সোনার দেশ বিনির্মাণে অবদান রাখবেন ঢাবি শিক্ষার্থীরা: প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা  © ফাইল ছবি

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দেশের ইতিহাস-ঐতিহ্য সম্পর্কিত জ্ঞান-বিজ্ঞানের নিবিড় চর্চা এবং আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে ও জাতিরাষ্ট্র বাংলাদেশ সৃষ্টিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অনবদ্য অবদান চিরকাল স্মরণীয় হয়ে থাকবে। আগামীকাল ১৯ নভেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫৩তম সমাবর্তন উদযাপন উপলক্ষ্যে আজ ‍শুক্রবার দেয়া এক বাণীতে এ কথা বলেন। শুভেচ্ছা বার্তায় তিনি গৌরবদীপ্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫৩তম সমাবর্তনের সার্বিক সাফল্য কামনা করেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীগণ দেশপ্রেম, সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে তাদের অর্জিত জ্ঞান, মেধা-মনন ও সৃজনশীলতা প্রয়োগ করে ২০৪১ সালের মধ্যে জাতির পিতার ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ বিনির্মাণে নিজ নিজ অবস্থান থেকে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবেন।’

সমাবর্তন উপলক্ষ্যে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল স্নাতক ছাত্র-ছাত্রী, তাদের পিতা-মাতা, বর্তমান ও প্রাক্তন শিক্ষার্থী, সম্মানিত শিক্ষকমন্ডলী এবং কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, ‘প্রাচ্যের অক্সফোর্ড খ্যাত শতবর্ষী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ৫৩তম সমাবর্তন উদযাপন করছে জেনে আমি আনন্দিত।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৪৭ সালে ব্রিটিশ ভারত ভেঙ্গে এ উপমহাদেশে যে রাষ্ট্র ব্যবস্থার সৃষ্টি হয়, সেই রাষ্ট্রটি বাংলা ভাষাভাষী জনগোষ্ঠীর জন্য নিরাপদ আবাসভূমি ছিল না- এ সত্যটি সবার আগে অনুধাবন করতে পেরেছিলেন এ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের তৎকালীন তরুণ ছাত্র শেখ মুজিবুর রহমান। তিনি সবার আগে বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে আন্দোলন গড়ে তুলতে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন এবং কালক্রমে হয়ে উঠেন বাঙালি জাতির পিতা, বঙ্গবন্ধু, স্বাধীনতার মহান স্থপতি, বাঙালি ইতিহাসের মহানায়ক ও সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি। তাঁর নেতৃত্বে পরিচালিত বহু আন্দোলনের সাক্ষী হয়ে আছে এই বিশ্ববিদ্যালয়।

তিনি বলেন, ’৫২ এর জাতির ভাষাভিত্তিক স্বাতন্ত্র্য চেতনা রক্ষার ভাষা আন্দোলন, জাতির পিতা ঘোষিত ’৬৬ এর ছয় দফার ভিত্তিতে স্বায়ত্বশাসন আন্দোলনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী-শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ছিলেন সম্মুখ সারির যোদ্ধা। জাতির পিতার আহ্বানে ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক-কর্মকর্তা ও কর্মচারী। তাঁদের অনেকে শহিদ হয়েছেন।

শেখ হাসিনা বলেন, স্বাধীনতা পরবর্তী সকল গণতান্ত্রিক আন্দোলন, অসাম্প্রদায়িক সাংস্কৃতিক সত্তার বিকাশ ও দেশের গণমানুষের আশা-আকাক্সক্ষা পূরণে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক-কর্মচারীরা অগ্রভাগে থেকে অব্যাহতভাবে নেতৃত্ব প্রদান করে আসছেন। প্রতিষ্ঠার পর হতে আজ পর্যন্ত অনন্য দক্ষতায় মনন ও মানবিকতায় অভূতপূর্ব সংশ্লেষ ঘটিয়ে এই মহীরূহ বিদ্যায়তন সমগ্র দেশকে জ্ঞান-বিজ্ঞানে পরিপুষ্ট করে চলেছে।

তিনি বলেন, জাতির পিতার দূরদর্শী নির্দেশনায় ১৯৭৩ সালে বিশ্ববিদ্যালয় অর্ডিন্যান্স ঘোষণার মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন গঠন করা হয়, যার মূল বার্তা ছিলো- বিশ্ববিদ্যালয়ে চিন্তার স্বাধীনতা ও মুক্ত-বুদ্ধিচর্চার পরিবেশ সৃষ্টি করা।

আরও পড়ুন: ঢাবি শিক্ষার্থীদের কাছে জাতির অনেক প্রত্যাশা: রাষ্ট্রপতি

আওয়ামী লীগ সরকার সবার জন্য মানসম্মত শিক্ষার সমান সুযোগ নিশ্চিত করতে শিক্ষা খাতকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে এর সার্বিক উন্নয়নে নিরলস কাজ করে যাচ্ছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের সরকারের বিগত প্রায় ১৪ বছরে গৃহীত বিভিন্ন সময়োপযোগী উদ্যোগের ফলে শিক্ষাখাতে প্রশংসনীয় সাফল্য অর্জিত হয়েছে। উচ্চশিক্ষার সুবিধা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে দেশে সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। করোনাভাইরাসের প্রভাব কাটিয়ে শিক্ষার উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করতে আমরা প্রযুক্তিনির্ভর আধুনিক ও বিজ্ঞানভিত্তিক শিক্ষা ব্যবস্থার ওপর জোর দিয়েছি। আমরা বিশ্বায়ন ও চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বিজ্ঞান, তথ্য প্রযুক্তি জ্ঞানসম্পন্ন দক্ষ মানব সম্পদ গড়ে তুলতে শিক্ষা ব্যবস্থাপনা এবং শিক্ষা কার্যক্রমে আইসিটি এবং ডিজিটাল প্রযুক্তির সুবিধা নিশ্চিত করতে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি।’

তিনি বলেন, সরকার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণার উন্নয়নে নানা উদ্যোগ গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করেছে। শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের আবাসিক সংকট নিরসনে বিভিন্ন হল ও ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। এছাড়া, ২০০৯ সাল থেকে অদ্যবধি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষা ও গবেষণার উন্নয়ন ও সম্প্রসারণে ১৭টি নতুন বিভাগ, ৩টি ইনস্টিটিউট ও ২২টি গবেষণা কেন্দ্র খোলা হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, অধিকতর উন্নত গবেষণার মাধ্যমে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ভবিষ্যতে যে কোন সংকট উত্তরণে সক্রিয় ভূমিকা রাখবে এবং দ্রুত পরিবর্তনশীল বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে শিক্ষা-গবেষণা, বিজ্ঞান, প্রযুক্তিসহ জ্ঞানের সকল শাখায় এগিয়ে যাবে বলে আমার বিশ্বাস। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন প্রাক্তন শিক্ষার্থী হিসেবে আশা করি, জ্ঞান ও আলোর পথের অভিযাত্রায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় নতুন দিগন্ত তৈরি করুক।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence