রাবিতে ছাত্রলীগ নেতাদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ না নিলে পদত্যাগের হুঁশিয়ারি প্রাধ্যক্ষদের

  © সংগৃহীত

গত ২৭ মে দুপুরে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) নবাব আবদুল লতিফ হলের গেট ও প্রাধ্যক্ষের কক্ষে তালা ঝুলিয়ে ডাইনিং ভাঙচুরের ঘটনায় জড়িতদের বহিষ্কারের জন্য সুপারিশ করেছে প্রাধ্যক্ষ পরিষদ। জড়িতদের বিরুদ্ধে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ না করলে একযোগে পদত্যাগের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন একাধিক প্রাধ্যক্ষ।

গতকাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সৈয়দ নজরুল ইসলাম প্রশাসনিক ভবনের উপাচার্য কনফারেন্স রুমে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সাথে হল প্রাধ্যক্ষদের এক জরুরি সভায় এ হুঁশিয়ারি দেন তাঁরা। বিষয়টি দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে একাধিক প্রাধ্যক্ষ নিশ্চিত করেছেন। 

বহিষ্কারের সুপারিশপ্রাপ্তরা হলেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ইমরান হোসেন, হল শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি তাসকিফ আল তৌহিদ ও সাংগঠনিক সম্পাদক মাসুদুর রহমান।

বিশ্ববিদ্যালয় ও হল প্রশাসনের সাথে কথা বলে জানা গেছে, গতকাল মিটিংয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সাথে বসেছিল ১৬টি আবাসিক হলের প্রাধ্যক্ষগণ। সেখানে শাখা ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ করেছেন তাঁরা। ছাত্রলীগের বাধার কারণে ঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করতে পারছেন না বলে জানিয়েছেন হলের প্রাধ্যক্ষরা। 
অনেক সময় তারা হেনস্থার শিকারও হচ্ছেন। দুই প্রাধ্যক্ষকে লাল কালির ক্রস দাগসংবলিত ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও দেওয়া হয়েছে। এসব বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা না নিলে একসঙ্গে প্রাধ্যক্ষরা পদত্যাগ করবেন বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।

পদত্যাগের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী হল প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ছাত্রলীগের বর্তমান কর্মকাণ্ডে বিশ্ববিদ্যালয় সাধারণ শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে সবাই বিব্রত। আমরা হল প্রাধ্যক্ষরা এসব কর্মকাণ্ডের সঠিক পদক্ষেপ দেখতে চাই। আর যদি তা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন না করে তবে আমরা প্রাধ্যক্ষরা কঠিন সিদ্ধান্ত নেব। এমনকি সকলে পদত্যাগের সিদ্ধান্তও নেওয়া হতে পারে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে নবাব আব্দুল লতিফ হল প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক এ.এইচ.এম. মাহবুবুর রহমান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যদি ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে এমন কর্মকাণ্ডের যথাযথ ব্যবস্থা না নেয় তাহলে আমরা সকল প্রাধ্যক্ষরা পদত্যাগ করব বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমরা আমাদের সিদ্ধান্তে অটল।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক মো. আসাবুক হক বলেন, প্রাধ্যক্ষ স্যারদের সাথে আমাদের আলোচনা হয়েছে। তাদের সকল অভিযোগ আমরা শুনেছি। নবাব আব্দুল লতিফ হলের ঘটনার তদন্ত প্রতিবেদন তিন দিনের মধ্যে জমা দেওয়ার কথা। প্রতিবেদন হাতে পেলে সে অনুযায়ী আমরা যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

উল্লেখ্য, গত ২৭ মে দুপুরে নবাব আব্দুল লতিফ হলের ডাইনিংয়ে খেতে যান মনির হোসেন নামের ছাত্রলীগের এক কর্মী। খাবারের মধ্যে তিনি সিগারেটের একটা অংশ দেখতে পান। পরে ডাইনিং কর্মচারীদের সঙ্গে উচ্চবাচ্য করেন শিক্ষার্থীরা। সেখানে উপস্থিত আরও কয়েকজন শিক্ষার্থী মিলে ডাইনিং ভাঙচুর করেন এবং গেটে তালা ঝুলিয়ে দেন। পরে হলের প্রাধ্যক্ষ রুমে তালা দেওয়া, নেমপ্লেট ভাঙচুরসহ প্রধান ফটকে অবস্থান নিয়ে গেটে তালা ঝুলিয়ে আন্দোলন করেন তারা। প্রাধ্যক্ষকে লাল কালির ক্রস দাগসংবলিত ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শেয়ার করে পদত্যাগের দাবি জানান তারা।

তবে হল প্রাধ্যক্ষের দাবি হল শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি তাসকিফ আল তৌহিদ ছাত্রলীগের ২০ নেতা-কর্মীর একটি তালিকা দিয়ে তাদের হল প্রশাসন থেকে জার্সি দেওয়ার কথা বলেন। তিনি তাতে সাড়া না দেওয়ায় উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে এসব করেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।

 

সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence