শহীদ মিনারে ফুল দেওয়ার পোস্ট শেয়ার, নিটার শিক্ষককে অব্যাহতি
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ২০ মার্চ ২০২৪, ১১:৫০ AM , আপডেট: ০৭ আগস্ট ২০২৫, ১২:৪৫ PM
২১ ফেব্রুয়ারিতে শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণের অন্যের লেখা পোস্ট শেয়ার করে শাস্তি পেয়েছেন জাতীয় বস্ত্র প্রকৌশল ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (নিটার) সহকারী অধ্যাপক বুরহান উদ্দিন বান্না। এ পোস্ট শেয়ার করার অপরাধে তাকে প্রতিষ্ঠানটির অ্যাকাডেমিক ও প্রশাসনিক সব কার্যক্রম থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
নিটার রেজিস্ট্রার আহমেদ ইকবাল রেজার স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে গত ০৫ মার্চ অব্যাহতির বিষয়টি শিক্ষক বুরহান উদ্দিন বান্নাকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। তিনি প্রতিষ্ঠানটির টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষক। বিষয়টি কয়েকদিন আগেরও হলেও সম্প্রতি এটা নিয়ে জানাজানি হয়। তার এমন শাস্তিতে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার্থীরা।
বান্নাকে দেওয়া প্রতিষ্ঠানটির চিঠিতে বলা হয়েছে, গত ২০ ফেব্রুয়ারি আপনার ব্যক্তিগত ফেসবুক আইডিতে ২১ ফেব্রুয়ারিতে শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণকে কেন্দ্র করে একটি পোস্ট কপি করে নিজ টাইমলাইনে শেয়ার করেন, যা ধর্মীয় উস্কানিমূলক এবং ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানার শামিল বলে প্রতীয়মান।
‘‘এরূপ কর্মকাণ্ডের ফলে ইনস্টিটিউটের সনাতন ধর্মাবলম্বী শিক্ষার্থীদের মধ্যে অসন্তোষের সৃষ্টি হয়। একজন সিনিয়র শিক্ষক হিসেবে আপনার এরূপ কর্মকাণ্ড কোনোভাবেই কাম্য নয়।’’
এতে আরও বলা হয়েছে, বিষয়টির গুরুত্ব বিবেচনায় গত ২৮ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত কোঅর্ডিনেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (সিঅ্যান্ডডি) কমিটির ৩০তম সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত আপনার উপর অর্পিত সকল প্রকার একাডেমিক ও প্রশাসনিক দায়িত্ব হতে অব্যাহতি প্রদান করা হলো।
মূলত নিটারের সহকারী অধ্যাপক বুরহান উদ্দিন বান্না যে পোস্টটি শেয়ার করেছেন সেটার মূল লেখক ছিলেন শামসুল আরেফিন শক্তি নামের এক চিকিৎসক। যিনি সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ থেকে পড়াশোনা শেষ করে সেখানেই কর্মরত রয়েছেন।
ওই পোস্টে লেখা ছিল, ‘‘একুশে ফেব্রুয়ারি উদযাপনে যারা অংশগ্রহণ করেন তাদের প্রায় নববই শতাংশ মুসলমান। কিন্তু এ দিবস উদযাপন উপলক্ষ্যে যা করা হয় তা মুসলমানদের আকিদা-বিশ্বাসের সাথে কতটুকু সঙ্গতিপূর্ণ, তা ভেবে দেখার প্রয়োজন আছে। শহীদ মিনারকেন্দ্রিক অনুষ্ঠানের অনেক কিছুরই মিল আছে হিন্দুদের পূজা-পার্বণের সাথে।...’’
নিটারের শিক্ষার্থীরা বলছেন, অন্যের লেখা শেয়ার করার মতো এমন লঘু কাজে গুরু দণ্ড কোনোভাবে যায় না। নিটারের এমন সিদ্ধান্ত ব্যক্তি স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপের শামিল। তারা বলেন, যার পোস্ট কপি করেছে, তিনি কিন্তু সরকারি চাকরি নির্দ্বিধায় করে যাচ্ছেন। তার কোনো ঝামেলা হচ্ছে না।
জানতে চাইলে নিটারের প্রক্টর মোহাম্মদ ফতেহ আলী খান পন্নি দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, শিক্ষার্থীদের একটি পক্ষের দাবির প্রেক্ষিতে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বর্তমানে তার শেয়ার করা ফেসবুক পোস্ট নিয়ে তদন্ত চলছে। তার বিষয়ে প্রশাসনের এটা কোনো স্থায়ী সিদ্ধান্ত নয়। তদন্ত চলাকালীন তাকে অ্যাকাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে।