চবিতে শিক্ষার্থী-স্থানীয়দের মধ্যে নজিরবিহীন সংঘর্ষ, ১০ সিদ্ধান্ত প্রশাসনের

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়  © টিডিসি ফটো

তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও স্থানীয় গ্রামবাসীর (জোবরা) মধ্যে ঘটে গেছে নজিরবিহীন সংঘর্ষ। এতে আহত হয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় পাঁচ শতাধিক শিক্ষার্থী। এর মধ্যে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছেন ৩ শিক্ষার্থী। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের ব্যর্থতায় এ ঘটনার জন্য দায়ী বলছে শিক্ষার্থীরা। ভবিষ্যতে এ ধরণের অপ্রত্যাশিত ঘটনা যাতে না ঘটে এজন্য ১০ টি সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। সোমবার (১ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা ৬টায় উপাচার্যের সভাকক্ষে আয়োজিত জরুরি সংবাদ সম্মেলনে এসব সিদ্ধান্ত জানানো হয়।

সিদ্ধান্তগুলো হলো-

  • আহত শিক্ষার্থীদের চিকিৎসার সকল ব্যয়ভার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বহন করবে (এখন পর্যন্ত ব্যয়ভার বহন করা হচ্ছে);
  • শিক্ষার্থীদের সুচিকিৎসা মনিটর করার জন্য ৫ শিক্ষকের সমন্বয়ে একটি কমিটি গঠন;
  • শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার জন্য চবি সংলগ্ন একটি মডেল থানা স্থাপনের বিষয়ে সরকারকে অনুরোধ;
  • রেলক্রসিং এলাকায় একটি পুলিশ বক্স স্থাপনের ব্যবস্থা করা;
  • রবিবার মধ্যেই সংঘর্ষের ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের;
  • সংঘটিত ঘটনাটি তদন্তের জন্য একটি তদন্ত কমিটি গঠন;
  • পুরো পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে বিশ্ববিদ্যালয়ের করণীয় নির্ধারণের জন্য মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) বিকাল ৩টায় জরুরি সিন্ডিকেট সভা আহ্বান;
  • বিশ্ববিদ্যালয়ের ২নং গেট সংলগ্ন জোবরা এলাকার বাড়িওয়ালাদের সঙ্গে সমন্বয়ের জন্য একটি কমিটি গঠন;
  • পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার স্বার্থে যৌথবাহিনীর সমন্বয়ে গঠিত স্ট্রাইকিং ফোর্স প্রত্যাহার না করার অনুরোধ;
  • শিক্ষার্থীদের সার্বক্ষণিক সহযোগিতার জন্য একটি হটলাইন সার্ভিস চালু করা।

গতকাল বিকাল ৩টায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, ছাত্র প্রতিনিধি ও বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের সমন্বয়ে গঠিত সম্প্রীতি কমিটির সভায় এসব সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় বলে জানান চবি উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মো. কামাল উদ্দিন।

উল্লেখ্য, বিশ্ববিদ্যালয়ের ২ নম্বর গেইট এলাকার একটি বাসায় রাতে দেরি করে বাসায় ফেরা নিয়ে দারোয়ান ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের ছাত্রী সাফিয়া খাতুনের মধ্যে তর্কাতর্কির একপর্যায়ে ওই ছাত্রীকে থাপ্পড় মারার অভিযোগ উঠে দারোয়ানের বিরুদ্ধে। তবে, জানা যায়, শুরুতে রাগান্বিত হয়ে ওই ছাত্রী আগে দারোয়ানকে থাপ্পড় মারায় তিনি তাকে মারধর করেন। পরে ওই শিক্ষার্থী তার কিছু ছেলে বন্ধুদের ডাকলে তারা দারোয়ানকে আটকানোর চেষ্টা করলে সে দ্রুত ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যান। এ সময় খবরটি ক্যাম্পাসে ছড়িয়ে পড়লে আরও শিক্ষার্থী সেখানে জড়ো হন। এক পর্যায়ে শিক্ষার্থীরা তাকে ধাওয়া করলে স্থানীয়রা একত্র হয়ে ইট–পাটকেল মারা শুরু করেন। তখন সংঘর্ষ ও পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।


সর্বশেষ সংবাদ