাত করা হয়ে থাকলে আমরা শক্ত অবস্থান নেওয়ার কথা বলেছিলাম। দুই পক্ষের মধ্যে সমঝোতায় সমাধানের বিষয়টি শুনেছি। দুই পক্ষের কোনো অভিযোগ না থাকলে আমরা বিষয়টিকে আর বড় করতে চাই না। দুই পক্ষেরই আইনগত প্রক্রিয়ায় সম্মান ও সন্তোষজনক সমাধানে আসার সুযোগ আছে। এতে বিশ্ববিদ্যালয় কারও পক্ষে বা বিপক্ষে অবস্থান নেবে না।

প্রক্টর আরও বলেন, আমাদের শিক্ষার্থীদের কাছেও অনুরোধ থাকবে, কোথাও কোনো অপরাধ সংঘটিত হলে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগিতা নেবে, অন্যদিকে আইনি পর্যায়ে হলে আইনের সহযোগিতা নেব। কিন্তু বাস ধরে আনা, নির্বিচারে ভাঙচুর করা—এই অবস্থান থেকে আমাদের আরেকটু দায়িত্বশীল আচরণ করা উচিত।

ওই ঘটনায় দুই পক্ষের কেউই থানায় অভিযোগ করেননি বলে জানিয়েছেন শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মওদুত হাওলাদার। তিনি জানান, ঘটনাটি শুনেছিলাম। কিন্তু পরে কেউই আর অভিযোগ করেননি। নিজেরাই আলোচনা করে বিষয়টির সমাধান করে নিয়েছেন।


সর্বশেষ সংবাদ