শিক্ষার্থীদের নৈতিক শিক্ষা দেওয়ার আহবান চবি উপাচার্যের

অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখছেন অধ্যাপক ড. শিরীণ আক্তার
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখছেন অধ্যাপক ড. শিরীণ আক্তার

শিক্ষার্থীদের নৈতিক শিক্ষার ওপর গুরুত্বারোপ করে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আক্তার বলেছেন, আমি আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের আহবান করবো তারা যেন প্রতিটি ক্লাসে শিক্ষার্থীদের নৈতিকতার শিক্ষা দেন।

বৃহস্পতিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) চবির সমাজবিজ্ঞান অনুষদে আয়োজিত ‘বঙ্গবন্ধুর শিক্ষাচিন্তা ও আজকের বাংলাদেশ’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি  এ আহবান জানান।

ড. শিরীণ আক্তার আরো বলেন, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন ছিলো বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো যেন জ্ঞান চর্চার কেন্দ্র হয়। তিনি চেয়েছিলেন বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই তৈরি হবে শিক্ষিত বুদ্ধিজীবী। আজকে দেশের ১৮ কোটি জনগণ শিক্ষিত হলে বঙ্গবন্ধুর সেই স্বপ্ন পূরণ হবে। বঙ্গবন্ধুর কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বর্তমানে সেই শিক্ষার উপর জোর দিয়েছেন।

সমাজ বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক সিরাজ উদ দৌল্লাহর সভাপতিত্বে এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আক্তার।  নৃবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক তানজিম আফরিন ও সমাজবিজ্ঞান অনুষদের সহকারী অধ্যাপক  কাজী তাসলিমা নাসরিন জেরিনের সঞ্চালনায় মুখ্য আলোচক হিসেবে ছিলেন চিটাগাং ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটির (সিআইইউ) উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাহফুজুল হক চৌধুরী, প্রবন্ধ আলোচনা করেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক আব্দুল মান্নান। 

বঙ্গবন্ধুর শিক্ষাচিন্তা ও আজকের বাংলাদেশ’ শীর্ষক প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে ইউজিসিরঅধ্যাপক আব্দুল মান্নান বলেন,বঙ্গবন্ধুর অনেক গুণের মাঝে একটি বড় গুণ হলো তিনি গুরুত্বপূর্ণ পদগুলোতে যোগ্য ব্যক্তিদের পদায়ন করতেন। বর্তমানের মতো তখন পর্যন্ত দেশে আমলা বা প্রশাসকদের লাগামহীন দৌরাত্ম্য শুরু হয়নি। আমলা ছাড়া কোনো দেশ চলবে না, কিন্তু সেই আমলা যখন দেশে আমলাতন্ত্র কায়েম করে তখন দেশে সর্বনাশের শুরু হয়। সেটি বঙ্গবন্ধু পাকিস্তানের তেইশ বছরে দেখেছেন, উপলব্ধি করেছেন, তার শিকার হয়েছেন । পাকিস্তানের বর্তমান অবস্থার প্রধান কারণ দেশটির সামরিক, বেসামরিক আমলাদের রাষ্ট্রীয় কাজে অযৌক্তিকভাবে হস্তক্ষেপ এবং তাদের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ করার মানসিকতা।

দেশে একমুখী শিক্ষাব্যবস্থা বিলুপ্ত হয়ে  যাচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন,  কুদরত-এ-খুদা শিক্ষা কমিশনে বলা হয়েছিল দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা হবে একমুখী। শিক্ষার মূল লক্ষ্য হবে শুধু শিক্ষিত বা অক্ষরজ্ঞানসম্পন্ন মানুষ তৈরি করা নয়, মানবিক মূল্যবোধ সম্পন্ন মানুষ তৈরি করা। প্রাথমিক শিক্ষা হবে একমুখী। দীর্ঘ পঞ্চাশ বছর বছর পর পরিস্থিতি সম্পূর্ণ বদলে গেছে। হয়েছে অনেক উল্টো। এখন দেশে সনাতনী প্রাথমিক শিক্ষাব্যবস্থা ছাড়াও আছে বিভিন্ন প্রকারের ইংরেজি মাধ্যম শিক্ষা। এসব স্কুলের অধিকাংশে শিক্ষার্থীদের বাঙালির ইতিহাস বা সংস্কৃতি শেখার কোন সুযোগ নেই। এখানে শেখানো হয় না কেমন করে এলো বাংলাদেশ। একাধিক প্রজন্মতো বেড়ে উঠেছে একাত্তরে বাঙালি কার সাথে যুদ্ধ করেছিল তা না জেনে।

তিনি আরো বলেন, বঙ্গবন্ধু এটি সবসময় উপলব্ধি করতেন একটি দেশের শিক্ষাব্যবস্থার বুনিয়াদ হচ্ছে তার প্রাথমিক শিক্ষাব্যবস্থা। এই গুরুত্বপূর্ণ ভিত শক্ত না হলে পরবর্তী ধাপগুলো নড়বড়ে হতে বাধ্য। ১৯৭২ সালে বাংলাদেশে ৩৭ হাজার প্রাথমিক স্কুলে প্রায় এক লক্ষ শিক্ষক শিক্ষকতা করতেন। এই সব স্কুলের বেশিরভাগই ছিল বেসরকারি খাতে প্রতিষ্ঠিত। বঙ্গবন্ধু শুরুতেই এই সব স্কুল জাতীয়করণ করে দিলেন।

সেমিনারে বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন চবি উপ-উপাচার্য অধ্যাপক বেনু কুমার দে ও চবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মুস্তাফিজুর রহমান সিদ্দিকী


সর্বশেষ সংবাদ