উপাচার্যের আশ্বাসে ১০ ঘন্টা পর হলে ফিরলেন কুয়েত-মৈত্রীর ছাত্রীরা
- ঢাবি প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ১৫ আগস্ট ২০২৩, ১২:২৭ AM , আপডেট: ১৫ আগস্ট ২০২৩, ১২:২৭ AM
উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামানের আশ্বাসে ১০ ঘন্টা পর হলে ফিরেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) কুয়েত-মৈত্রী হলের আন্দোলনরত ছাত্রীরা। রাত ১১ টায় উপাচার্য ছাত্রীদের আন্দোলনে উপস্থিত হয়ে তাদের দাবি অনুযায়ী ৩০০ ছাত্রীকে অন্য হলে স্থানান্তরের ঘোষণা দিলে তারা হলে ফিরে যান।
এর আগে, সোমবার (১৪ আগস্ট) দুপুর ১ টা থেকে আবাসন সংকট নিরসনে ৩০০ শিক্ষার্থীকে অন্য হলে স্থানান্তরসহ তিন দফা দাবি আদায়ে ঢাবি উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান নিয়েছিলেন হলের ছাত্রীরা। পরবর্তীতে বিকেল ৩ টার দিকে তিনজনের একটি প্রতিনিধি দল হলের প্রাধ্যক্ষের সঙ্গে দেখা করতে যান। এসময় কয়েক দফা হাউজ টিউটর ও প্রাধ্যক্ষের সাথে বৈঠক হলেও আলোচনা ফলপ্রসূ হয়নি।
পরবর্তীতে, সন্ধ্যা সোয়া সাতটা নাগাদ উপাচার্যের কার্যালয়ে ডাকা হয় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধিদের। তবে সেখানে তাদের মূল দাবি ৩০০ শিক্ষার্থীকে অন্য হলে এক মাসের মধ্যে স্থানান্তরের বিষয়টি প্রশাসন মেনে না নেওয়ায় শিক্ষার্থীরা আন্দোলন অব্যাহত রাখেন। এসময় নিজের উপাচার্য তার কার্যালয় থেকে বাসভবনে গাড়ি নিয়ে প্রবেশের চেষ্টা করলে শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের গাড়ি আটকে দেন। পরে ২০-২৫ মিনিট গাড়িতে অপেক্ষা করে গাড়ি ঘুরিয়ে আবারও বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ভবনে নিজ কার্যালয়ে ফিরে যান উপাচার্য।
এসময় শিক্ষার্থীরা বলেন, আমাদের দাবি ছিল ৩০০ শিক্ষার্থীকে স্থানান্তর করতে হবে কিন্তু এ বিষয়ে যথাযথ সমাধান আমরা পাইনি। উপাচার্য স্যার বলেছেন এটা করতে প্রশাসনিক জটিলতা রয়েছে তাই আপাতত সম্ভব নয়। তবে আগামীতে শিক্ষার্থী অ্যালোটমেন্ট না দেওয়ার বিষয়ে বিবেচনা করা হবে বলে জানিয়েছেন। আমাদের প্রধান সমস্যার সমাধান না হওয়ায় আমরা অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাব।
শিক্ষার্থীরা জানান, মৈত্রী হল ছোট হলেও প্রতিবছর অধিক ছাত্রী এখানে অ্যালোটমেন্ট দেওয়া হয়। ফলে ছাত্রীদের অন্যান্য হলে ছয়মাসের মধ্যে বৈধ আসন পেলেও মৈত্রী হলে ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের ছাত্রীরা চতুর্থ বর্ষে উঠেও এখনও আসন পাচ্ছে না। এর পাশাপাশি ২০২০-২১, ২১-২২, ২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের সবার আসন অনিশ্চিত অবস্থায় আছে। এমতাবস্থায়, ইতোমধ্যে ২০২২-২৩ সেশনকে এই হলে অ্যালোটমেন্ট দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ চারটি সেশনের শিক্ষার্থীরা মৈত্রী হলের সিট জটিলতায় তাদের বৈধ সিটের অধিকার হারাতে বসেছে।
শিক্ষার্থীরা আরও বলেন, হলের মূল ভবনে পাঁচটি অতিথি কক্ষে চাপাচাপি করে ১০০ শিক্ষার্থী বার্ষিক চার হাজার টাকা প্রদান করে অবস্থান করেন। অথচ তাদের জন্য তিনটি ওয়াশরুম রয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষিত সিকদার মনোয়ারা ভবনের তিনতলার ১৫টি অতিথি কক্ষ যেখানে বর্তমানে ১১০ জন শিক্ষার্থী অবস্থান করছে এবং তাদের জন্য ২টি ওয়াশরুম আছে। দোতলায় ২৪ শিক্ষার্থীর জন্য একটি ওয়াশরুম রয়েছে। এতে তারা বর্ণনাতীত কষ্টে আছেন।
এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান বলেন, আমি সরেজমিনে দেখেছি ওখানে জীবন যাত্রার মান কোনোক্রমেই গ্রহণযোগ্য না। সুযোগ-সুবিধার অনেক ঘাটতি রয়েছে। ছাত্রীরা যে দাবিগুলো জানিয়েছে সেগুলো খুব জরুরি। তাদের জীবনমান উন্নয়নে আমাদের আন্তরিক প্রয়াস থাকা জরুরি। হল প্রশাসনকেও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে যাতে দ্রুত তাদের সমস্যাগুলো সমাধান করা যায়।