হলে ফিরে উচ্ছ্বসিত জাবি শিক্ষার্থীরা

শিক্ষার্থীদের ফুল দিয়ে বরণ করে নিচ্ছেন শিক্ষকরা
শিক্ষার্থীদের ফুল দিয়ে বরণ করে নিচ্ছেন শিক্ষকরা  © টিডিসি ফটো

সাথে ব্যাগ, বস্তা আর বইপত্র নিয়ে হলের সামনে আসছেন শিক্ষার্থীরা। প্রায় ১৮ মাস আগেও একবার এভাবে হলের সামনে জড়ো হয়েছিল তারা। তবে তা ছিল হল বন্ধের ঘোষণায় বাড়ি ফেরার লক্ষ্যে। সেবার চেহারায় একরাশ চিন্তার ছাপ থাকলেও এবারে তা উচ্ছ্বাস আর আনন্দে ভরপুর। করোনা মহামারীতে প্রায় দীর্ঘ দেড় বছর বন্ধ থাকার পর হল খোলার দিনে এমন চিত্রই দেখা গেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মাঝে। 

অন্যদিকে হল খোলা উপলক্ষে শিক্ষার্থীদের বরণে সব প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছিল হল কর্তৃপক্ষ। তাই তারা হলে প্রবেশ করতেই ফুল, মাস্ক আর সকালের নাস্তা দিয়ে স্বাগত জানান তারা। হলে ফিরে পরিচিত সবার সাথে আবার সশরীরে দেখা হওয়ায় আনন্দিত শিক্ষক-শিক্ষার্থী উভয়ই।  

‘সব প্রতিবন্ধকতা কাটিয়ে অবশেষে চিরচেনা আবাসিক হলে ফিরে যেন প্রাণ ফিরে পেয়েছি’, বলছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৫তম আবর্তনের আইন ও বিচার বিচার বিভাগের শিক্ষার্থী নৌরিন নাহার অরিন। তিনি বলেন, মাস্টার্সের শিক্ষার্থী হওয়ায় আর অল্প কিছুদিন হলে আছি। তাই হলে ওঠার এ সুযোগ হারাতে চাইনি। আর হল এভাবে আমাদের বরণ করে নেবে তা ভাবিনি। দীর্ঘদিন পরে এভাবে হলে ফিরতে পেরে প্রথম বর্ষের মতো অনুভুতি হচ্ছে।

New Project (9)
হলে প্রবেশ করছেন ছাত্রীরা

শিক্ষার্থীদের হলে ফেরার এমন দৃশ্য দেখা গেছে ছেলেদের হলগুলোতেও। সকাল থেকেই ছেলেদের আটটি হলের সামনে ভীড় করে ছাত্ররা। এরপর টিকা কার্ড ও পরিচয়পত্র দেখিয়ে হলে প্রবেশ করে তারা।  

শহীদ রফিক-জব্বার হলের আবাসিক শিক্ষার্থী রাসেল আলী বলেন, ২০২০ এর মার্চে যখন বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ হয়ে যায়, তখন মনে করেছিলাম হয়তো ক’দিন পরই আবার ফিরবো। কিন্তু ফেরা হয়নি। অবশেষে দীর্ঘ আঠারো মাস পর হল খুলতেছে। তাই এটা এক অন্যরকম অনুভূতি।

New Project (4)
ছেলেদের হলেও ছিল উৎসবমুখর আমেজ

শিক্ষার্থীদের এমন উচ্ছ্বাসে আনন্দিত শিক্ষকরাও। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভোস্ট কমিটির সভাপতি অধ্যাপক মোহা. মুজিবুর রহমান বলেন, শিক্ষার্থীদের এভাবে খুশি মনে হলে ফিরতে দেখে আমার আনন্দ লাগছে। এখন তাদের নিরাপত্তাই প্রধান গুরুত্ব পাবে।

বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুননেছা মুজিব হলের এই প্রভোস্ট বলেন, সকাল ৭টা থেকেই আমার হলে আসতে শুরু করে শিক্ষার্থীরা। অন্যান্য হলেও একই অবস্থা। আমরা তাদেরকে গোলাপ ফুল, ৩টি করে মাস্ক, হ্যান্ড স্যানিটাইজার, সকালের নাস্তা দিয়ে বরণ করে নিচ্ছি।

New Project (3)
খুলে দেওয়া হয়েছে ক্যাফেটেরিয়া

যারা টিকা পায়নি তাদেরকে টিকার ফর্ম দিচ্ছেন জানিয়ে তিনি বলেন, টিকা না পাওয়া শিক্ষার্থীরা এটা (ফর্ম) পূরণ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের টিকার বুথ থেকে টিকা নিয়ে তারপর হলে আসবে।

তবে ‘চেষ্টা’ থাকা সত্ত্বেও গণরুম ব্যবস্থা সম্পূর্ণ বাদ দিতে পারেনি জাবি প্রশাসন। তবে তাদের দাবি, এই গণরুম আগের মত হবে না, বরং ‘বেটার’ গণরুম হবে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে অল্প সংখ্যক শিক্ষার্থীকে রাখা হবে সেখানে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা বিভাগ থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৬টি আবাসিক হলে আসন রয়েছে ৮ হাজার ২৭৮টি। এর বিপরীতে মোট শিক্ষার্থী ১২ হাজার ৯২১ জন। ফলে অংকের হিসাবে ৪ হাজারের বেশি আসন সংকট নিয়ে খুলতে যাচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ের হল।


সর্বশেষ সংবাদ