ছাত্রদল নেতার উদ্যোগে ঢাবির ফজলুল হক হলের কক্ষগুলোয় বসল শহীদদের নাম

২৭ মে ২০২৫, ০১:৪৬ PM , আপডেট: ২৮ মে ২০২৫, ০১:০৪ AM
শহীদ ওয়াসিমের নাম স্থাপন করছেন ওমর ফারুক

শহীদ ওয়াসিমের নাম স্থাপন করছেন ওমর ফারুক © টিডিসি ফটো

‘শহীদদের ভুলে যাওয়া নয়, তাদের নামেই বাঁচুক আমাদের শিক্ষাঙ্গন’, এমনটা ধারণ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ফজলুল হক মুসলিম হলের দক্ষিণ ভবনের প্রতিটি কক্ষের নামকরণ হচ্ছে জুলাই শহীদদের নামে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সহসাংগঠনিক সম্পাদক মো. ওমর ফারুক নিজ উদ্যোগে এই বাস্তবায়ন করেছেন।

জানা গেছে, শুরুতে হলের দক্ষিণ ভবনের ৯৪টা কক্ষের প্রতিটির দরজায় ৯৪ জন শহীদের নামে নেমপ্লেট স্থাপন করা হয়েছে। এরপর মূল হলের সব কক্ষে শহীদদের নাম বসানো হবে। যদিও বিষয়টি তিনি প্রো-ভিসি ও হল প্রভোস্টের কাছ থেকে মৌখিক অনুমতি নিয়ে করেছেন বলে দাবি করেন।

মো. ওমর ফারুক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৭-১৮ সেশনের শিক্ষার্থী। ছাত্ররাজনীতির পাশাপাশি তিনি শহিদ স্মৃতি সংরক্ষণে স্বতঃস্ফূর্তভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। ক্যাম্পাসে নানা সামাজিক কাজেও অংশ নেন তিনি।

আরও পড়ুন : মাউশির আইসিটি প্রশিক্ষণের জন্য ১৫৯০ প্রশিক্ষণার্থী মনোনয়ন

এ বিষয়ে জানতে চাইলে মো. ওমর ফারুক দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, আমি ২০১৮ সালে কোটা আন্দোলনে যুক্ত ছিলাম। এ কারণে ফজলুল হক মুসলিম হলের গেস্ট রুমে তৎকালীন ছাত্রলীগের কর্মীরা আমাকে সারা রাত আটকে রেখে নির্যাতন চালায়। পরে আমাকে ঢামেকে ভর্তি করা হয়। এ নিয়ে পত্রপত্রিকায় সংবাদও প্রকাশিত হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, জুলাই মাস বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি রক্তঝরা অধ্যায়। এই মাসে আমরা দেখেছি ছাত্রদের আত্মাহুতি, রক্তে ভেসে যাওয়া ক্যাম্পাস, শোষণ ও স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে জেগে ওঠা বজ্রকণ্ঠ। কিন্তু আজ সেই রক্তের বিনিময়ে অর্জিত আদর্শকে পাশ কাটিয়ে শহীদদে রক্তের দাগ না শুকাতে  একশ্রেণির মানুষ কোটিপতি হয়ে গেছে। তাই আমি বিবেকের তাড়নায় নতুন বাংলাদেশের জন্য যারা রক্ত দিয়েছেন, তাদের স্মরণে রাখতেই এ কাজে নেমে পড়েছি।

ফারুক বলেন, এই পটভূমিতে দাঁড়িয়ে একজন ক্ষুদ্র ছাত্রদলকর্মী হিসেবে আমি বিব্রত, হতাশ এবং একই সঙ্গে দায়বদ্ধ। কারণ আমি জানি, শহিদরা তাদের জীবন দিয়েছিলেন একটি স্বপ্নের জন্য—সেই স্বপ্নকে বাস্তব করতে না পারা মানে তাদের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা। এই অনুভব থেকেই আমার এই ছোট্ট প্রয়াস। তবে আর্থিক কারণে সব সম্ভব হচ্ছে না। আস্তে আস্তে আমি ক্যাম্পাসের সব হলে এটি বাস্তবায়ন করতে চাই। আপাতত এটি ছেলেদের হল হওয়ায় এখানে শুধু ছেলে শহীদদের নাম এসেছে। মেয়েদের হলেও এটি করা হবে বা অন্যদের করা উচিত। প্রো-ভিসি ও হল প্রভোস্টও আমাকে বলেছেন যে এটি একটি ভালো কাজ। এর মধ্য দিয়ে জুলাইয়ে আত্মদানকারীদের স্মরণ করা হবে।

আরও পড়ুন : এটিএম আজহারুলের খালাসে আসিফ নজরুল কৃতিত্ব দিলেন যাদের

এটি শুধুই একটি প্রতীকী কাজ, কিন্তু এর মধ্য দিয়ে আমি চাই মানুষ ভাবুক, প্রশ্ন করুক, সচেতন হোক—শহিদদের নাম ও আদর্শ কি আমরা সত্যিই ধারণ করছি? নাকি ভুলে গেছি সেই রক্তাক্ত প্রতিজ্ঞা?

অনুরোধ, প্রস্তাব ও দাবি জানিয়ে ওমর ফারুক বলেন, বাংলাদেশের প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ে অন্তত একটি ভবন, হল, শ্রেণিকক্ষ কিংবা গ্রন্থাগার যেন একজন বা একাধিক শহিদের নামে নামকরণ করা হয়। এই উদ্যোগ নিছক আনুষ্ঠানিকতা নয়। এটি হবে—একটি চলমান ইতিহাসচর্চা; প্রজন্মের মনে দায়বদ্ধতা জাগানোর শিক্ষা এবং শহিদদের প্রতি একটি প্রাতিষ্ঠানিক শ্রদ্ধা।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ফজলুল হক মুসলিম হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. ইলিয়াস আল-মামুন দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, সে নিজের উদ্যোগে এক কাজটা করেছে। এটা একটা ভালো কাজ বলে তাকে মৌখিক অনুমতি দেওয়া হয়েছে। অফিসিয়ালি এটির অনুমতি দেওয়ার কিছু নেই।

খিলগাঁও ফ্লাইওভারে কাভার্ডভ্যানের ধাক্কায় পুলিশ সদস্য নিহত
  • ০১ জানুয়ারি ২০২৬
‘দুর্ভাগ্যজনকভাবে দেখলাম, এবারও পটকার শব্দে কেঁপে উঠছে চারপ…
  • ০১ জানুয়ারি ২০২৬
নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে আতশবাজি, রাজধানীতে ভবনে আগুন
  • ০১ জানুয়ারি ২০২৬
‘ম্যাচ জেতানো মানুষ হতে চাই, বাংলাদেশে অতিথিপরায়ণতাও দারুণ’
  • ০১ জানুয়ারি ২০২৬
নিষিদ্ধ হিযবুত তাহরীরের পোস্টার, বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫ শিক্ষার্…
  • ০১ জানুয়ারি ২০২৬
পদত্যাগের আগেই এনসিপির গ্রুপ থেকে বের করে দেয়া হয় তাসনিম জা…
  • ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫