বিশ্বসেরা গবেষকের তালিকায় জাবির ৭ শিক্ষক-শিক্ষার্থী

তালিকায় স্থান পাওয়া জাবির সাত শিক্ষক-শিক্ষার্থী
তালিকায় স্থান পাওয়া জাবির সাত শিক্ষক-শিক্ষার্থী  © ফাইল ফটো

গত কয়েক বছরের ধারাবাহিকতায় বিশ্বসেরা ২ শতাংশ গবেষকের তালিকায় এবারও অবস্থান করে নিয়েছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) ৬ শিক্ষক ও ১ শিক্ষার্থী। 

গত ১ অক্টোবর আমেরিকার স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটির মেটা রিসার্চ ইনোভেশন সেন্টার (মেট্রিকস) এর গবেষক জন পি.এ. ইয়োনিডিস গবেষণা  প্রকাশনার উপর ভিত্তি করে এ তালিকা এলসিভিয়ার জার্নালে প্রকাশ করেন। এতে সারাবিশ্বের মোট ২ লাখ ১০ হাজার ১৯৯ জন গবেষক স্থান পেয়েছেন। এতে বাংলাদেশ থেকে রয়েছেন ১৭৭ জন গবেষক। 

গবেষকদের প্রকাশনা, এইচ-ইনডেক্স, সাইটেশন ও অন্যান্য সূচকগুলো বিশ্লেষণ করে তালিকাটি প্রস্তুত করা হয়। ওই প্রতিবেদনটি বিজ্ঞানীদের ২২টি বৈজ্ঞানিক ক্ষেত্র এবং ১৭৪টি উপ-ক্ষেত্রে শ্রেণীবদ্ধ করে এ তালিকায় দুটি ধাপে সেরা গবেষক নির্ধারণ করা হয়। এর একটি হল পুরো পেশাগত জীবনের ওপর, আরেকটি শুধু এক বছরের গবেষণা কর্মের ওপর।

বার্ষিক গবেষণা মূল্যায়ন ক্যাটাগরিতে তালিকায় স্থান পাওয়া শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা হলেন- পাবলিক হেলথ এন্ড ইমফরমেটিক্স বিভাগের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ এ. মামুন, পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক এ এ মামুন, পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান, প্রাণরসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মোঃ ইব্রাহিম খলিল, ইন্সটিটিউট অব ইনফরমেশন টেকনোলোজির অধ্যাপক এম শামীম কায়সার, সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম অধ্যয়ন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সাঈদ আল-জামান, রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. মোঃ এনামুল হক। 

গবেষকদের মধ্যে থেকে অধ্যাপক এ এ মামুন, অধ্যাপক ইব্রাহিম খলিল ও মোহাম্মদ এ মামুন পুরো পেশাগত জীবনের গবেষণা উভয় ক্যাটাগরির তালিকায় স্থান পেয়েছেন।

গবেষকদের মধ্যে বার্ষিক মূল্যায়নে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সবার শীর্ষে রয়েছেন শিক্ষার্থী মোহাম্মদ এ মামুন, সার্বিক বৈশ্বিক তালিকায় তার অবস্থান ৮ হাজার ৫১০তম ও উপ-ক্ষেত্র সাইকিয়াট্রিতে অবস্থান ২১১তম। অধ্যাপক এ এ মামুন সার্বিক তালিকায় ১৯ হাজার ৬৩৫তম ও তার উপ-ক্ষেত্র ফ্লুইড অ্যান্ড প্লাজমা ফিজিক্স এ অবস্থান ১২২তম। সহযোগী অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান সার্বিকভাবে ৮৪ হাজার ১৬১তম ও উপ-ক্ষেত্র পরিবেশ বিজ্ঞানে ১ হাজার ৪১৫তম, সহকারী অধ্যাপক সাঈদ আল জামান সার্বিকভাবে ১ লক্ষ ২৭ হাজার ৮৭৪তম ও উপ-ক্ষেত্র ইনফরমেশন অ্যান্ড লাইব্রেরি সায়েন্সে ৮৫তম, অধ্যাপক ইব্রাহিম খলিল সার্বিকভাবে ১ লক্ষ ৬৭ হাজার ৬৫৪তম ও উপ-ক্ষেত্র কম্প্লিমেন্টারি অ্যান্ড অল্টারনেটিভ মেডিসিন এ ৪৯তম, অধ্যাপক এম কায়সার সার্বিকভাবে ১ লক্ষ ৫১ হাজার ৩৯৬তম ও উপ-ক্ষেত্র এআই অ্যান্ড ইমেজ প্রসেসিং এ ৪ হাজার ও অধ্যাপক এনামুল হক সার্বিকভাবে ১ লক্ষ ৩১ হাজার ৭৩৫ তম ও উপ-ক্ষেত্র ফিজিক্যাল কেমিস্ট্রিতে ১ হাজার ৬৬৪তম হয়েছেন।

এছাড়া আজীবন গবেষণা মূল্যায়নে অধ্যাপক এ এ মামুন তার উপক্ষেত্রে ১০৯তম, অধ্যাপক ইব্রাহিম খলিল ৭৬ তম ও মোহাম্মদ এ মামুন ১১৮তম হয়েছেন।

সেরা গবেষকদের তালিকায় সবচেয়ে বেশি রয়েছেন ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর ডায়রিয়াল ডিজিজ রিসার্চ, বাংলাদেশ, (আইসিডিডিআরবি) এর ১৪ জন। পাশাপাশি এই তালিকায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১২ জন, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ১০জন, নর্থ সাউথ ও ব্রাক ইউনিভার্সিটির ৫ এবং ৩ জন করে শিক্ষক রয়েছেন। 

বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭ জন গবেষকের তালিকায় একমাত্র শিক্ষার্থী মোহাম্মদ এ মামুন। তরুণ এ গবেষক নিজের অনুভূতি প্রকাশ করে বলেন, 'আমি আমার বিশ্ববিদ্যালয় প্রথম বছর থেকেই গবেষণার সাথে যুক্ত। দিন-রাত কাজ করেছি, প্যাশন হয়ে গেছে। প্রাতিষ্ঠানিক সাপোর্ট এবং ফান্ডিং ছাড়া কাজ করতে গিয়ে অনেক ক্লান্তি এসে যায়, কিন্তু কাজের স্বীকৃতি সেগুলো ভুলিয়ে দেয়, উদ্যম বাড়িয়ে দেয়। আরও ভালো লাগে, আমার কাজের মাধ্যমে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়কে আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারছি।'

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নূরুল আলম তালিকায় স্থান পাওয়া সেরা গবেষকদের অভিনন্দন জানিয়েছেন।

উপাচার্য বলেন, বিশ্বসেরা ২ শতাংশ বিজ্ঞান গবেষকের তালিকায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬ জন শিক্ষক এবং ১ জন শিক্ষার্থী স্থান লাভ করায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আনন্দিত। এর ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচিতি ও সম্মান বৃদ্ধি পেয়েছে। তিনি মনে করেন, এ স্বীকৃতি অর্জনে শিক্ষক ও গবেষকগণ অনুপ্রাণিত হবেন। 

এদিকে বঙ্গবন্ধু শিক্ষক পরিষদের পক্ষে আহ্বায়ক অধ্যাপক এ এ মামুন এবং সদস্য সচিব অধ্যাপক বশির আহমেদ স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে শুভেচ্ছা জানানো হয় গুণী এই গবেষকদের।

এতে বলা হয়, আমরা বঙ্গবন্ধু শিক্ষক পরিষদের পক্ষ থেকে গবেষণা বিজ্ঞানীদের আন্তরিক অভিনন্দন জানাই এবং আমরা বিশ্বাস করি, তাদের এই অর্জন বিশ্ববিদ্যালয়কে শিক্ষা ও গবেষণায় অনন্য উচ্চতায় পৌঁছে দেবে।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence