হিট প্রকল্প ব্লাইন্ড রিভিউ হবে, আমরা কখনই বলিনি: অধ্যাপক তানজীম

অধ্যাপক ড. তানজীম উদ্দীন খান
অধ্যাপক ড. তানজীম উদ্দীন খান  © টিডিসি ফটো

হায়ার এডুকেশন এক্সিলারেশন অ্যান্ড ট্রান্সফরমেশন (হিট) প্রকল্পে ‘ব্লাইন্ড রিভিউ’ ব্যবহারের দাবি পুরোপুরি একটি ভুল ব্যাখ্যা ও মিসকোড বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) সদস্য ও প্রকল্প সংশ্লিষ্ট দায়িত্বপ্রাপ্ত অধ্যাপক ড. তানজীম উদ্দীন খান।

মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) বিকেলে ইউজিসি অডিটোরিয়ামে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে হিট প্রকল্পের সাব-প্রজেক্ট নির্বাচন প্রক্রিয়া ও বাস্তবায়ন চুক্তি স্বাক্ষর বিষয়ে দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসের এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি।

অধ্যাপক তানজীম বলেন, ‌‘এইটা মনে হয় একটা মিস আন্ডারস্ট্যান্ডিং। আমরা ব্লাইন্ড রিভিউ শব্দটি কিন্তু কোথাও ব্যবহার করিনি। এটা একটি মিসকোড, একেবারে নিশ্চিত ভাবে বলতে পারি। এরকম কোন কথাই আমরা কাউকে বলিনি, কিন্তু একটা বিষয় বলি, আমাদের প্রকল্প পরিচালক বলেছেন, যাদেরকে আমরা ইনভাইট করেছি, তারা আমাদের এখানে আসার আগ পর্যন্ত জানেন না যে, কোন প্রোপোজালটা তারা রিভিউ করবেন।’

তিনি বলেন, ‘রিভিউররা এখানে আসার পর তাদেরকে বের হতেও দেওয়া হয়নি। একই সাথে তারা সেলফোনও ব্যবহার করতে পারেন নি। এই প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে কিন্তু রিভিউ হয়েছে। এখানে স্কোরিংয়ের কিছু ওয়েট আছে, বিশেষ করে এসপিএম'র যে প্রফেশনাল ব্যাকগ্রাউন্ড, অভিজ্ঞতা, এগুলো স্কোর হিসেবে কাউন্ট করেছে, তার জন্য ওই তথ্যগুলো আমাদের দরকার ছিল। ফেয়ার রিভিউ তো অবশ্যই, কিন্তু এটা ব্লাইন্ড রিভিউ দাবি আমরা কখনই করিনি।’

সূচনা বক্তব্যে ইউজিসি’র চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এসএমএ ফায়েজ বলেন, বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন হায়ার এডুকেশন এক্সিলারেশন অ্যান্ড ট্রান্সফরমেশন (হিট) প্রকল্পে উপ-প্রকল্প মূল্যায়নে শতভাগ স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করা হচ্ছে। হিটের বিভিন্ন সাব প্রজেক্ট প্রকল্প মূল্যায়নে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহির ক্ষেত্রে সব ধরনের ধরনের উদ্যোগ ইউজিসি নিশ্চিত করেছে। প্রকল্প মূল্যায়নের প্রতিটি ধাপের খোঁজ তিনি নিয়মিত নিয়েছেন বলে তিনি সাংবাদিকদের জানান। 

ইউজিসি চেয়ারম্যান বলেন, ‘ইউজিসিতে যোগদানের পূর্বে আমি সততা ও নিষ্ঠার সাথে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ও পাবলিক সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেছি। দীর্ঘ চাকরি জীবনের অর্জিত সম্মান কোন কারণে বিনষ্ট হোক-তা আমি কোনোভাবেই চাইবো না।’ তিনি গণমাধ্যম কর্মী ও উচ্চশিক্ষার অংশীজনদের গঠনমূলক সমালোচনা প্রত্যাশা করেন। 

এদিকে আজ বুধবার (২৭ আগস্ট) সকাল সাড়ে ১০টা থেকে বাংলাদেশ চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে নির্বাচিত ১৫১টি উপ-প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সাথে ইউজিসির চুক্তি স্বাক্ষরিত হবে। দেশের উচ্চশিক্ষার মানোন্নয়নে পাঁচ বছর মেয়াদি হিট প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ৪ হাজার ১৬ কোটি ৫৭ লাখ টাকা। মোট প্রকল্প ব্যয়ের ৫০ দশমিক ৯৬ শতাংশ বহন করবে বাংলাদেশ সরকার। বাকি ৪৯ দশমিক ৪ শতাংশ বহন করবে বিশ্বব্যাংক।

সংশ্লিষ্টরা জানান, প্রকল্পে বাজার চাহিদাভিত্তিক কারিকুলাম প্রণয়ন, উচ্চশিক্ষার মানোন্নয়ন ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর ডিজিটাল সংযোগ বৃদ্ধি, শিক্ষকদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা ও প্রশিক্ষণ অ্যাকাডেমি প্রতিষ্ঠা, বিডিরেনের সক্ষমতা বৃদ্ধি, বাংলাদেশ অ্যাক্রেডিটেশন কাউন্সিলের কার্যক্রম বেগবান করা, ইনোভেশন ল্যাব প্রতিষ্ঠা করা, প্রতিযোগিতামূলক গবেষণার উদ্ভাবনী প্রকল্প চালু করা ইত্যাদি অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

হিট প্রকল্পের সাব-প্রজেক্ট নির্বাচন প্রক্রিয়া এবং বাস্তবায়নে চুক্তি স্বাক্ষর উপলক্ষ্যে সংবাদ সম্মেলনে প্রকল্প পরিচালক প্রফেসর ড. আসাদুজ্জামান প্রকল্পের বাস্তবায়ন অগ্রগতি ও উপ-প্রকল্প নির্বাচন প্রক্রিয়ার বিভিন্ন দিক তুলে ধলেন। 

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন হিট প্রকল্প পরিচালক প্রফেসর ড. আসাদুজ্জামান, ইউজিসির সদস্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন, প্রফেসর ড. মো. সাইদুর রহমান, প্রফেসর ড. মাছুমা হাবিব, প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আইয়ুব ইসলাম, ইউজিসি সচিব ড. মো. ফখরুল ইসলাম, জনসংযোগ পরিচালক ড. শামসুল আরেফিন এবং হিট ও ইউজিসির বিভিন্ন বিভাগের কর্মকর্তারা।


সর্বশেষ সংবাদ