বাবা-মা হারানো দিয়ার ঢাবিতে ভর্তির সুযোগ, অভিভাবকের দায়িত্ব নিলেন যবিপ্রবি উপাচার্য 

দিয়ার লেখাপড়া ও অভিভাবকের দায়িত্ব নিয়েছেন যবিপ্রবি উপাচার্য 
দিয়ার লেখাপড়া ও অভিভাবকের দায়িত্ব নিয়েছেন যবিপ্রবি উপাচার্য   © টিডিসি ফটো

ঝিনাইদহের হরিণাকুন্ডু উপজেলার চিথলিয়াপাড়া গ্রামের তৃপ্তি রানী সাহা ও জয়দেব সাহার কোল আলোকিত করে জন্মগ্রহণ করে শিশু দিয়া রানী। কিন্তু দিয়ার ভাগ্যে বাবা-মায়ের আদর বেশি দিন জোটেনি। মাত্র সাড়ে তিন বছর বয়সে মাতৃহারা হয় দিয়া। এর অল্প কিছুদিন পরই নিরুদ্দেশ হয়ে যায় বাবা নামক বটবৃক্ষটিও। সেই থেকে এতিম দিয়া নানীর কাছেই আশ্রিত হয়ে বেড়ে উঠেন। পিতা-মাতা হারানো দিয়া লেখাপড়াতে ছিলেন অদম্য মেধাবী। এ বছর ২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষে প্রাচ্যের অক্সফোর্ড খ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) ভর্তি পরীক্ষায় কলা, আইন ও সামাজিক বিজ্ঞান ইউনিটে ২৬৪তম স্থান অধিকার করেছেন দিয়া। 

এর আগে দিয়া গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয় হতে প্রাথমিক শিক্ষা, উপজেলা সদরের স্বনামধন্য শিশুকলি মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয় হতে এসএসসি এবং ঐতিহ্যবাহী সালেহা বেগম মহিলা ডিগ্রি কলেজ হতে কৃতিত্বের সঙ্গে এইচএসসি পাস করেন। 

ভর্তি পরীক্ষায় এমন ফলাফলের পরও অর্থাভাবে তাঁর ভর্তি ও পড়ালেখা অনিশ্চিত হয়ে পড়ে। এমন সংবাদ জানার পরই দিয়ার লেখাপড়া ও অভিভাবকের দায়িত্ব গ্রহণ করেন যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মাসি বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল মজিদ। যবিপ্রবি উপাচার্যের গ্রামের বাড়িও ঝিনাইদহের হরিনাকুণ্ডু উপজেলায়। ছাত্র-ছাত্রী বান্ধব শিক্ষক হিসেবে আব্দুল মজিদের ব্যাপক সুনাম রয়েছে। যখনই তিনি শিক্ষার্থীদের সমস্যার কথা শোনেন, সেটা সমাধানের চেষ্টা করেন।  

যবিপ্রবি উপাচার্য বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়া ও অভিভাবকের দায়িত্ব নিয়েছেন জানিয়ে দিয়া বলেন, এই সংবাদ শোনার পর দু’চোখ বয়ে ঝরতে থাকে আনন্দাশ্রু। এই জন্য তিনি স্যারের প্রতি কৃতজ্ঞতাও জানিয়েছেন। দিয়া প্রাতিষ্ঠানিক লেখাপড়া সম্পন্ন করে প্রশাসন ক্যাডারে যোগদানের মাধ্যমে দেশ সেবায় কাজ করতে চান বলেও জানান, এ জন্য তিনি সকলের নিকট দোয়া কামনা করেছেন। 

স্থানীয়রা বলেন, তাঁর ফলাফলে স্বজনদের পাশাপাশি আশপাশের মহল্লার সবাই খুশি। ছোটবেলা থেকে দিয়া পড়াশোনায় অনেক মনোযোগী। অভাবের মধ্যে বড় হলেও লেখাপড়ায় তিনি কখনো মনোবল হারাননি। স্যার যদি এভাবে তার দায়িত্ব না নিতেন, তাহলে তার লেখাপড়া চালিয়ে যাওয়া সম্ভব হতো না। তার লেখাপড়া দায়িত্ব নেওয়া শিক্ষক অধ্যাপক ড. এমএ মজিদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল মজিদ বলেন, শিক্ষক হিসেবে আমাদের উচিত, সন্তানদের পাশে দাঁড়ানো। দিয়ার মতো মেধাবীদের লেখাপড়ার ক্ষেত্রে সঠিকভাবে যত্ন নিতে পারলে তারা রাষ্ট্রের সম্পদ হবে বলে আমি মনে করি। শিক্ষার্থীদের যেকোনো সমস্যায় তাদের পাশে থাকার চেষ্টা করি বলেও তিনি জানান। 


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence