যোগাযোগের চেষ্টা মেসেঞ্জার-ফোনে, অধ্যাপকের দাবি— ছাত্রীকে চেনেন না!
ঢাবিতে যৌন হয়রানি
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ০৩ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৯:১৩ PM , আপডেট: ০৩ ডিসেম্বর ২০২৩, ১০:১২ PM
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের ছাত্রীকে নিজ কক্ষে পরামর্শের জন্য ডেকে এক অধ্যাপকের বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়ন করার অভিযোগ উঠার পর আন্দোলনে নেমেছেন শিক্ষার্থীরা। সর্বশেষ আজ রবিবারও ক্যাম্পাসে আন্দোলন করেছেন তারা। এ ঘটনা তদন্তে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে একটি কমিটিও গঠন করা হয়েছে।
অভিযুক্ত ওই অধ্যাপকের নাম নুরুল ইসলাম। তবে তিনি এ ঘটনায় সম্পূর্ণ নির্দোষ দাবি করে ভুক্তভোগী ওই নারী শিক্ষার্থী কখনও দেখেননি এবং চেনেনও না বলে জানিয়েছেন। যদিও দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসের হাতে ভুক্তভোগী নারী শিক্ষার্থীকে ওই অধ্যাপকের ফোন দেওয়ার কললিস্ট ও ফেসবুকের মেসেঞ্জারে নক (মেসেজ পাঠানো) দেওয়ার প্রমাণ রয়েছে।
এর আগে বিশ্ববিদ্যালয় ভিসি বরাবর দেয়া ওই ছাত্রীর অভিযোগপত্রে উল্লেখ ছিল, “গত ১১ সেপ্টেম্বর হল বিষয়ে পরামর্শ নেওয়ার জন্য ইনস্টিটিউটের অফিস কক্ষের সামনে গেলে তিনি (অধ্যাপক নুরুল ইসলাম) আমাকে নিজে থেকে তার কক্ষে ডাকেন। তখন আমি স্যারের কক্ষে যাই। স্যার আমাকে প্রয়োজনীয় দু’একটা কথা বলার পরপরই অপ্রাসঙ্গিক কথা বলতে শুরু করেন। এসময় তিনি আমার ব্যক্তিগত ফোন নাম্বার নেন এবং একরকম জোর করেই আমার মেসেঞ্জারে নক করেন এবং যুক্ত হন।”
দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসের হাতে ওই প্রমাণে দেখা যায়, ঘটনার দিন (১১ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১টা ১৬ মিনিটে অভিযুক্ত শিক্ষকের অফিসিয়াল মুঠোফোন নাম্বার থেকে ওই ছাত্রীর ফোনে একটি কল আসে। এরপর ২টা ৪৮ মিনিটে আরেকটি কল আসে ওই ছাত্রীর নম্বরে। তখন ১ মিনিট ১৭ সেকেন্ড কথা হয়।
প্রমাণে আরও দেখা যায়, অভিযুক্ত শিক্ষক তার ফেসবুক আইডি মো: নুরুল ইসলাম (ইংরেজি) থেকে ওই ছাত্রীর মেসেঞ্জারে দুপুর ১টা ২০ মিনিটে ‘হাই’ এবং ১টা ২১ মিনিটে ‘গুড নুন’ লিখে মেসেজ পাঠান।
ঘটনার বিষয়ে জানতে আজ রবিবার দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস যোগাযোগ করেছিল অভিযুক্ত অধ্যাপক নুরুল ইসলামের সঙ্গে। এসময় তিনি জানান, তিনি এই মেয়েকে চেনেন না এবং কখনো দেখেননি।
ওই ছাত্রীকে মেসেঞ্জার ও ফোনে কল দেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এগুলো কোনো প্রমাণ নয়। এগুলো সম্পূর্ণ মিথ্যা। আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হচ্ছে।
আরও পড়ুন: পরামর্শের জন্য শিক্ষকের কক্ষে গিয়ে যৌন হয়রানির শিকার ঢাবি ছাত্রী
এ প্রতিবেদকের কাছে মেসেঞ্জার ও ফোনে কলের প্রমাণ রয়েছে বললে তিনি জানান, সে (ছাত্রী) আমার সাথে উদ্দেশ্যমূলক দেখা করেছে। তখন তার কাছে জানতে চাওয়া হয় আপনি তাকে চেনেন না তাহলে আপনার সাথে উদ্দেশ্যমূলক কিভাবে দেখা করেছেন। এসময় তিনি ফোন কেটে দেন।
উল্লেখ্য, অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে এর আগেও যৌন নিপীড়নের অভিযোগ রয়েছে। চলতি বছরে জানুয়ারি মাসেও এক নারী শিক্ষার্থীকে যৌন হয়রানির অভিযোগ ছিল। এর আগে ২০১৪ সালে মে মাসেও এক নারী শিক্ষার্থীকে যৌন হয়রানির অভিযোগ ছিল ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে।