জাবির সমাবর্তন

মাস পেরোলেও শেষ হয়নি হিসাব, স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন

জাবির সমাবর্তনের হিসাব শেষ করতে পারেনি কর্তৃপক্ষ
জাবির সমাবর্তনের হিসাব শেষ করতে পারেনি কর্তৃপক্ষ  © ফাইল ছবি

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) ষষ্ঠ সমাবর্তনের এক মাস পার হলেও এখনও আয়-ব্যয়ের হিসাব শেষ করতে পারেনি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সচেতন শিক্ষক-শিক্ষার্থীর। তাদের দাবি, আয়-ব্যয়ের স্বচ্ছতা না থাকায় হিসাব শেষ হচ্ছে না কর্তৃপক্ষের। পাশাপাশি আয়-ব্যয়ের হিসাব দ্রুততম সময়ের মধ্যে সম্পন্ন করে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের কাছে উন্মুক্ত করার কথাও বলেছেন তারা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের অধ্যাপক নজরুল ইসলাম বলেন, আমরা সমাবর্তনের বিপুল পরিমাণ আয়-ব্যয়ের হিসাব সামনে নিয়ে আসার জন্য প্রশাসনের কাছে দাবি জানিয়েছিলাম। প্রশাসন স্বচ্ছতা রক্ষার জন্য এক মাসের মধ্যে আয়-ব্যয়ের হিসাব উপস্থাপন করতে চেয়েছিল। কিন্তু মাস পেরিয়ে গেলেও সেই হিসাব সামনে আসেনি। এতে সময় বাড়ার সাথে হিসাবের কারচুপি হওয়ার সম্ভাবনা থেকে যায়। 

ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক ড. পারভীন জলী বলেন,  বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন একমাসের সময় নিয়েছিল তা শেষ হয়েছে। দ্রুততর সময়ে হিসাব প্রকাশ না করা হলে জনমনে অবিশ্বাস ও সন্দেহ তৈরি হতে পারে। 

গত ২৫ ফেব্রুয়ারি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ষষ্ঠ সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার কার্যালয় থেকে জানা যায়, ১৫ হাজার ২১৯ জন শিক্ষার্থী রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করেছেন। এর মধ্যে শুধু স্নাতক থেকে রেজিস্ট্রেশন করেছেন ৩ হাজার ৯৫৩ জন। এছাড়া স্নাতকোত্তর থেকে ১ হাজার ১২৬ জন, স্নাতক ও স্নাতকোত্তর উভয় থেকে ৬ হাজার ৩৬৫ জন, উইকেন্ড প্রোগ্রামের ৩ হাজার ৪৬১ জন, এমফিল ডিগ্রির ৩৪ জন ও পিএইচডি সম্পন্নকারী ২৮০ জন। 

রেজিস্ট্রশন করতে স্নাতক ও স্নাতকোত্তরের জন্য আলাদাভাবে রেজিস্ট্রেশন ফি আড়াই হাজার টাকা, উভয় ডিগ্রি একসঙ্গে ৪ হাজার, এমফিল ৬ হাজার, পিএইচডি ৭ হাজার এবং উইকেন্ড/ইভিনিংয়ের জন্য ৮ হাজার টাকা ফি পরিশোধ করতে হয়েছে গ্র্যাজুয়েটদের। 

সে হিসাবে রেজিস্ট্রেশন থেকে আয় হয়েছে ৬ কোটি ৭৯ লাখ ৬৫ হাজার ৫০০ টাকা। তবে ব্যয়ের ব্যাপারে কোনো সুনির্দিষ্ট তথ্য পাওয়া যায়নি। 

আয়-ব্যয়ের হিসাব দেরি হওয়ার পেছনে কারচুপির শঙ্কা প্রকাশ করে প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষার্থী অমর্ত্য রায় বলেন, আমরা প্রশাসনকে সবসময়ই সমাবর্তনসহ প্রত্যকটি উন্নয়ন প্রকল্পের আয়-ব্যয়ের হিসাব সাধারণ শিক্ষার্থীদের সামনে উন্মোচন করার জন্য বলে এসেছি। কিন্তু প্রশাসন এসবের স্পষ্টতা নিয়ে দীর্ঘসূত্রতা করে আসছে। এতে কারচুপি না থাকলে তারা জনসম্মুখে তাদের আয়-ব্যয়ের হিসাব স্পষ্ট করতো। প্রশাসনের স্বচ্ছতা নিশ্চিতে দ্রুত সমাবর্তনের আয়-ব্যয়ের হিসাব স্পষ্ট করতে হবে। 

তবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের ভাষ্যমতে, সমাবর্তন অনুষ্ঠানে অনেক কমিটি-উপ কমিটি কাজ করায় বিল জমা দিতে দেরি হচ্ছে। এ কারণে হিসাব-নিকাশ দ্রুত শেষ করা যাচ্ছে না। 

বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ রাশেদা আখতার বলেন, ‘আমি এখনো কোনও হিসাব হাতে পাইনি। আবার হিসাবগুলো ফিনান্সিয়াল কমিটিতে দিতে হবে। এসবের এখনও কিছুই হয়নি। কারণ আমাদের বিলগুলো খুচরা খুচরা করে আসতে থাকে। আর যতক্ষণ পর্যন্ত এই খুচরা বিলগুলোর  চেক ইস্যু শেষ না করা হয়, ততক্ষণ পর্যন্ত খরচের হিসাব বলা যায় না। বিলগুলো সবাই একসঙ্গে না দেওয়ায় আরেকটু সময় লাগবে।’

উপাচার্য অধ্যাপক নূরুল আলম বলেন, ‘আমি খোঁজ নিয়ে জেনেছি এখনো কেউ কেউ বিল জমা দেননি। তাই দেরি হচ্ছে। আশা করি খুব শিগগিরই শেষ করা যাবে।’


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence