শিক্ষক নিয়োগ দুই ধাপে, প্রভাষক পদ হবে অস্থায়ী

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষাব্যবস্থার সংস্কার’ শীর্ষক সভায় উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ খান
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষাব্যবস্থার সংস্কার’ শীর্ষক সভায় উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ খান  © সংগৃহীত

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) শিক্ষক নিয়োগে দ্বি-ধাপবিশিষ্ট পদ্ধতির প্রস্তাব করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক সেলিম রায়হান এবং গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌসের নেতৃত্বাধীন ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমাজ’ নামে শিক্ষকদের একটি সংগঠন।

সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মুজাফফর আহমেদ চৌধুরী মিলনায়তনে ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষাব্যবস্থার সংস্কার’ শীর্ষক সভায় সংগঠনটির পক্ষ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সংস্কারে নানা প্রস্তাব উপস্থাপন করা হয়।

সভায় উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ খান, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সমন্বয়ক আব্দুল কাদের ও উমামা ফাতেমা বক্তব্য রাখেন।

সংস্কার প্রস্তাব অনুযায়ী, প্রভাষক নিয়োগ হবে অস্থায়ী। প্রভাষক হিসেবে নিয়োগের পর পিএইচডি এবং নিজ ডিসিপ্লিনের একটি টপ জার্নালে একক আর্টিক্যাল প্রকাশ করার পর সহকারী অধ্যাপক পদে স্থায়ীভাবে নিয়োগ বা পদোন্নতি পাবেন। এ ক্ষেত্রে দুটি ধাপ অনুসরণ করে নিয়োগ দেওয়া হবে। 

নিয়োগের ধাপ হলো, প্রথম ধাপে উচ্চতর ডিগ্রি বা অভিজ্ঞতা (এমফিল পিএইচডি পোস্টডক ফেলোশিপ), প্রকাশনা, শিক্ষকতা যোগ্যতা, সংশ্লিষ্ট বিভাগের প্রয়োজন বিবেচনায় বিভাগের একাডেমিক কমিটি আবেদনকারীদের প্রাথমিকভাবে বাছাই করবেন।

দ্বিতীয় ধাপে বাছাইকৃতদের ক্যাম্পাস ভিজিটের জন্য আমন্ত্রণ জানানো হবে এবং তারা তিনটি পর্বে অবতীর্ণ হবেন। প্রথমে তিনি বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও নিয়োগ কমিটির উপস্থিতিতে টিচিং ডেমোনেস্ট্রেশন দেবেন এবং শ্রোতারা একটি মূল্যায়ন পত্রে রেটিং দেবেন; দ্বিতীয় পর্বে তিনি শিক্ষার্থীদের (প্রধানত মাস্টার্স) সঙ্গে সংলাপ ও প্রশ্নোত্তর পর্ব করবেন (এতে শিক্ষার্থীরা বেনামে আবেদনকারীর ব্যাপারে মতামত জানাবেন); তৃতীয়ত নিয়োগ কমিটির সঙ্গে সাক্ষাৎকার পর্বে অবতীর্ণ হবেন এবং নিয়োগ কমিটির সদস্যের চেকলিস্টসহ এক সেট প্রশ্নমালা থাকবে। সেই সেট থেকে প্রশ্ন করতে হবে।

শিক্ষকদের পদোন্নতির ক্ষেত্রে চাকরির বয়সসীমা বিবেচনায় না রেখে দক্ষতা, অভিজ্ঞতা, অর্জন, পাবলিকেশন্স ও পারফরম্যান্স; পিয়ার রিভিউড জার্নাল আর্টিক্যাল জমা দেওয়া; শিক্ষার্থী কর্তৃক শিক্ষক মূল্যায়নপদ্ধতি বিবেচনায় নিতে হবে এবং পিএইচডি ডিগ্রি ছাড়া সহযোগী অধ্যাপক ও অধ্যাপক পদোন্নতি দেওয়া যাবে না।

অবকাঠামো বিবেচনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের হারানো জমি পুনরুদ্ধার, উন্নয়নমূলক কাজের দরপত্রে স্বচ্ছতা এবং অনলাইনভিত্তিক করে ফেলতে হবে; শ্রেণিকক্ষে ডিজিটাল প্রযুক্তি, তাপ নিয়ন্ত্রণব্যবস্থা; সাউন্ডপ্রুফ এবং স্মার্ট করতে হবে; ক্যাম্পাসের সর্বত্র শক্তিশালী ওয়াই-ফাই ইন্টারনেটের ব্যবস্থা স্থাপন করতে হবে; অধিভুক্ত সাত কলেজকে বাদ দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিদ্যমান রিসোর্সকে নিজেদের উন্নয়ন ও বিকাশে নিয়োজিত করতে হবে বলে প্রস্তাবে উল্লেখ করা হয়।

অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খান বলেন, এই বিশ্ববিদ্যালয় সবার প্রতিষ্ঠান। এই প্রতিষ্ঠানকে জ্ঞাননির্ভর ও গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করতে সবার সহযোগিতা প্রয়োজন। এ ক্ষেত্রে অংশীজনদের পরামর্শ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রস্তাবগুলোর সারাংশ জমা দেওয়ার অনুরোধ জানিয়ে এ বিষয়ে প্রশাসন কাজ করবে বলে জানান তিনি।  

সমন্বয়ক ও সমাজকল্যাণ গবেষণা ইনস্টিটিউটের ছাত্র আব্দুল কাদের বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে নিম্ন মধ্যবিত্ত শিক্ষার্থীরা বেশি ভর্তি হয়। একটি সিটের জন্য তাদের মেরুদণ্ড বিকিয়ে দিতে হতো; গণরুম-গেস্টরুমে পচে-গলে তার স্বপ্ন বিনষ্ট হতো; শিক্ষার্থীদের জিম্মি করার জন্য নতুন আবাসিক হল নির্মাণ করা হতো না। ছাত্রজনতার রক্তের বিনিময়ে এখন সেই পরিস্থিতির পরিবর্তন হয়েছে। আমরা চাই দলীয় দখলদারি রাজনীতি ক্যাম্পাসে থাকবে না। শিক্ষার পরিবেশ নিশ্চিত করা হবে।  

সভায় প্রস্তাবগুলো উপস্থাপন করেন নৃবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. জোবাইদা নাসরীন, জাপানিজ স্টাডিজ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. আব্দুল্লাহ্-আল-মামুন, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ খোরশেদ আলম এবং থিয়েটার অ্যান্ড পারফরম্যান্স স্টাডিজ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. শাহমান মৈশান।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence