আবাসন সংকট নিরসনের দাবিতে রাতভর আন্দোলন ঢাবি হলের ছাত্রীদের

ছাত্রীদের সঙ্গে কথা বলছেন ঢাবি উপাচার্য
ছাত্রীদের সঙ্গে কথা বলছেন ঢাবি উপাচার্য  © টিডিসি ফটো

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) কুয়েত মৈত্রী হলের আবাসন সংকট নিরসনের দাবিতে গভীর রাত পর্যন্ত অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন ছাত্রীরা। প্রথমে মৈত্রী হলের অফিসের সামনে পরে উপাচার্য ভবনের সামনে এসে ছাত্রীরা বিক্ষোভ শুরু করেন। দীর্ঘদিন ধরে চলতে থাকা সিটসংকট সমস্যার সমাধান, হলে পড়াশোনার সুষ্ঠু পরিবেশ তৈরিসহ বেশ কয়েকটি দাবি জানান তারা।

মঙ্গলবার (১৬ জানুয়ারি) রাত ৮টা থেকে ছাত্রীদের আন্দোলন শুরু হয়। মাস্টার্সের মেয়েদের ডাবলিং করার সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ, রিডিংরুমের বিকল্প ব্যবস্থা না করে মনোয়ারা ভবন ভাঙার প্রতিবাদসহ হলের নানা সংকট সমাধানের দাবিতে ছাত্রীরা প্রথমে হল অফিসের সামনে অবস্থান নেন।

তারা জানান, আন্দোলনে হল কর্তৃপক্ষ তাদের সাথে কোনো যোগাযোগই করেনি। হল প্রশাসনের কোনো প্রতিক্রিয়া না পেয়ে পরে রাত সাড়ে ১২টার দিকে শিক্ষার্থীরা বিক্ষুব্ধ হয়ে উপাচার্য ভবনের দিকে আসতে চাইলে মূল ফটকে তালা দেয় প্রক্টরিয়াল টিম। এরপর মেয়েরা তালা ভেঙে মিছিল নিয়ে উপাচার্য এসে জড়ো হয়।

এদিকে, ছাত্রীদের আসার খবরে গভীর রাতে বাসা থেকে নেমে এসে উপাচার্য অধ্যাপক ড. এএসএম মাকসুদ কামাল আগামী ৭ দিনের মধ্যে সমাধানের আশ্বাস দিলে রাত পৌনে ২টার দিকে ছাত্রীরা হলে ফিরে যান শিক্ষার্থীরা।

এর আগেও গত বছরের আগস্টে হলের সিটসংকট সমাধানে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করেন। সে সময় সাবেক উপাচার্য মো. আখতারুজ্জামান সিটসংকট সমাধানের আশ্বাস দেন। তবে সম্প্রতি ভূমিকম্প সংঘটিত হওয়ার পর হলের মনোয়ারা ভবন থেকে ছাত্রীদের অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া শুরু করে হল প্রশাসন। হলের প্রধান ভবনের ছয়জনের রুমে সাতজন করে দেওয়া হচ্ছে। এ নিয়ে হলের আবাসিক ছাত্রীরা নতুন করে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

এদিনের আন্দোলন নিয়ে ছাত্রীরা বলেন, আন্দোলনের সময় বলা হয়েছিল আমাদের দাবি মেনে নেওয়া হয়েছে। অন্যত্র ছাত্রীদের সরিয়ে নেওয়া হবে। তবে এখন আবার তারা ছয়জনের রুমে সাতজনকে সিট দিচ্ছে। এটা নিয়ে তাদের সঙ্গে কথা বলতে গেলে তারা সিট কেটে দেওয়ার হুমকি দিচ্ছে। আমাদের সঙ্গে খুব বাজে ব্যবহার করেছেন ম্যামরা।

মাস্টার্সের শিক্ষার্থী নুসরাত ইমরোজ বলেন, হলে সিটসংকট অনেক। রিডিংরুমে পড়ার জন্য জায়গা পাওয়া যায় না। আলাদা কোনো রান্নাঘর না থাকায় রুমেই আমাদের রান্না করতে হয়। রুমেই পড়াশোনা করতে হয়। এ জন্য আমরা কিছুদিন আগে দাবি তুলেছিলাম এক রুমে ছয়জনের বেশি থাকবে না। সেই দাবি তখন মেনে নিলেও এখন আবার শীতকালীন ছুটির সুযোগে প্রতিটি রুমে একজন করে ছাত্রীকে সিট দেওয়া হচ্ছে।

মাস্টার্সের শিক্ষার্থী লিমা আক্তার বলেন, মাত্র দুই মাস আগে আমাকে সিঙ্গল সিট দেওয়া হয়েছিল। এখন আমার সঙ্গে আবারও ডাবলিং করতে বলে অন্য এক ছাত্রীকে সিট দিয়েছে। এটা নিয়ে ম্যামদের সঙ্গে কথা বলতে গেলে তাঁরা আমার গার্ডিয়ানকে ফোন দেওয়ার হুমকি দেন। সিট কেটে দেওয়ার হুমকি দেন। উপাচার্য স্যারের নির্দেশে আমায় ডাবলিং করে থাকতে বলেন। না হলে সিট কেটে দেওয়ার হুমকি দেন আমাকে।

ছাত্রীদের দাবির বিষয়ে তারা বলেন, আমরা চাই হলের সিটসংকট সমাধান করুক। হলে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ তৈরি করুক। আমাদের সঙ্গে ম্যামদের খারাপ ব্যবহার বন্ধ হোক।

জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এ এস এম মাকসুদ কামাল বলেন, ভূমিকম্পের পরে আমি নিজে হল পরিদর্শনে গিয়েছি। ঝুঁকিপূর্ণ ভবন থেকে ছাত্রীদের সরিয়ে নেওয়ার কাজ চলমান রয়েছে। হল প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলে এর একটি সুন্দর সমাধান করা হবে। রাতে ছাত্রীদের সঙ্গে প্রশাসনের কথা হয়েছে। তারা আমাদের আশ্বাসে হলে ফিরে গেছেন।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence