ছাত্রলীগের প্রোগ্রামের পর টিএসসিতে ককটেল বিস্ফোরণ, ছাত্রদল বলছে নাটক

টিএসসিতে ককটেল বিস্ফোরণ
টিএসসিতে ককটেল বিস্ফোরণ  © সংগৃহীত

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) টিএসসিতে আনন্দ র‍্যালি শেষ করে ফেরার পথে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের লক্ষ্য করে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। এতে কেউ হতাহত না হলেও আতঙ্ক দেখা দিয়েছে পুরো এলাকায়। আজ বুধবার (১৫ অক্টোবর) রাত ১০টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।

এ ঘটনাকে পরস্পরকে দায়ী করেছে শাখা ছাত্রলীগ ও ছাত্রদল। ছাত্রলীগ বলছে, ছাত্রদল প্রকাশ্যে ককটেল ফাটিয়েছে, যেটা তারা ক্যাম্পাসে সব সময়ই কায়েম করতে চায়। আর ছাত্রদল বলছে, এটা সম্পূর্ণ ছাত্রলীগের নাটক। 

প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, পরপর ৫টি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটে৷এরপর থেকে ক্যাম্পাসে উত্তপ্ত পরিস্থিতি বিরাজ করছে। এর আগে সন্ধ্যা ৭টায় আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশন ভবন থেকে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেন।

প্রত্যক্ষদর্শী স্যার এ এফ রহমান হল ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক আরিফ ইশতিয়াক রাহুল দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে জানান, আমরা টিএসসির গেটের কাছে আড্ডা দিচ্ছিলাম। হঠাৎ ককটেল বিস্ফোরণের মতো বিকট শব্দ হয়। কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই ৪-৫টি ককটেল বিস্ফোরণ হয়। আমরা শব্দ শুনে বুঝতে পেরে দ্রুত ওই স্থানে দৌড়ে যাই। ককটেল বিস্ফোরণ করে বাইকে করে পালিয়ে যাওয়ার সময় উপস্থিত সকলে হাতেনাতে ধরে ফেলি।

ঘটনাস্থলে উপস্থিত জগন্নাথ হল ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক অপূর্ব চক্রবর্তী জানান, আমরা প্রোগ্রাম শেষে ওখানেই ছিলাম। পরবর্তীতে বাইকে করে দুজন এসে কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরণ করে। এটা আসলে ঢাবি ক্যাম্পাসে কাম্য নয়। বাংলাদেশ ছাত্রলীগ যখন সংবিধানের আলোকে গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতায় ঘোষিত তফসিল পরবর্তী উল্লাসরত তখনই একটি গোষ্ঠী অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করতে এমন কাণ্ড ঘটিয়েছে। জনগণ থেকে প্রত্যাখ্যাত হয়ে বারংবার এই গোষ্ঠীর করা নানান অপতৎপরতা আমাদের কাছে একেবারেই নতুন নয়। বরাবরের মতো এবারেও তারা নিশ্চই পুরোপুরি  ব্যর্থ এবং নিশ্চিহ্ন হবে।

এ বিষয়ে ঢাবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে জানান, ছাত্রদল প্রকাশ্যে ককটেল ফাটিয়েছে যেটা তারা ক্যাম্পাসে সব সময়ই কায়েম করতে চায়। সাধারণ শিক্ষার্থীরা ধরে উত্তম-মধ্যম দিয়ে পুলিশে তুলে দিয়েছে। তারা কোনোভাবেই ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে পারছে না।

ছাত্রলীগের অবস্থান সম্পর্কে তিনি বলেন, ছাত্রলীগ ক্যাম্পাসের প্রতিটি জায়গায় সজাগ রয়েছে। তারা ক্যাম্পাসে প্রবেশ করা মাত্র ধরে ফেলা হচ্ছে। শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তায় ছাত্রলীগ সবসময় প্রস্তুত রয়েছে। 

ঘটনা সম্পূর্ণ অস্বীকার করে ঢাবি ছাত্রদলের সভাপতি খোরশেদ আলম সোহেল জানান, এটা সম্পূর্ণ ছাত্রলীগের নাটক। ছাত্রদলের কেউ ওখানে যায়নি। সাধারণ সময়েই ছাত্রদলকে তারা ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে দেয় না। আর আজ তাদের প্রোগ্রামের পর আময়াদের কেউ সেখানে কেন যাবে। এটা ছাত্রলীগের সম্পূর্ণ সাজানো। আমাদের কোনো নেতাকর্মী সেখানে ছিল না।

বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে ককটেল বিস্ফোরণের বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক মাকসুদুর রহমান দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে জানান, এতো মানুষের ভেতরে আসলে কে ককটেল বহন করছে শনাক্ত করা কঠিন। তবে শিক্ষার্থীরা তিনজনকে ধরে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে এ ধরনের ঘটনা আসলে শিক্ষার্থীদেরকে আতঙ্কিত করার জন্যই করা হয়েছে। তবে আমরা নিরাপত্তার সজাগ আছি। আমরা ইতিমধ্যে সিসি ক্যামেরা পর্যবেক্ষণ করছি। বুঝা যাবে কে কোথা থেকে ককটেল বহন করেছে। বিস্তারিত তথ্য হাতে আসলে জানিয়ে দেওয়া হবে।


সর্বশেষ সংবাদ