জাবিতে অক্সিজেনের অভাবে কর্মচারীর মৃত্যু

মৃত কর্মচারীর নাম শ্রী রামু
মৃত কর্মচারীর নাম শ্রী রামু  © ছবি : সংগৃহীত

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে অসুস্থ হয়ে অক্সিজেনের অভাবে এক কর্মচারীর মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি করেছে স্বজনরা। মৃত কর্মচারীর নাম শ্রী রামু (৫৫)। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের আ ফ ম কামালউদ্দিন হলের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী ছিলেন। মঙ্গলবার (১২ অক্টোবর) দুপুরে তার মৃত্যু হয় বলে নিশ্চিত করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসাকেন্দ্রের চিকিৎসক মাসুদুর রহমান।

মাসুদুর রহমান বলেন, ‘চিকিৎসাকেন্দ্রে পৌঁছানোর আগেই তার মৃত্যু হয়। তারা মেডিকেলের অক্সিজেন চেয়েছিল কিন্তু মেডিকেল থেকে রোগীকে হাসপাতালে আনার জন্য বলা হয়। কিন্তু হাসপাতালে আনার পর দেখি তার আগেই মৃত্যু হয়েছে।’

এদিকে মৃত্যু রামুর আত্মীয়দের দাবি, চিকিৎসা এবং অক্সিজেনের অভাবে তার মৃত্যু হয়েছে। বারবার অক্সিজেন সিলিন্ডার চাওয়ার পরেও অক্সিজেন সরবরাহ করেনি মেডিকেল কর্তৃপক্ষ।

রামুর জামাতা সুশীল চন্দ্র বলেন, ‘আমরা বারবার অক্সিজেন সিলিন্ডার চেয়েছি। কিন্তু মেডিকেল থেকে বলা হয় বাসায় অক্সিজেন দেওয়া যাবে না হাসপাতালেই আনতে হবে। কিন্তু রোগীকে হাসপাতালে আনার মতো পরিস্থিতি ছিল না। অক্সিজেন সাপোর্ট পেলে হয়তো তিনি বেঁচে যেতেন।’

কর্তব্যরত চিকিৎসক শ্যামল কুমার শীল বলেন, ‘রামুর আত্মীয়রা মেডিকেলে একটা অক্সিজেন সিলিন্ডার চেয়েছিল। রোগীর অবস্থা গুরুতর ছিল। আমি তখন সাথে সাথে প্রধান চিকিৎসা কর্মকর্তা শামছুর রহমানকে জানাই। কিন্তু তিনি আমাকে বলেন, করোনা পরিস্থিতিতে সিলিন্ডার বাইরে দেওয়া যাবে না। তার অনুমতি না থাকায় আমি সিলিন্ডার দিতে পারিনি।’

এদিকে রামুর মৃত্যুর পরেই মেডিকেল অবস্থান নেন চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীরা। এ সময় তারা মেডিকেলের অসহযোগিতার কথা তুলে ধরে নানা স্লোগান দিতে থাকেন। এছাড়া তারা কাজ বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দেন।

এ সময় সেখানে উপস্থিত হন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর আ স ম ফিরোজ উল হাসান, কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক যুগল কৃষ্ণ দাস ও প্রাণরসায়ান ও অনুপ্রাণবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক সোহেল আহমেদ।

এ সময় অধ্যাপক যুগল কৃষ্ণ দাস বলেন, ‘উপাচার্যের সাথে কথা হয়েছে যিনি মারা গেছেন, তিনি তো আর ফিরে আসবেন না; তবে তার ছেলেকে চাকরির ব্যবস্থা করে দেওয়া হবে। এছাড়া যে অবহেলার কথা বলা হচ্ছে সেটাও দেখা হবে।’  

চিকিৎসাকেন্দ্রের প্রধান চিকিৎসা কর্মকর্তা শামছুর রহমান বলেন, ‘চিকিৎসাকেন্দ্রে তারা এসেছিলে অক্সিজেন সিলিন্ডার নিতে। কিন্তু আমাদের নিয়ম না থাকায় দিতে পারিনি। কর্তব্যরত ডাক্তার তাদের বলেছিল রোগীকে হাসপাতালে আনার জন্য কিন্তু তারা আনেনি। যখন এনেছে তখন তিনি মারা গেছেন।’


সর্বশেষ সংবাদ