রাবিতে প্রক্সি দিয়ে চান্স পাওয়া শিক্ষার্থী ভর্তি হতে এসে আটক

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়  © ফাইল ফটো

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রক্সি পরীক্ষা দিয়ে চান্স পাওয়া এক শিক্ষার্থী ভর্তি হতে এসে আটক হয়েছেন। বৃহস্পতিবার (১৭ আগস্ট) ভর্তি হতে এসে জালিয়াতির কথা স্বীকার করায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর দপ্তর থেকে আহসান হাবিব নামের ওই শিক্ষার্থীকে আটক করেছে পুলিশ। 

আটককৃত আহসান হাবীব রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার সাইফুল ইসলাম এবং রেহেনা বেগম দম্পতির সন্তান।জিজ্ঞাসাবাদে প্রক্সি পরীক্ষা দিতে সহায়তাকারীদের বিষয়ে তথ্য দিয়েছেন তিনি। 

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক আসাবুল হক বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ভর্তি পরীক্ষায় জালিয়াতির কথা স্বীকার করা এক শিক্ষার্থীকে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছি আমরা। জালিয়াতিতে জড়িত থাকায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে তার বিরুদ্ধে মামলা হতে পারে।

আটককৃত আহসান হাবীবের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, সে ভর্তি পরীক্ষায় জালিয়াতি করে মেরিট লিস্টে জায়গা করে নিয়ে পপুলেশন সায়েন্স এ্যান্ড হিউম্যান রিসোর্স ডেভেলপমেন্ট বিভাগে ভর্তির সুযোগ পায়। আজ মায়ের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে ভর্তি হন এই শিক্ষার্থী। এরপর তাকে শেরে বাংলা হলে নিয়ে গিয়ে তিন লাখ টাকা দাবি করে জালিয়াতিতে সহায়তাকারী শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী প্রাঙ্গনসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষার্থী। এসময় শেরে বাংলা হল শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক রাজু আহমেদ উপস্থিত ছিলেন বলেন জানান তিনি।

জালিয়াতির কথা স্বীকার করে আহসান হাবীব বলেন, প্রাঙ্গণের সঙ্গে ৪ লাখ টাকায় ভর্তি পরীক্ষায় প্রক্সি দিয়ে ভর্তি করিয়ে দেওয়ার চুক্তি করেছিলাম। এজন্য আগে তাকে ৩ লাখ ৬০ হাজার টাকা দিয়েছি। কিছু টাকা বাকি আছে। তাই, আজ ভর্তির পর প্রাঙ্গণ ও কিছু ছেলে মিলে আমাকে শেরে বাংলা হলে নিয়ে যান এবং তিন লাখ টাকা দাবি করেন। এসময় তারা বাড়িতে ফোন দিয়ে টাকা দেওয়ার কথা বলানোর জন্য আমাকে মারধর করেছে।

এ বিষয়ে আহসান হাবীবের বাবা সাইফুল ইসলাম বলেন, প্রাঙ্গণ পরিচয় দিয়ে এক ছেলে আমার নিকট তিন লাখ টাকা দাবি করেছে। পরে জানতে পারি সে নাকি আমার ছেলেকে ভর্তি করিয়েছে।

চাঁদা দাবির বিষয়ে একাধিকবার চেষ্টা করেও প্রাঙ্গনের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। 

অভিযোগের বিষয়ে রাজু আহমেদ বলেন, প্রাঙ্গণ ও সনেট ওই ছাত্রকে নিয়ে আমার হলে আসেন। তারা জানায়, এই ছেলে প্রক্সি দিয়ে ভর্তি হয়েছে। এর নিকট চুক্তির টাকা পাবো। সেটা তোলা লাগবে। তখন তারা ওই শিক্ষার্থীর বাড়িতে ফোন দিয়ে তিন লাখ টাকা দাবি করে। এখানে প্রক্সি কিংবা চাঁদা দাবির সাথে আমার কোনো সম্পৃক্ততা নেই। 

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক আসাবুল হক বলেন, আমি জানতে পারি যে, প্রাঙ্গন ও সনেটসহ কয়েকজন এক শিক্ষার্থীকে শেরে বাংলা হলে আটকে রেখেছে এবং তার কাছ থেকে টাকা দাবি করেছে। এটা জানার পরে হলের প্রভোস্টকে বলি ওই শিক্ষার্থীকে প্রক্টর দপ্তরে নিয়ে আসতে। প্রক্টর দপ্তরে আনার পরে সে প্রক্সি পরীক্ষা দিয়ে চান্স পাওয়ার কথা স্বীকার করায় আমরা তাকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে তুলে দিয়েছি।

প্রক্সির ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়ে তিনি বলেন, জালিয়াতি করে ভর্তি হওয়া আহসান হাবীব ও তার বাবা-মা আমাদের কয়েকজন শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে প্রক্সি পরীক্ষা দিতে সহায়তা করা এবং প্রক্সি দেওয়া বাবদ অপরিশোধিত টাকা না দেওয়ায় অপহরণ করার অভিযোগ করেছে। এ বিষয়টা পুলিশ তদন্ত করবে। তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত হলে তাদের বিরুদ্ধেও আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


সর্বশেষ সংবাদ