'করোনাকালে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ঠিকাদারদের রাজত্ব তৈরি হয়েছে'

জাবিতে অবস্থান কর্মসূচি
জাবিতে অবস্থান কর্মসূচি  © টিডিসি ফটো

করোনাকালে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ঠিকাদারদের প্রশ্নাতীত রাজত্ব তৈরি হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষক ও বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ।

বুধবার (২৬ জানুয়ারি) শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সমর্থনে জাবির শহিদ মিনারের পাদদেশে আয়োজিত এক অবস্থান কর্মসূচিতে এ মন্তব্য করেন তিনি।

তিনি বলেন, করোনার কারণে প্রায় দুই বছর ধরে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বন্ধ ছিলো। কিন্তু এসময়ে যাদের প্রশ্নাতীত রাজত্ব তৈরি হয়েছে তারা হলেন ঠিকাদার, কনস্ট্রাকশন কাজের সাথে জড়িত ব্যবসায়ী ও প্রজেক্টগুলোর কমিশনভোগী ও এখান থেকে যারা চাঁদা গ্রহণ করেন। তারাই বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে নিয়ন্ত্রণ করেন।

আরো পড়ুনঃ রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে ‘ব্যালেরিনা’, ফেসবুকে ভাইরাল কে এই তরুণী?

তিনি আরো বলেন, এই কাজগুলো যারা প্রশ্রয় দেন পৃষ্ঠপোষকতা করতে পারেন তাদের মধ্যে থেকেই উপাচার্য নিয়োগ দেওয়া হয়। তাঁদের মেয়াদ বৃদ্ধি করা হয়, দরকার পড়লে নিয়ম ভেঙে মেয়াদ বৃদ্ধি করা হয় । আর এই উপাচার্যদের দায়িত্ব হয় নিজের অনুগত শিক্ষক বাহিনী তৈরি করা। এর বিরুদ্ধে যাতে কোন কথা না হয় এজন্য রাষ্ট্র এমন একটা আবহ তৈরি করেছে হলগুলোতে শিক্ষার্থীরা কোন কথা বলবে না, বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকরা কোন কথা বলবে না।

আবাসিক হলের ডাইনিং এর খাবারের মান বৃদ্ধির প্রসঙ্গে এ শিক্ষাবিদ বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর আবাসিক হলের ডাইনিং এর খাবারের পুষ্টিমান অত্যন্ত কম। এটা শুধু শাবিপ্রবির চিত্র না, সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর একই অবস্থা। এমনকি গবেষণায় দেখা গেছে জাহাঙ্গীরনগরের ডাইনিং এর যে খাবারের মান তা চরম দারিদ্র্যসীমার নিচে। কিন্তু সবজায়গায় বরাদ্দ থাকলেও এখানে বরাদ্দ নেই।

এসময় তিনি ইউজিসিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যরা কতটা শিক্ষার পক্ষে ও কতটা শিক্ষার বিপক্ষে কাজ করেছেন তা খতিয়ে দেখতে আহ্বান জানান।

বেলা সাড়ে ১১টায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনারের পাদদেশে এ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। দুপুর ১টায় পর্যন্ত চলা এ অবস্থান কর্মসূচিতে অংশ নেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বামপন্থী শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা।

কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে নৃবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক সাঈদ ফেরদৌস বলেন, “একটা সময় ছিলো, যখন ক্যাম্পাসে পুলিশ ঢুকতো তখন উপার্যরা সরকারকে জানাতো পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে যখন-তখন পুলিশ ঢুকতে পারে না। কিন্তু বর্তমানে দেখা যায়, উপার্যকে রক্ষা করার জন্য পুলিশ এবং সরকারের পেটোয়া বাহিনী ছাত্রলীগ সবার আগে থাকে। এতকিছুর পরও শাবির শিক্ষার্থীরা আন্দোলন জারি রাখতে পেরেছে এটাই সফলতা।”

বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক আনোয়ারুল্লাহ ভূঁইয়া বলেন, “শাবির উপাচার্যকে টিকিয়ে রাখার জন্য শিক্ষামন্ত্রী বিভিন্নভাবে চেষ্টা করছেন, অথচ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষার মান, গবেষণা কীভাবে আন্তর্জাতিক মানের করা যায় সে ব্যাপারে বর্তমান শিক্ষামন্ত্রীকে কখনও কিছু বলতে শোনা যায়নি। প্রত্যেকটা বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বৈরতন্ত্র, দুর্বৃত্তায়ন, দুর্নীতি চলছে। সে ব্যাপারে শিক্ষামন্ত্রী কোনও পদক্ষেপ নেননি।”

শাবি শিক্ষার্থীদের লড়াকু মানসিকতার জয়ের জন্য প্রয়োজনে প্রতিরোধ গড়ে তোলা হবে বলে জানান তিনি।

কর্মসূচিতে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন নৃবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মাহমুদুল হাসান সুমন, অধ্যাপক মির্জা তাসলিমা সুলতানা, নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক জীবন খন্দকার, অর্থনীতি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক শরমিন্দ নীলোর্মি প্রমুখ।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence