লাইব্রেরিতে মারামারি করেন ঢাবি ছাত্রীরা, জবি ছাত্রীরা কিচেনে

লোগো
লোগো  © ফাইল ছবি

সাম্প্রতিক সময়ে শিক্ষা ও গবেষণার চেয়ে নেতিবাচক ঘটনায় যেন বেশি শিরোনাম হচ্ছে দেশের উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো। আগে ছাত্রদের মধ্যে মারামারি-সংঘর্ষের ঘটনা ঘটলেও এবার আরেক ধাপ এগিয়ে মারামারিতে জড়িয়েছেন ছাত্রীরা। গেল কয়েকদিনের ব্যবধানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রীরা নিজেরা নিজেরা মারামারিতে জড়িয়েছেন। এসব মারামারির ঘটনায় তাদের শাস্তির মুখেও পড়তে হয়েছে।

সর্বশেষ গত ৫ মার্চ (মঙ্গলবার) জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের কিচেনে ইতি খাতুন নামে এক ছাত্রীকে মারধর করেছেন তাসমিম সানজানা সৃষ্টি নামে আরেক ছাত্রী। ইতি বিশ্ববিদ্যালয়ের  সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ১৫ ব্যাচের শিক্ষার্থী অন্যদিকে সৃষ্টি বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগীত বিভাগের ১২ ব্যাচের শিক্ষার্থী।

কিচেনে মারধরের বর্ণনা দিয়ে ইতি খাতুন বলেন, সেদিন আমি রান্না ঘরে ছিলাম। এসময় সৃষ্টি আপু ডিম ভাজতে চাইলে ছেড়ে দিই। কিন্তু রান্না শেষ করতে দেরি হওয়ায় এবং আমার ক্লাসের সময় হওয়ায় দ্রুত রান্না শেষ করতে বলি। কিন্তু আমি জুনিয়র বলে আমাকে অকথ্য ভাষায় গালি দেন। আমার বাবা-মা তুলে গালি দেন।

তিনি বলেন, আমি গালিগালাজের প্রতিবাদ করায় এক পর্যায়ে আমাকে চড়-থাপ্পড় ও কিল-ঘুষি শুরু করেন তিনি। তার মারধরে আমি জ্ঞান হারিয়ে ফেলি।

আরও পড়ুন: লাইব্রেরিতে পড়তে এসে মারামারিতে জড়ালেন ঢাবির দুই ছাত্রী

তবে ইতিকে মারধরের এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তাসমিম সানজানা সৃষ্টি। তিনি বলেন, ‘জুনিয়র হয়ে ইতি বেয়াদবি করেছে। আমার দিকে তেড়ে এসেছে। আমি কি বসে থাকব! আমিও মার খেয়েছি, আমিও লিখিত অভিযোগ দেব।’

এর আগে, গত ৪ মার্চ (সোমবার) দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের দুই নারী শিক্ষার্থীর মাঝে মারামারির ঘটনা ঘটে। সকালে হলের ঝামেলাকে কেন্দ্র করে লাইব্রেরিতে পড়তে এসে রুকাইয়া খাতুন নামে এক নারী শিক্ষার্থীর উপর হামলা করেন হাসনা হেনা তমা নামে আরেক শিক্ষার্থী। তবে অভিযুক্ত হাসনা হেনা বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নয়।

মারধরের শিকার রুকাইয়া খাতুন বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৭-১৮ সেশনের শিক্ষার্থী। তিনি রোকেয়া হলে থাকেন। অন্যদিকে অভিযুক্ত তমা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১০-১১ সেশনের বলে নিজকে দাবি করছেন।

রুকাইয়া খাতুন বলেন, মাঝে মাঝেই উনি সকালে আমাদের হলে নাস্তা করেন। আজও করছিলেন। যেহেতু আমাদের হলে লাইন ধরে খাবার নিতে হয়, আমরা লাইনেই ছিলাম। প্রথমত উনি লাইন ভেঙেছেন দ্বিতীয়ত উনি বেশি খাবার খেয়ে যখন ২০ টাকা দিচ্ছিলেন তখন আমি সেটার প্রতিবাদ করায় উনি আমার উপর রেগে যান।

আরও পড়ুন: জবি হলের কিচেনে সিনিয়রের মারধরে অজ্ঞান জুনিয়র ছাত্রী

রুকাইয়া বলেন, পরবর্তীতে এটা নিয়ে আর কিছু ঘটেনি। কিন্তু লাইব্রেরিতে আসার পর তিনি আমাকে এ ব্যাপারে কথা বলার জন্য নিচে ডাকলে আমি বুঝতে পারি তিনি রাগান্বিত। পরে আমি যেতে না চাইলে আমাকে সেখানেই মারধর করেন। আমি এই ঘটনার বিচার চাই।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের দুই নারী শিক্ষার্থীর মারামারি নিয়ে প্রক্টর অধ্যাপক মাকসুদুর রহমান বলেন, অভিযুক্ত নারীও মানসিক হতাশায় ভুগছেন। আমি তার স্বামীকে বলেছি, তিনি একটা লিখিত দিয়ে যাবেন— তার স্ত্রী আর বিশ্ববিদ্যালয়ে আসবেন না। একইসঙ্গে যাকে মারধর করা হয়েছে তার কাছে ক্ষমা চেয়ে চলে যাবেন।

জবিতে মারামারি করে সিট হারালেন এক ছাত্রী
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রীদের মারামারির ঘটনা দৃশ্যমান কোনো শাস্তির ব্যবস্থা না হলেও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে নেওয়া হয়েছে ব্যবস্থা। বিশ্ববিদ্যালয়ের বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলে ছাত্রীকে মারধরের ঘটনায় অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় অভিযুক্ত তাসমিম সানজানা সৃষ্টির হলের সিট বাতিল করা হয়েছে। তাকে স্থায়ীভাবে হল ত্যাগের নির্দেশ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

হলটির প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. দীপিকা রানী সরকার বলেন, শৃঙ্খলা কমিটিতে ঘটনার সত্যতা পাওয়ায় অভিযুক্ত ছাত্রীর হলের সিট বাতিলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এমন ছোট ঘটনাকে কেন্দ্র করে মারামারি কোনোভাবেই কাম্য নয়। পাশে একটা চুলা ছিল, চাইলে তারা পরিবর্তন করে অন্য চুলায় রান্না করতে পারতো। কিন্তু তারা সেটা না করে মারামারিতে জড়িয়েছে।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence