শিবির সন্দেহে ছাত্রকে পিটিয়ে পুলিশে সোপর্দ, বিকাশে পরিবার থেকে নিল টাকাও

অভিযোগ চবি ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে

  © লোগো

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) এক শিক্ষার্থীকে শিবিরের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত সন্দেহে ক্যাম্পাস সংলগ্ন কটেজের একটি বাসা থেকে ধরে নিয়ে মারধরের পর পুলিশে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে শাখা ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে। এসময় ওই শিক্ষার্থীর পরিবারের কাছ থেকে সাড়ে ১৩ হাজার টাকা চাঁদা নেওয়া হয়েছে।

পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়েরকৃত ভাঙচুরের মামলায় আদালতে পাঠানো হয়েছে শিক্ষার্থীকে। বুধবার (১৩ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় আদালতে প্রেরণের বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেন হাটহাজারী থানার ওসি মনিরুজ্জামান।

গত সোমবার (১১ ডিসেম্বর) রেলগেট এলাকা থেকে রাত দেড়টার দিকে শিবির সন্দেহে কটেজ থেকে মনিরুল ইসলামসহ দুই শিক্ষার্থীকে তুলে ক্যাম্পাসে আনে ছাত্রলীগ কর্মীরা। পরে অন্যজনের মোবাইল ফোন চেক করে তথ্যপ্রমাণ না পেলে একজনকে ছেড়ে দেয়। চবি ছাত্রলীগের উপগ্রুপ সিক্সটি নাইনের অনুসারীরা এ ঘটনায় জতিড় বলে জানা গেছে। 

এসময় সময় উপস্থিত ছিলেন বাংলা বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী আকিব জাভেদ, সমাজতত্ব বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের  শিক্ষার্থী ইবনুল জাররাহ, অর্থনীতি বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী আবু সাইদ শাকিলসহ কয়েকজন। 

এছাড়া ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের ২০১৮-১৯ সেশনের মাহমুদুল হাসান ইলিয়াস ও ইতিহাস বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের অনুপ সরকার আকাশ পরে ঘটনাস্থলে যান বলে জানা গেছে। 

মনিরুল ইসলামের পরিবার ও সহপাঠী থেকে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের রেল ক্রসিং এলাকার আলতাব কটেজে মনিরুল থাকতেন। ছাত্রলীগের অনুসারীরা গত সোমবার রাত ১টার দিকে তাকে তুলে নিয়ে যান। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু হলের পেছনে নিয়ে কয়েক দফায় মারধর করেন। একপর্যায়ে ৫০ হাজার টাকা দাবি করে। মনিরুল তার পরিবারকে বিষয়টি জানালে তারা এতো টাকা দিতে পারবে না বলে জানান। পরবর্তীতে ছাত্রলীগ কর্মীরা ১৫ হাজার টাকা দাবি করেন। অন্যথায় শিবির পরিচয়ে পুলিশে তুলে দেওয়ার হুমকি দেওয়া দেয়। এসময় মনিরুলের পরিবার ৩ দফায় সর্বমোট ১৩ হাজার ৫০০ টাকা একটি বিকাশ নম্বরে (01606746041) পাঠায়। টাকা পেলে তাকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয় বলে জানিয়েছেন তার পরিবার।

চাঁদা আদায়ের বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত আকিব জাভেদ ও আবু সাইদ শাকিলকে একাধিকবার ফোন করলে তারা ফোন ধরেননি।

অভিযুক্ত ইবনুল জাররাহ বলেন, আমাদের ছোট ভাইয়েরা শিবির সন্দেহে একজনকে ধরে আনে। তার কাছে শিবিরের মাসিক রসিদ, টোকেন এবং শিবিরের আরও যাবতীয় অনেক তথ্য ছিল। মারধরের বিষয়ে তিনি বলেন, ছোট ভাইয়েরা উত্তম মধ্যম দিয়েছে। আর চাঁদার বিষয়টি সম্পূর্ণ মিথ্যা। একজন ছাত্রলীগ কর্মী কখনো শিবির থেকে চাঁদা নিতে পারে না । 

ছাত্রলীগ কর্মী মাহমুদুল হাসান ইলিয়াস বলেন, সকালে আমি নামাজে যাওয়ার সময় দেখি পুলিশ বক্সে ঝামেলা হচ্ছে। গিয়ে দেখি একজনকে আটক করা হয়েছে। সে সাবলীল ভাবেই স্বীকার করেছে যে সে শিবির করে। এর বেশি কিছু জানি না। 

হাটহাজারী থানার ওসি মনিরুজ্জামান গণমাধ্যমকে বলেন, শিবির সন্দেহে আটককৃত শিক্ষার্থীকে বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্যের বাসভবন ও পরিবহণ ভাঙচুর মামলার তদন্তপ্রাপ্ত আসামি হিসেবে আদালতে পাঠানো হয়েছে। 

ভাঙচুরের সঙ্গে জড়িত থাকার কোনো প্রমাণ পাওয়া গেছে কিনা, জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ বিষয়ে আদালত যদি আমাদের কাছে জানতে চায়, তখন আমরা জবাব দেবো।

উল্লেখ্য, গত ৭ আগস্ট রাতে চবির শাটল ট্রেন দুর্ঘটনার পর ক্যাম্পাসে ব্যাপক ভাঙচুর চালানো হয়। সে রাতে ছাত্রলীগ কর্মীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬৫টি যানবাহনসহ উপাচার্যের বাসভবন, শিক্ষক ক্লাব ও পুলিশ বক্স ভাঙচুর করে। এ ঘটনায় ১৪ জনের নাম উল্লেখ করে দুটি মামলা করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। যার মধ্যে ১২ জনই ছিলেন শাখা ছাত্রলীগের কর্মী।  


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence