জাবিতে প্রথমবারের মতো স্বাস্থ্যবিমা, এক ব্যাচ ছাড়া বঞ্চিত বাকি শিক্ষার্থীরা
৩৯০ টাকা প্রিমিয়ামে বছরে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা
- জোবায়ের আহমেদ, জাবি প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ০২ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৪:৪৯ PM , আপডেট: ১২ আগস্ট ২০২৫, ০১:০১ PM
প্রতিষ্ঠার ৫ দশক পরে প্রথমবারের মতো শিক্ষার্থীদের জন্য স্বাস্থ্যবিমা চালু করেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) কর্তৃপক্ষ। তবে বিমায় সকল শিক্ষার্থীকে অন্তর্ভুক্ত না করায় এ নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন শিক্ষার্থীরা। গত বুধবার (২৯ নভেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে জেনিথ ইসলামী লাইফের সমঝোতা স্মারক চুক্তি স্বাক্ষরের মধ্য দিয়ে এ স্বাস্থ্যবিমা চালুর ঘোষণা দেওয়া হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. রাশেদা আখতার এবং জেনিথ ইসলামী লাইফের পক্ষে প্রতিষ্ঠানটির মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম নুরুজ্জামান এ সমঝোতা স্মারকে স্বাক্ষর করেন।
এসময় কোষাধ্যক্ষ বলেন, এ সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষরের মধ্য দিয়ে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা স্বাস্থ্য বিমার আওতায় এসেছে। শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যসুরক্ষায় নতুন এক মাইলফলক সৃষ্টি হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আনন্দিত।
এদিকে সদ্য ভর্তিকৃত ২০২২-২৩ সেশনের (৫২ ব্যাচ) শিক্ষার্থীরা ছাড়া বর্তমান কোনো শিক্ষার্থীদের এই বিমার আওতায় অন্তর্ভুক্ত না করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অন্তর্ভুক্তির বাইরে থাকা শিক্ষার্থীরা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আকতারুজ্জামান সোহেল বলেন, কর্তৃপক্ষের এমন মহৎ উদ্যোগে সাধুবাদ জানাই। তবে এই সুবিধার আওতায় সকল শিক্ষার্থীরা থাকাটায় কাম্য। যেহেতু এই বিমায় অন্তর্ভুক্তির ফি প্রথম বর্ষে ভর্তির সময় নেওয়া হয়। সেহেতু বর্তমান শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে ওই পরিমাণ ফি এখন নিয়ে এই সুবিধার অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে। আমরা দাবি জানাই সকল শিক্ষার্থীরা যেন এই বিমার অন্তর্ভুক্ত হতে পারে।
ছাত্র ইউনিয়ন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আহ্বায়ক (একাংশ) আলিফ মাহমুদ বলেন, আমাদের দীর্ঘদিনের দাবি ছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যবিমার আওতায় আনা। এতদিন পর এটি প্রশাসনের বোধদয় হওয়ায় তাদেরকে ধন্যবাদ জানাই। তবে এ বিমায় অন্তর্ভুক্তির ক্ষেত্রে শুধু নবীনরা নয়, বর্তমান সকল শিক্ষার্থী থাকা বাঞ্ছনীয়। বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রত্ব আছে এমন সকল শিক্ষার্থীদের এর আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার আবু হাসান জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার সময় এই বিমায় অন্তর্ভুক্তির ফি নিয়ে নেওয়া হয়। তাই সহজেই প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের দিয়ে এই স্বাস্থ্যবিমা চালু করা হয়েছে মাত্র। তবে সিন্ডিকেট কর্তৃক এ বিষয়ক একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। এই কমিটি কিভাবে খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে বিমার আওতায় সকল শিক্ষার্থীদের যুক্ত করা যায়, এ নিয়ে একটি রিপোর্ট দিবেন। সেই রিপোর্ট সিন্ডিকেটের অনুমোদন সাপেক্ষে কার্যকর করা হবে।
এ বিষয়ে সমন্বয়কারী কর্মকর্তা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেপুটি কম্পট্রোলার মো. বশির আলম বলেন, নতুন চালু হওয়া এই স্বাস্থ্য বিমায় অন্তর্ভুক্ত হতে শিক্ষার্থীদের প্রিমিয়াম হিসেবে ৩৯০ টাকা জমা দিতে হবে। বিমার আওতায় কোনো শিক্ষার্থী মারা গেলে পাবে এককালীন ২ লাখ টাকা, জীবিত অবস্থায় হাসপাতালে বা ক্লিনিকে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিলে বছরে পাবে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা এবং হাসপাতালে বা ক্লিনিকে ভর্তি না হয়ে চিকিৎসা নিলে পাবে বছরে ১০ হাজার টাকা। তবে কোনো চেম্বারের চিকিৎসা নিলে হবে না। এটি অনুমোদিত কোনো হাসপাতাল অথবা ক্লিনিক হতে হবে।
বিমার অর্থ প্রদানের বিষয়ে তিনি বলেন, অর্থ প্রদান সম্পূর্ণ অনলাইনভিত্তিক হবে। শিক্ষার্থীরা চিকিৎসা নিয়ে তাদের চিকিৎসার প্রয়োজনীয় কাগজপত্রের ছবি তুলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে এ সংক্রান্ত লিংকে ক্লিক করে নিজস্ব আইডি থেকে আপলোড করে দিতে হবে। তখন আমরা কনফার্ম হয়ে ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির কাছে ফরওয়ার্ড করে দেবো। কোম্পানি সব কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করে অনলাইন ব্যাংকিং অথবা বিকাশের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের কাছে টাকা হস্তান্তর করবে।
উল্লেখ্য, এই চুক্তির ফলে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জেনিথ ইসলামী লাইফের জীবন ও স্বাস্থ্য বীমা সুবিধা ভোগ করতে পারবেন।