ঢাবির কলা ভবনে ছাত্রীদের ওয়াশরুমে বহিরাগত পুরুষের প্রবেশ, নারী শিক্ষার্থীদের ক্ষোভ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়  © সংগৃহীত

সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ইসলামি মহাসমাবেশে এসে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে প্রবেশ করে নারী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ ও নারীদের ওয়াশরুম ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে কয়েকজনের বিরুদ্ধে।

আজ মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) সকাল থেকেই সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ইসলামি সমাবেশে আসা লোকজন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশ করেন এবং পরবর্তী সময়ে কলা ভবনের মেয়েদের ওয়াশরুম ব্যবহার করেন।

গতকাল সোমবার (৪ নভেম্বর) রাত থেকেই সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জড়ো হন ইসলামি মহাবেশে আসা তাবলিগ ও হেফাজতের সমর্থক জনগোষ্ঠী। আজ সমাবেশ শুরু হলে তারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে প্রবেশ করেন।

মঙ্গলবার সরেজমিন দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের বিভিন্ন অংশে অবস্থান নিয়েছেন সমাবেশে আসা লোকজন। ক্যাম্পাসের ছেলেদের হল, প্রশাসনিক ভবনসহ সব জায়গার ওয়াশরুম ব্যবহার করছেন তারা। কোনো কিছুই নিয়ন্ত্রণে নেই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের।

আরও পড়ুন: ঢাবির ভর্তিতে মুক্তিযোদ্ধার নাতি-নাতনি ও পোষ্য কোটা বাতিলে নোটিশ

নারী শিক্ষার্থীদের বাজে কথা বলে উত্ত্যক্ত করার অভিযোগও উঠেছে সমাবেশে আসা লোকজনদের বিরুদ্ধে। সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের এক নারী শিক্ষার্থী প্রক্টর কছে অভিযোগ নিয়ে এসে বলেন, ‘আমি ক্যাম্পাসে প্রবেশের সময় কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে আমাকে আজেবাজে কথা বলা হয়। আমার ক্যাম্পাসে আমিই নিরাপদ নয়।’

শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ সালেহীনের ফেসবুক পোস্টে একাধিক নারী শিক্ষার্থীর কমেন্টে নারী শিক্ষার্থীদের উত্ত্যক্ত করার তথ্য পাওয়া গিয়েছে। একটি কমেন্টে এক নারী শিক্ষার্থী বলেন, “‘গায়ে ওড়না কোথায়?’ ‘মেয়েরা এখানে কী করে’ এ রকম বাক্যসহ কটূক্তি করা হচ্ছে। কেউ যদি জিজ্ঞেস করে কী বললেন, তখন উত্তর দেন, ‘আপনাকে বলি নাই।’ একাডেমিক ভবনে ঢুকে ফিমেল ওয়াশরুমে পর্যন্ত ঢুকে যাওয়ার মতো ঘটনাও ঘটেছে। একজন মেয়েকে অলরেডি ব্যাড টাচ করা হয়েছে।’

আরও পড়ুন: ঢাবিতে ভর্তি: ২৪ ঘণ্টায় কত আবেদন পড়ল, কোন ইউনিটে বেশি

আরেকটি ফেসবুক পোস্টে আরেক শিক্ষার্থী লিখেছেন, ‘আজকের এই প্রোগ্রামে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ২ হলের মেয়েরা। কাল রাত থেকে এত সাউন্ড আজকেও হইতেছে। আপনারা প্রোগ্রাম করেন ভালো কথা, শামসুন্নাহার হলের সামনে কি আপনাদের গাড়ি পার্কিং করার জায়গা? মিশুক মনির চত্বরে সব পুরুষ বসে আছে। কলাভবন থেকে যে হলে ফিরব, এই জায়গাটুকু রাখে নাই। আগেও এমন হয়েছে ছাত্রলীগ এমন প্রোগ্রাম করত,  তখন মেয়েরা বেশি ভোগান্তিতে পড়ত।’

জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সহযোগী অধ্যাপক সাইফুদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে প্রোগ্রামের অনুমতি দেয় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)। ডিএমপিকে তারা তাদের লোকসংখ্যা গোপন করেছে। তারা ২০ হাজার বললেও এখন দেখা যাচ্ছে, তারা লাখেরও ওপরে। আমার কাছে প্রায় ১০০ শিক্ষার্থীর ফোন এসেছে। তারা নানাভাবে হ্যারাজের শিকার হচ্ছে। কিন্তু তাদের বের করে দেওয়ার মতো লোকবল আমাদের নেই। আমরা মাইকিং করতে বলেছি। শাহবাগ থানায় জানিয়েছি, প্রোগ্রাম শেষে যেন টিএসসি সংলগ্ন গেট দিয়ে কেউ না বের হয়। আমরা আমাদের সাধ্যমতো চেষ্টা করছি।’

আরও পড়ুন: ৩ দফা দাবিতে প্রশাসনিক ভবনে তালা জবির শিক্ষার্থীদের

উল্লেখ্য, গত ১০ বছরে বিভিন্ন সময়ে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগ আয়োজিত সমাবেশের সময়ও ছাত্রীদের ওয়াশরুমে বা টয়লেটে বহিরাগতদের প্রবেশের ঘটনা ঘটেছে। এ নিয়ে তখনো ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হয়। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, উদ্যানের ভেতরে সমাবেশস্থলের পাশে পর্যাপ্ত ভ্রাম্যমাণ টয়লেট স্থাপন করা হলে অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়ানো যেত।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence