অছাত্ররা হল না ছাড়লে সনদ বাতিল, ফের ঘোষণা দিল জাবি প্রশাসন

সংবাদ সম্মেলন
সংবাদ সম্মেলন  © টিডিসি ফটো

আগামী ১৭ এপ্রিলের মধ্যে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) ছাত্রত্ব শেষ হওয়া, অনিয়মিত ও মেয়াদোত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হল না ছাড়লে তাদের শিক্ষা সনদ বাতিল এবং রাষ্ট্রীয় আইনে মামলা করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন উপাচার্য অধ্যাপক মো. নূরুল আলম। সোমবার (১৮ মার্চ) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন প্রশাসনিক ভবনের কাউন্সিল কক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

উপাচার্য অধ্যাপক মো. নূরুল আলম বলেন, হলগুলোতে শান্তি ও শৃঙ্খলা ফেরাতে সব ধরনের প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। অন্য হলের শিক্ষার্থীদের চিহ্নিত করে তাদের নামে বরাদ্দকৃত হলে যেতে বলা হয়েছে। বিভিন্ন শিক্ষাবর্ষের অনিয়মিত শিক্ষার্থীর সংখ্যাও বের করা হয়েছে। এছাড়া সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্ত অনুসারে ছাত্রত্ব শেষ হওয়া, অনিয়মিত এবং মেয়াদোত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের আগামী ১৭ এপ্রিলের মধ্যে হল ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অন্যথায় তাদের শিক্ষা সনদ বাতিল এবং রাষ্ট্রীয় আইনে মামলা করা হবে।

আরও পড়ুন: অছাত্ররা হল ত্যাগ না করলে সনদ বাতিল করবে জাবি প্রশাসন

তিনি বলেন, অধিকাংশ অবৈধ, মেয়াদোত্তীর্ণ এবং অনিয়মিত শিক্ষার্থীরা হল ছেড়েছেন। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট ও প্রশাসনের নির্দেশনা উপেক্ষা করে কিছু সংখ্যক মেয়াদোত্তীর্ণ শিক্ষার্থী এখনও হলে অবস্থান করছেন। কিন্তু তারা ছাত্র, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক সংগঠনের নেতাকর্মী হলেও অনিয়মিত বা মেয়াদোত্তীর্ণ হলেই তাদের আবাসিক হল ছাড়তে হবে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এক্ষেত্রে কোনো ছাড় দিবে না।

উপাচার্য বলেন, ধর্ষণের ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে অভিযুক্তদের পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয় এবং রাষ্ট্রীয় আইনে মামলা দায়ের করা হয়। পরবর্তীতে সিন্ডিকেট সভায় তদন্ত প্রতিবেদনের সুপারিশের ভিত্তিতে ঘটনায় জড়িত শিক্ষার্থীদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে চিরতরে বহিষ্কার এবং তাদের শিক্ষা সনদ বাতিল করা হয়েছে।

পাবলিক হেলথ এন্ড ইনফরমেটিক্স বিভাগের শিক্ষক মাহমুদুর রহমান জনিকে চাকরিচ্যুতির বিষয়ে উপাচার্য বলেন, ‘একজন শিক্ষকের বিরুদ্ধে ওঠা যৌন নিপীড়নের অভিযোগ যথাযথ কমিটি কর্তৃক তদন্তের পর অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যাওয়ায় তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের চাকরি থেকে স্থায়ীভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট থেকে তার নাম প্রত্যাহার করা হয়েছে এবং তিনি ইতোমধ্যে ক্যাম্পাসের বাসা ছেড়ে চলে গেছেন।

দীর্ঘদিন ধরে চলমান শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের বিষয়ে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে চলমান ঘটনা প্রবাহে কয়েকটি দাবি উল্লেখপূর্বক শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের একটি অংশ আন্দোলন করছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সেসব বিষয়ে ওয়াকিবহাল এবং বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট সেসব বিষয়ে ইতোমধ্যে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিয়েছে এবং তদনুযায়ী প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হয়েছে। এছাড়া প্রশাসনিক কার্যক্রমের স্বচ্ছতা ও গতিশীলতার জন্য দু’একটি পদে পরিবর্তনের বিষয়টিও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ইতিবাচক হিসেবে গ্রহণ করেছে।

সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যদের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক শেখ মো. মনজুরুল হক, উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক মোহাম্মদ মোস্তফা ফিরোজ, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক রাশেদা আখতার, বিভিন্ন অনুষদের ডিন, রেজিস্ট্রার মো. আবু হাসান, প্রক্টর, আবাসিক হল সমূহের প্রাধ্যক্ষ, বিভিন্ন বিভাগের চেয়ারম্যান ও বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্য শিক্ষকরা উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে, ১০ মার্চ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. নূরুল আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেট সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার আবু হাসান বলেছিলেন, আজকের সিন্ডিকেট সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আগামী ১৭ এপ্রিলের মধ্যে ছাত্রত্ব শেষ হওয়া শিক্ষার্থীরা নিজ নিজ হল ত্যাগ করতে হবে। ত্যাগ না করলে এসব শিক্ষার্থীদের সনদ স্থায়ীভাবে বাতিল করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

তিনি আরও জানান, এর পরেও যদি নির্ধারিত সময়ে কেউ হল ত্যাগ না করে তাহলে তাদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয় আইনে মামলা করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

তার আগে, গত ৩ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ধর্ষণের ঘটনার প্রেক্ষিতে ৪ ফেব্রুয়ারি উপাচার্যের নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত বিশেষ সিন্ডিকেট সভায় ৫ দফা সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। তার মধ্যে ছাত্রত্ব শেষ হওয়া অছাত্রদের পরবর্তী ৭ দিনের মধ্যে হল ত্যাগের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।

তবে এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে প্রশাসনের দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ না থাকায় এখন পর্যন্ত আন্দোলন চলমান রেখেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের একাংশ।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence