সবার আগে শিক্ষা সংস্কারে কমিশন গঠন জরুরি: এম আব্দুল আজিজ

সবার আগে শিক্ষা সংস্কারে কমিশন গঠন জরুরি: এম আব্দুল আজিজ
সবার আগে শিক্ষা সংস্কারে কমিশন গঠন জরুরি: এম আব্দুল আজিজ  © সংগৃহীত

অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ইতোমধ্যে বিভিন্ন সংস্কার কমিশন গঠন করেছে কিন্তু সবার আগে শিক্ষা সংস্কার কমিশন গঠন করা দরকার ছিল বলে দাবি করেছেন শিক্ষাবিদ ও বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অব ইসলামিক থ্যট এর মহাপরিচালক এম আব্দুল আজিজ। 

শনিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) বিকেল সাড়ে চারটায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) আর সি মজুমদার মিলনায়তনে ‘বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অব ইসলামিক থ্যট’ কর্তৃক আয়োজিত শিক্ষা সংস্কার প্রসঙ্গে ‘কেমন গ্র্যাজুয়েট চাই’ শীর্ষক আলোচনা সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনের এক পর্যায়ে একথা বলেন তিনি। অনুষ্ঠানের শুরুতে কোরআন তিলাওয়াত করা হয়। পরবর্তীতে একে একে বক্তব্য রাখেন উপস্থিত আলোচকবৃন্দ। 

আলোচনা সভায় মূল প্রবন্ধে এম আব্দুল আজিজ বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থাকে উন্নত করা এবং  এর মাধ্যমে দক্ষ গ্র‍্যাজুয়েট প্রস্তুত করার জন্য পাঠ্যক্রম সংশোধন, সিলেবাসে নতুন বিষয় যুক্ত করা, শিক্ষা সংস্কার কমিশন গঠন করা, শিক্ষকদের বেতন ও সামাজিক মর্যাদা বৃদ্ধি সহ বেশ কিছু বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন। 

তিনি বলেন, বাংলাদেশে শিক্ষকদের চাকরি হওয়া উচিত ছিল প্রথম শ্রেণির চাকরি কিন্তু তারা তাদের কাজের মূল্যায়ন পায় না, সামাজিক মর্যাদাও তাদের সেভাবে দেওয়া হয় না। এর ফলে তারা যে নতুন প্রজন্মকে দক্ষ করে গড়ে তুলবে সে প্রেষণা তারা পান না। শিক্ষাব্যবস্থার সংস্কার করতে হলে শিক্ষকদের যথাযথ মূল্যায়ন দিতে হবে। 

এসময় তিনি ইসলামি শিক্ষার ক্রমবিকাশ,আধুনিক শিক্ষার ক্রমবিকাশে মুসলমানদের অবদান, ওয়েস্টার্ন এবং ইসলামি শিক্ষার পার্থক্য, বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থায় ধর্মীয় শিক্ষার গুরুত্ব ইত্যাদি বিষয়েও তথ্য উপাত্ত সহকারে বিষদ আলোচনা করেন।

আরও পড়ুন: বিশেষ গণবিজ্ঞপ্তি নিয়ে যা বললেন শিক্ষা উপদেষ্টা

এছাড়াও সমন্বিত শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে আব্দুল আজিজ বলেন, বাংলাদেশে বিভিন্ন ধর্ম, মতাদর্শের মানুষ বাস করে। সেক্ষেত্রে সবাইকে একটা কমন শিক্ষা ব্যবস্থায় আনা উচিত যেখানে মাদ্রাসা,সাধারণ স্কুল শিক্ষা কার্যক্রম এবং ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের ধর্মীয় জ্ঞান এবং নৈতিক মূল্যবোধ গড়ে ওঠার সুযোগ পায়। কেননা ধর্ম আমাদের মূল্যবোধ শেখায় আর সেক্ষেত্রে ধর্মীয় শিক্ষার মাধ্যমে গ্র‍্যাজুয়েট তৈরি করা জরুরি।

সাউথইস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ইউসুফ এম ইসলাম বলেন, গ্রাজুয়েটদের থেকে মানুষ যেটা আশা করে সেটা আগে গ্রাজুয়েটদেরকে শেখাতে হবে। অর্থাৎ গ্রাজুয়েটরা যে সমস্যার সমাধান করবে সেই সমস্যা সম্পর্কিত প্রশ্ন আমাদেরকে আগে ক্লাসে নিয়ে আসতে হবে। গ্রাজুয়েটরা ক্লাসে যখন সমস্যা সম্পর্কে জানতে পারবে তখনই গ্রাজুয়েশন শেষ করে তারা সেই সমস্যার সমাধান করতে পারবে। 

এসময় তিনি নোট ভিত্তিক উচ্চশিক্ষাকে অনুৎসাহিত করে বলেন, একটা বাচ্চা যেমন কোনো নোট পড়ে হাঁটা শিখতে পারে না তেমনি একজন গ্র্যাজুয়েটও নোট ভিত্তিক পড়াশোনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করতে পারে না। সমস্যা সংক্রান্ত প্রশ্নগুলো তাই ক্লাসে আনতে হবে পড়াতে হবে।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো. শহীদুল হক প্রথমে প্রবন্ধে দাবিকৃত সমন্বিত শিক্ষা ব্যবস্থার সমালোচনা করে বলেন, এই মুহূর্তে দেশে কোনো নির্বাচিত সরকার নেই তাই এই অবস্থায় যদি সমন্বিত শিক্ষা ব্যবস্থা চালু হয় তাহলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে ইসলামি শিক্ষা। ইসলামিক অর্থনীতি হয়ে যাবে শুধু অর্থনীতি, ইসলামি পৌরনীতি হয়ে যাবে শুধু পৌরনীতি সুতরাং ক্ষতিগ্রস্ত হবে ইসলামি শিক্ষাই।

কেমন গ্র্যাজুয়েট চাই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সর্বক্ষেত্রে আমাদের এথিক্যাল গ্র্যাজুয়েট প্রয়োজন। পাশাপাশি এথিকসের সাথে এক্সিলেন্স দরকার। ভাষা শিক্ষা , যোগাযোগ দক্ষতা,  ম্যানেজমেন্ট ও লিডারশিপ দক্ষতা , আইসিটি শিক্ষাসহ কার্যকরী নানামুখী দক্ষতা সম্পন্ন হিতে হবে বর্তমান গ্রাজুয়েটদের। এসময় তিনি গ্রাজুয়েটদেরকে ডিসিপ্লিনড হতে বলেছেন এবং তিনি আশা করেন বর্তমান গ্রাজুয়েটরা নিজেরাই হবে উদ্যোক্তা। যারা চাকরি খুঁজবে না বরং নিজেরাই চাকরি দিবে। 

আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদের ডিন অধ্যাপক নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ। এছাড়াও এশিয়ান প্যাসিফিক ইউনিভার্সিটির আইন ও মানবাধিকার বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আজিজুননাহার মুনমুনের সঞ্চালনায় বক্তব্য রেখেছেন, ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির সাবেক উপাচার্য মুহাম্মদ ফাজলী ইলাহী ও মাহদুল ফিকরী ওয়াদ দিরাসাতিল ইসলামিয়ার প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক মুসা আল হাফিজ।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence