রাবি অধ্যাপক তাহের হত্যা
দ্রুত রায় কার্যকর চান পরিবার ও সহকর্মীরা
- মারুফ হোসেন মিশন
- প্রকাশ: ০২ মার্চ ২০২৩, ০৬:৫৬ PM , আপডেট: ০২ মার্চ ২০২৩, ০৬:৫৬ PM
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) অধ্যাপক ড. এস. তাহের হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ও যাবজ্জীবন দণ্ডিত আসামিদের আপিল বিভাগে আবেদন খারিজে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন তাঁর পরিবার ও সহকর্মীরা। তারা চান এ মামলার রায় যেন দ্রুত কার্যকর হয়।
বৃহস্পতিবার (২ মার্চ) প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন আট বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
রায়ে সন্তুষ্ট হয়ে সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে আপিল বিভাগের রায়ের প্রতিক্রিয়ায় অধ্যাপক তাহেরের স্ত্রী সুলতানা আহমেদ বলেন, আমরা ন্যায়বিচার পেয়েছি। ১৬ বছর ধরে অনেক সংগ্রাম করেছি, অনেক কষ্ট করেছি। আদালতের রায়ে আমরা সন্তুষ্ট। ফাঁসির রায় কার্যকর হলে আমরা পুরোপুরি সন্তুষ্ট হবো।
আপিল বিভাগের এ রায়ে সন্তুষ্ট হয়ে অধ্যাপক তাহেরের সহকর্মী ও রাবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. গোলাম সাব্বির সাত্তার বলেন, আমরা সঠিক বিচার পেয়েছি। দীর্ঘ সময় পর এ হত্যাকাণ্ডের রায় হলেও এতে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। আমরা আশা করি স্যারের হত্যার এই রায়ের পর থেকে আর কোনো পবিত্র শিক্ষাঙ্গনে এ ধরনের ঘটনা ঘটবে না। যারা এ ধরনের হত্যাকাণ্ডের মানমানসিকতা নিয়ে থাকে তারা এসব কর্মকাণ্ড করার আগে একটিবার হলেও ভাববে যে দেশে আইনের শাসন আছে।
তাঁর আরেক সহকর্মী ও রাবি উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. সুলতান-উল-ইসলাম বলেন, অধ্যাপক তাহের আহমেদ আমার শিক্ষক এবং ভূ-তত্ত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগের জ্যেষ্ঠ শিক্ষক ছিলেন। তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়সহ পুরো বাংলাদেশে একজন প্রখ্যাত শিক্ষাবিদ ও গবেষক ছিলেন। তাঁর মতো একজন শিক্ষাবিদকে হত্যা করা হয়েছিল। আজ একটা জঘন্য হত্যাকাণ্ডের রায় চূড়ান্ত হলো। এতে আমরা সন্তুষ্ট। এই রায়ে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়সহ পুরো দেশ আজ স্বস্তির নিঃশ্বাস ছেড়েছে। আদালতের এ রায় দ্রুত কার্যকর করার আহ্বান জানান তিনি।
২০১৩ সালের ২১ এপ্রিল রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূ-তত্ত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. এস. তাহের হত্যা মামলার দুই আসামির মৃত্যুদণ্ডাদেশ বহাল ও অন্য দুজনের দণ্ড কমিয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। আসামিরা এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেন।
২০০৬ সালের ১ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের কোয়ার্টারের ম্যানহোল থেকে অধ্যাপক ড. এস তাহেরের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় তাঁর ছেলে সানজিদ আলভি আহমেদ মতিহার থানায় অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে মামলা করেন।
প্রসঙ্গত, ২০০৮ সালের ২২ মে ওই মামলায় রাজশাহীর দ্রুত বিচার আদালত চারজনকে মৃত্যুদণ্ড ও দুজনকে খালাস দেন। পরে হাইকোর্ট দুই আসামির মৃত্যুদণ্ডাদেশ বহাল রেখে অন্য দুজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দেন।
ফাঁসির দণ্ডাদেশ বহাল রাখা দুই আসামি হলেন একই বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মিয়া মোহাম্মদ মহিউদ্দিন এবং নিহত ড. তাহেরের বাসার কেয়ারটেকার মো. জাহাঙ্গীর আলম। যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন মো. জাহাঙ্গীর আলমের ভাই নাজমুল আলম এবং নাজমুল আলমের শ্যালক আবদুস সালাম।