বিশ্ববিদ্যালয়ে যৌন হয়রানি প্রতিরোধে কাজ করবে ইউজিসি-মহিলা পরিষদ

ইউজিসি ও মহিলা পরিষদের সভা
ইউজিসি ও মহিলা পরিষদের সভা  © জনসংযোগ

দেশের উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যৌন হয়রানি এবং নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে যৌথভাবে কাজ করার আগ্রহ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি) ও বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ। ইউজিসি চেয়ারম্যান (অতিরিক্ত দায়িত্ব) প্রফেসর ড. মুহাম্মদ আলমগীরের সাথে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি ডা. ফওজিয়া মোসলেমের নেতৃত্বে ৭ সদস্যের এক প্রতিনিধি দলের সৌজন্য সাক্ষাতে এ কথা জানানো হয়। সোমবার (২৪ জুন) ইউজিসিতে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। 

সভায় ইউজিসি সদস্য প্রফেসর ড. হাসিনা খান, বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানুসহ ইউজিসি ও মহিলা পরিষদের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।  

সভায় বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি ফওজিয়া মোসলেম বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে যৌন হয়রানি ও নিপীড়নের ঘটনা ঘটছে। এসব ঘটনার শিকার শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মানবাধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে এবং শিক্ষার স্বাভাবিক পরিবেশ মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। এটি নারীর ক্ষমতায়নে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে। এসব ঘটনা প্রতিরোধ ও প্রতিকারে বিশ্ববিদ্যালয়ে অভিযোগ কমিটি থাকলেও সেটি যথাযথভাবে দায়িত্ব পালন করছে না বলে তিনি মনে করেন। 

তিনি বলেন, যৌন হয়রানি ও নারীর প্রতি সহিংসতা যে অপরাধ সেটি সবার আগে প্রচার করতে হবে। তিনি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যৌন হয়রানী নিয়ে করা মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দ্রুত শেষ করার অনুরোধ করেন। এছাড়া, যৌন হয়রানী বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের নিয়ে একটি কর্মশালা আয়োজনে ইউজিসিকে অনুরোধ করেন। 

প্রফেসর আলমগীর বলেন, যৌন হয়রানী বিষয়ে ইউজিসি জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেছে। যেসব বিশ্ববিদ্যালয়ে এসব ঘটনা ঘটছে ইউজিসি সাথে সাথে ওই সব বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।  

তিনি আরও বলেন, ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর শিক্ষা জীবন ক্ষতিগ্রস্তের আশঙ্কায় বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানী বিষয়টি গোপন করেন। অনেক সময় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ইমেজ ক্ষুন্ন হওয়ার আশঙ্কায় বিষয়টি এড়িয়ে যায়। তিনি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে নিরাপদ ও নারী শিক্ষার্থীবান্ধব ক্যাম্পাস গড়ে তোলার আহ্বান জানান।

তিনি সব বিশ্ববিদ্যালয়ে যৌন হয়রানী প্রতিকারে নারী সদস্যদের অন্তর্ভুক্ত করে অভিযোগ কমিটি গঠন, স্বচ্ছ অভিযোগ বাক্স স্থাপন, ছাত্র-শিক্ষকের সম্পর্ক সৌহার্দ্যপূর্ণ করা, মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষা ও এ বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি করার পরামর্শ দেন। 

প্রফেসর হাসিনা খান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে যৌন নিপীড়ন, হয়রানী ও বুলিং প্রতিরোধে নতুন প্রতিষ্ঠিত পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনে বিষয়টি সংযুক্ত করা হয়েছে। এছাড়া, ইউজিসি’র বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তির আওতায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মদক্ষতা মূল্যায়নে যৌন হয়রানীর বিষয়টি যুক্ত করার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। 

এছাড়া, বিশ্বদ্যিালয়গুলোতে যৌন হয়রানি এবং নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে প্রতিটি অনুষদে যৌন হয়রানি এবং নিপীড়ন নিরোধে কমিটি গঠন, প্রতিটি অনুষদের ডিন, সব বিভাগের স্টুডেন্ট কাউন্সিলর ও শিক্ষার্থীদের নিয়ে যৌন হয়রানি এবং নিপীড়ন প্রতিরোধে নিয়মিত কর্মশালা আয়োজন, শিক্ষার্থীদের নবীন বরণ অনুষ্ঠানে যৌন হয়রানি এবং নিপীড়ন বিষয়ে হাইকোটের নির্দেশনা বিষয় আলোচনা, শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের চাকরিবিধিতে যৌন হয়রানি এবং নিপীড়ন বিষয়ে হাইকোটের নির্দেশনা যুক্ত করা, বিশ্ববিদ্যালয়ে যৌন হয়রানি এবং নিপীড়ন নিরোধে গঠিত কমিটির কার্যক্রম গতিশীল করা এবং অংশীজনদের নিয়ে ইউজিসিকে কর্মশালা ও প্রশিক্ষণ আয়োজন ব্যবস্থা গ্রহণে মহিলা পরিষদ সুপারিশ করেন। 


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence