অধ্যাপক ইমতিয়াজের বিচার দাবি বঙ্গবন্ধু পরিষদের

  © সংগৃহীত

ড. ইমতিয়াজ আহমেদের বইয়ে বঙ্গবন্ধু, বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম ও গণহত্যা সম্পর্কে বিকৃত ও উদ্ভট তথ্য ব্যবহারে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছে বঙ্গবন্ধু পরিষদ। সোমবার (৩ এপ্রিল) বঙ্গবন্ধু পরিষদের পাঠানো এক বিবৃতিতে এ দাবি জানানো হয়।

পরিষদের পক্ষে যৌথভাবে এই বিবৃতি দিয়েছেন বঙ্গবন্ধু পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক আ ব ম ফারুক।

বিবৃতিতে অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক ও অধ্যাপক আ ব ম ফারুক উল্লেখ করেন যে, ড. ইমতিয়াজ জাতির পিতার দীর্ঘ সংগ্রাম, ৭ই মার্চের ভাষণ, মহান মুক্তি সংগ্রাম, গণহত্যা ইত্যাদি নিয়ে প্রশংসাসূচক কিছু সংক্ষিপ্ত আলোচনা ও মন্তব্য করলেও পাশাপাশি এগুলো নিয়ে তিনি বেশ কিছু তির্যক, বিকৃত, অসত্য ও জাতীয় ইতিহাসের জন্য ক্ষতিকর মন্তব্য করেছেন যা একেবারেই অগ্রহণযোগ্য। যেমন, একাত্তরের ৭ই মার্চের ঐতিহাসিক বক্তৃতার সমাপ্তিতে বঙ্গবন্ধু ‘জয় বাংলা’র সাথে ‘জয় পাকিস্তান’ (Historicizing 1971 Genocide: State Versus Person, Dhaka, January 2009) বইতে দাবি করেছেন ড. ইমতিয়াজ। 

তিনি নাকি নিজের কানেই শুনেছেন। তাছাড়া ‘জয় পাকিস্তান’ বলার পেছনে যুক্তিও দেখিয়েছেন তিনি। একাত্তরে গণহত্যার বিস্তৃত অনুসন্ধান প্রয়োজন তা তিনি স্বীকার করেও বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকালে ৩০ লাখ মানুষ শহিদ হয়েছে কিনা তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন।

আরও পড়ুন: ভিকারুননিসার অধ্যক্ষ কামরুন নাহারকে ওএসডি

আন্তর্জাতিক মানদন্ডে এই গণহত্যাকে ‘গণহত্যা’ বলা যায় কিনা তা নিয়ে কুতর্ক উত্থাপন করেছেন তিনি। এছাড়া জাতীয় সংসদে কোনও আলোচনা করা ছাড়া শুধু সরকারি নির্দেশে মুক্তিযুদ্ধকালের জাতীয় পতাকা থেকে মানচিত্র বাদ দেওয়া হয়েছে উল্লেখ করে সরকারকে অপ্রয়োজনে কটাক্ষ করেছেন ড. ইমতিয়াজ। 

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘বঙ্গবন্ধু’কোনও আনুষ্ঠানিক উপাধি নয়, এটি বাঙালি জাতির সব আন্দোলন-সংগ্রামের প্রত্যক্ষ দলিল। আমরা ড. ইমতিয়াজের উপরিউক্ত এসব মনগড়া, উদ্ভট, অত্যন্ত ঘৃণ্য ও সর্বাংশে অগ্রহণযোগ্য বক্তব্যের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।

এইকসঙ্গে বঙ্গবন্ধু পরিষদ মনে করে জাতীয় পর্যায়ে অত্যন্ত গুরুতর উপরোক্ত বিষয়গুলো বাংলাদেশে ইতোমধ্যেই রাষ্ট্রীয় ও একাডেমিক পর্যায়ে চূড়ান্তভাবে সুরাহা করা হয়েছে। এগুলো নিয়ে নতুন করে বিতর্কের আর কোনও অবকাশ নেই। এসব কুতর্ক উত্থাপন করে ড. ইমতিয়াজ আহমেদ এই বইয়ে মনগড়া ও বিকৃত তথ্য লিখে অপচেষ্টায় লিপ্ত হয়েছেন। দেশের আইন অনুযায়ী এ বিষয়ে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বিবৃতির মাধ্যমে সরকারের কাছে জোর দাবি জানায় বঙ্গবন্ধু পরিষদ।

সম্প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক বিভাগের অধ্যাপক ইমতিয়াজ আহমেদের বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃত করার অভিযোগ তুলেছেন বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক। তবে এ বিষয়ে নিজের অবস্থান ব্যাখ্যা দিয়েছেন তিনি।  

রবিবার (২ এপ্রিল) রাতে এক বিবৃতিতে অধ্যাপক ইমতিয়াজ বলেন, যে বইটি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ ভূখণ্ডে সংঘটিত জেনোসাইডের বিচার এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে জেনোসাইড স্টাডিজ সেন্টার প্রতিষ্ঠার আবেদন জানিয়ে রচিত, তাতে ১৯৭১ সালের জেনোসাইডকেই অস্বীকার কিংবা এর গুরুত্ব কমিয়ে দেখানো কীভাবে সম্ভব? প্রকৃতপক্ষে এ ধরনের অভিযোগ ওঠায় আমি আশ্চর্য হয়েছি। 


সর্বশেষ সংবাদ