মঙ্গল শোভাযাত্রা অসাম্প্রদায়িক চেতনা নিয়ে উপস্থিত হয়: ঢাবি উপাচার্য

চারুকলা অনুষদ থেকে উপাচার্য অধ্যাপক মাকসুদ কামালের নেতৃত্বে মঙ্গল শোভাযাত্রা বের করা হয়
চারুকলা অনুষদ থেকে উপাচার্য অধ্যাপক মাকসুদ কামালের নেতৃত্বে মঙ্গল শোভাযাত্রা বের করা হয়  © সংগৃহীত

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল বলেছেন, বাংলা নববর্ষের উৎসবকে বন্ধ করার জন্য বিভিন্ন ধর্মান্ধ ও সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী এবং মৌলবাদি অপশক্তি অনেক চেষ্টা করেছে। কিন্তু মঙ্গল শোভাযাত্রা প্রতিবছরই আমাদের সামনে অসাম্প্রদায়িক চেতনা, সাম্য ও সম্প্রীতির বাণী নিয়ে উপস্থিত হয়। সব জাতি, ধর্ম, বর্ণ, গোষ্ঠীর মানুষকে সম্প্রীতির বন্ধনে আবদ্ধ হতে অনুপ্রাণিত করে। মঙ্গল শোভাযাত্রার অসাম্প্রদায়িক চেতনা ধারণ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণে কার্যকরী ভূমিকা রাখার জন্য উপাচার্য তরুণ প্রজন্মের প্রতি আহবান জানান।

বর্ণাঢ্য আয়োজনের মধ্য দিয়ে আজ রোববার (১৪ এপ্রিল) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা নববর্ষ-১৪৩১ উদ্যাপিত হয়েছে। এ উপলক্ষ্যে আজ সকালে চারুকলা অনুষদ থেকে উপাচার্য অধ্যাপক মাকসুদ কামালের নেতৃত্বে মঙ্গল শোভাযাত্রা বের হয়। এটি শাহবাগ মোড় ও শিশুপার্ক সংলগ্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে পুনরায় শাহবাগ মোড় হয়ে ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রে গিয়ে শেষ হয়। এ সময় উপাচার্য এসব কথা বলেন।

ইউনেস্কো কর্তৃক ‘মানবতার স্পর্শাতীত সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য’ হিসেবে ঘোষিত মঙ্গল শোভাযাত্রার এবারের স্লোগান হচ্ছে ‘আমরা তো তিমিরবিনাশী’। শোভাযাত্রায় সমাজকল্যাণ মন্ত্রী ডা. দীপু মনি, ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম, সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী নাহিদ ইজাহার খান, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ, উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. সীতেশ চন্দ্র বাছার, চারুকলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক নিসার হোসেন, ঢাবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. নিজামুল হক ভূইয়া, সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. জিনাত হুদা, প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. মাকসুদুর রহমান, ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমানসহ শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা, কর্মচারী, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বসহ সর্বসাধারণ অংশগ্রহণ করেন। 

শোভাযাত্রায় এবার স্থান পেয়েছে পাঁচটি মোটিভ। সেগুলো হলো- পাখি, হাতি, ভোঁদর, ফুল হাতে শিশু পুতুল এবং চাকার মধ্যে চোখ নিয়ে ভিন্ন রকম একটি শিল্পকর্ম। একইসঙ্গে শোভাযাত্রায় বিভিন্ন মুখোশ, পেঁচা, ঘোড়া, পুতুল, নকশি পাখি ও বিভিন্ন প্রাণীর প্রতিকৃতি প্রদর্শন করা হয়। পহেলা বৈশাখ উদযাপনে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে আগতরা কোনো ধরনের মুখোশ পরেনি এবং ব্যাগ বহন করেনি। তবে চারুকলা অনুষদ কর্তৃক প্রস্তুতকৃত মুখোশ হাতে নিয়ে প্রদর্শন করেছেন। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে কেউ ভুভুজিলা বাঁশি বাজায়নি। এছাড়া, ক্যাম্পাসে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টিকারযুক্ত গাড়ি ছাড়া অন্য যানবাহন ও মোটরসাইকেল চলাচল বন্ধ ছিল।

আরো পড়ুন: ঢাবিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় সন্তান ও নাতি-নাতনিরা ভর্তির সুযোগ পান যেভাবে

উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল বাংলা নববর্ষ উপলক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা, কর্মচারীসহ সকলকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়েছেন এবং সকলের সুখ, শান্তি, সমৃদ্ধি ও অনাবিল মঙ্গল কামনা করেছেন। তিনি বলেন, আবহমান বাংলার সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য মঙ্গল শোভাযাত্রাকে ইউনেস্কো সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। তাই মঙ্গল শোভাযাত্রা শুধু বাঙালির সম্পদ নয়, এটি বিশ্ব সংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য অংশ।

উপাচার্য বলেন, অন্ধকারের বিরুদ্ধে আমরা আলোর দিশারী। অন্ধকার ভেদ করে সমাজে আলো ছড়াতে এবং সমাজের সকল কুপমণ্ডুকতা দূর করতে এবার আমরা প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করেছি ‘আমরা তো তিমিরবিনাশী’। অতীতের গ্লানি, দুঃখ, জরা মুছে অসুন্দর ও অশুভকে পেছনে ফেলে নতুন কেতন উড়িয়ে বাংলা নববর্ষ-১৪৩১ সকলের জীবনে আরও সুখ, শান্তি ও সমৃদ্ধি বয়ে আনবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। 

এর আগে উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল বটতলায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগীত বিভাগ আয়োজিত বর্ষবরণ অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence