নারী দিবসে বৌদ্ধ নেত্রীর শাড়ি টানাহেঁচড়া চবি অধ্যাপকের, ভিডিও ভাইরাল
- চবি প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ১০ মার্চ ২০২৪, ১২:৫৭ PM , আপডেট: ১০ মার্চ ২০২৪, ০১:০০ PM
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) পালি বিভাগের অধ্যাপক ড. জিনবোধি ভিক্ষুর বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় রেখা রানী বড়ুয়া নামে মহিলা বৌদ্ধ সমিতির ওই নেত্রী থানায় অভিযোগ করেছেন। তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করে অধ্যাপক জিনবোধিও থানায় পাল্টা অভিযোগ করেছেন।
শুক্রবার (৮ মার্চ) সকাল সাড়ে ১০টায় আন্তর্জাতিক নারী দিবসে চট্টগ্রাম বৌদ্ধ বিহারে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে একজন নারীর শাড়ি নিয়ে টানাহেঁচড়া করতে দেখা গেছে ড. জিনবোধি ভিক্ষুকে। শুরুতে জিনবোধির সাথে ওই নারীর তর্কবিতর্ক হয়। একপর্যায়ে ওই নারী ও জিনবোধি দু’জন দুজনের দিকে তেড়ে যান। পরে এক পর্যায়ে তাদের মধ্যে হাতাহাতি হয়।
রেখা রানী বড়ুয়া জানান, অধ্যাপক জিনবোধি ভিক্ষু গত শুক্রবার সকাল সাড়ে দশটায় চট্টগ্রাম বৌদ্ধ বিহারে তার শাড়ি টেনে শ্লীলতাহানি করেছেন। একইসঙ্গে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করেন। শ্লীলতাহানির প্রতিকার চেয়ে জিনবোধি ভিক্ষু ও কয়েকজনের নাম উল্লেখ করে তিনি নগরীর কোতোয়ালী থানায় একটি অভিযোগ করেছেন তিনি।
ড. জিনবোধি ভিক্ষু সম্প্রতি শিক্ষায় একুশে পদক পেয়েছেন। অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, অবৈধ, অনির্বাচিত এবং বৌদ্ধ মন্দির জালিয়াতকারী ওরা। জজকোর্ট থেকে হাইকোর্ট আমাদের পক্ষে রায় দিয়েছেন। তাদের অবৈধ ঘোষণা করেছেন আদালত। এ বৌদ্ধ বিহারের আমি সভাপতি। কিন্তু তারা কোনো ভক্ত বা গুরুজনদের ঢুকতে দিচ্ছেন না।
আরও পড়ুন: চবি অধ্যাপকের বিরুদ্ধে ছাত্রীকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগ
যৌন হয়রানির অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি বলেন, আমি ৬৪ বছর বয়সী একজন শিক্ষক। উনি আমার বোন, উনার ছেলেমেয়ে মানুষ করেছি আমি। আমি যৌন হয়রানিতে জড়িত না।
পাল্টাপাল্টি অভিযোগ নিয়ে কোতোয়ালি থানার ওসি এসএম ওবায়েদুল হক সাংবাদিকদের বলেন, নেতৃত্বে নিয়ে বিবদমান দুপক্ষের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছে। এ নিয়ে শুক্রবার উভয়পক্ষের মধ্যে ধাক্কাধাক্কির ঘটনা ঘটেছে। উভয়পক্ষই থানায় জিডি করেছেন। বিষয়টি তদন্তাধীন।
চট্টগ্রাম বৌদ্ধ বিহারের অধ্যক্ষ বাংলাদেশি বৌদ্ধদের সর্বোচ্চ ধর্মীগুরু ড. জ্ঞানশ্রী মহাথের ও চট্টগ্রাম বৌদ্ধ বিহারের আবাসিক প্রধান শিক্ষাবিদ এম বোধিমিত্র মহাথের বলেন, মহামানব গৌতম বুদ্ধের মতে গৃহত্যাগের পর বৌদ্ধ সন্ন্যাসীরা যেখানে কোনোরকম গৃহি মানুষের সংস্পর্শে যেতে পারেন না, সেখানে একজন নারীর সম্ভ্রম ও শ্লীলতাহানি কোনোভাবে সমর্থন যোগ্য নয়। তিনি এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানান।
এদিকে, শুক্রবারের ওই ঘটনায় জড়িতদের শাস্তির দাবিতে শনিবার (৯ মার্চ) নগরে বিভিন্ন স্থানে প্রতিবাদ সমাবেশ ও মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। চট্টগ্রাম নগরের নন্দনকানন বৌদ্ধ বিহারের সামনে বিক্ষোভ মিছিল করে বাংলাদেশ সংঘরাজ ভিক্ষু মহাসভা। এছাড়া চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব চত্বরে বিভিন্ন সংগঠনের ব্যানারে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।