চবির প্রশাসনিক ভবনে ‘নিয়োগ বাণিজ্যের জমিদার ভবন’ লিখলেন শিক্ষার্থীরা, ছবি তোলায় হুমকির অভিযোগ

চবির প্রশাসনিক ভবনের নামফলক মুছে ‘নিয়োগ বাণিজ্যের জমিদার ভবন’ লিখে দিয়েছে কয়েকজন শিক্ষার্থী
চবির প্রশাসনিক ভবনের নামফলক মুছে ‘নিয়োগ বাণিজ্যের জমিদার ভবন’ লিখে দিয়েছে কয়েকজন শিক্ষার্থী  © টিডিসি ফটো

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) প্রশাসনিক ভবনের নামফলক মুছে ‘নিয়োগ বাণিজ্যের জমিদার ভবন’ লিখে দিয়েছে কয়েকজন শিক্ষার্থী। এ সময় ভবনের দেয়ালে পরিবর্তিত নামের ছবি তুলতে গেলে উপাচার্য অধ্যাপক ড. ইয়াহইয়া আক্তার দুই ছাত্রীকে থামিয়ে তাদের ব্যক্তিগত আইডি কার্ড নেওয়ার পাশাপাশি পরিবারের লোকজনকে ডেকে আনার হুমকি দিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। 

শনিবার (৬ সেপ্টেম্বর) বিকেলে ‘অধিকার সচেতন শিক্ষার্থীবৃন্দ’র উদ্যোগে প্রশাসনিক ভবনের নাম লাল রঙে কেটে ‘নিয়োগ বাণিজ্যের জমিদার ভবন’ লিখে দেয়ার ঘটনাকে ঘিরে এ ঘটনা ঘটে। এ নাম লেখার সময় কোথায় নিয়োগ বাণিজ্য হয়েছে প্রমাণ চাইলে সেখানে উপস্থিত কোনো শিক্ষার্থী তা দিতে পারেননি। এ নিয়ে তাদের সহকারী প্রক্টর নুরুল হামিদের সঙ্গে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হয়। শিক্ষকের সাথে এমন আচরণের প্রতিবাদে আজ রবিবার দুপুরে প্রতিবাদ সমাবেশ ডেকেছেন ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থীরা।

উপাচার্যের হুমকির অভিযোগ তুলে এক নারী শিক্ষার্থী বলেন, ‘আমি শুধু লেখা দেখে ছবি তুলছিলাম। উপাচার্য আমার আইডি কার্ড নিয়ে বলেন, তোমাদের পরিবারকে ডাকব। অথচ আমি কিছুই লিখিনি। তিনি বলেন, দাঁড়িয়ে দেখা মানেই সমান অপরাধী। আমার পরিবার তো ৪০০ কিলোমিটার দূরে থাকে তাদের ডেকে কি করবেন জানতে চাইলে বলেন, তাদের এমনভাবে আপ্যায়ন করব, চা খাওয়াব, যাতে তারা খুশি হয়ে যাবেন। কিন্তু আমার কাছে এটি হুমকি ছাড়া আর কিছু মনে হয়নি।’

আরেক ছাত্রী বলেন, ‘আমরা কেবল ছবি তুলছিলাম, তখন আমাদের ডেকে জিজ্ঞেস করা হয়, আমরা লেখাটি করেছি কিনা। অস্বীকার করলে আইডি কার্ড নিয়ে ছবি তোলা হয়। পরে চাপের মুখে ফেরত দেওয়া হলেও রেজিস্ট্রার বলেন, ছবি পেতে সময় লাগবে না।’
এ বিষয়ে উপাচার্য বলেন, ‘আইডি কার্ড শিক্ষার্থীর পরিচয়, সেটি নেয়ার অধিকার আমার রয়েছে। যদি নিয়োগ বাণিজ্যের প্রমাণ দিতে না পারো, তবে অভিভাবককে ডাকব। এখানে হুমকি দেওয়ার তো কিছু নেই।’

ভবনের নাম পরিবর্তনের সময় উপস্থিত ছিলেন শাখা গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিলের সংগঠক ধ্রুব বড়ুয়া, নারী অঙ্গনের সংগঠক সুমাইয়া শিকদার, শাখা বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর সভাপতি জশদ জাকির, বিপ্লবী ছাত্র যুব আন্দোলনের সংগঠক ঈশা দে, বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সুদর্শন চাকমা প্রমুখ।

আরও পড়ুন: নারী শিক্ষার্থীদের নম্বর স্থানীয় বিএনপি-ছাত্রদলকে কারা দিল, প্রশ্ন মহিউদ্দিন রনির

কর্মসূচিতে শাখা বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর আহবায়ক জশদ জাকির বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনায় প্রক্টরিয়াল বডির পদত্যাগ ও প্রশাসনের জবাবদিহিতায় কয়েকদিন ধরে আমরা আন্দোলন করে যাচ্ছি। এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল আমাদের গ্রাফিতি অঙ্কন ও দেওয়াল লিখন কর্মসূচি ছিল।’

তিনি বলেন, ‘আমরা জেনেছি, প্রশাসনিক ভবনে নিয়োগ বাণিজ্য হয়েছে। গতকাল (শুক্রবার) দেখেছি, একজন রাজনৈতিক নেতা নিজেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের জমিদার বলছে। এজন্য আমরা প্রশাসনিক ভবনের নাম মুছে নিয়োগ বাণিজ্যের জমিদার ভবন লিখে দিয়েছি।’

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র সহকারী প্রক্টর অধ্যাপক ড. কোরবান আলী বলেন, ‘আমি জানতে পেরে তাদের কাছে জিজ্ঞেস করতে গিয়েছিলাম যে, কেন তারা এটি করছে। তারা জানাল, প্রশাসন আমাদের কোনো কথা শোনেনি, তাই প্রতীকী প্রতিবাদ হিসেবে তারা এটি লিখেছে।’


সর্বশেষ সংবাদ

X
APPLY
NOW!